Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পেরুতে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ, নিহত ২

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০৯ পিএম

লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ২ জন নিহত হয়েছেন। আন্দোলনকারীরা দেশটির কারাবন্দী প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলোর মুক্তি এবং নতুন নির্বাচনের দাবিতে রাস্তায় নামে। আন্দোলনকারীদের দমনে পুলিশ গুলি করলে গত রোববার ওই দুজনের মৃত্যু হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, স্থানীয় সময় গতকাল রোববার প্রেসিডেন্ট পেদ্রোর অভিশংসন এবং গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে আন্দোলন পেরুজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে দেশটির উত্তরাঞ্চল এবং আন্দিজ পর্বতমালার পাদদেশের শহরগুলোতে এই আন্দোলন বেশি সক্রিয়। আন্দোলনের তীব্রতা এতই বেশি যে, দেশটির রাজধানী লিমার বিমানবন্দর বন্ধ করে দিতে হয়।
এদিকে, গত বুধবার নাটকীয়ভাবে পেরুর পার্লামেন্ট অভিশংসনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পেদ্রো কাস্তিলোকে। তারপর তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করে গ্রেপ্তার করা হয়। ৫৩ বছর বয়সী পেদ্রো এখন পেরুর রাজধানী লিমায় পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। ইতিমধ্যে মেক্সিকোতে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি। পেদ্রোর আবেদনটি তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হয়েছে।
গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) পেদ্রো কাস্তিলোকে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণের পরে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন দিনা বোলুয়ার্তে। এর মাধ্যমে পেরু প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রেসিডেন্ট পেয়েছে। দিনা বোলুয়ার্তে পেরুর ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
এর আগের দিন মঙ্গলবারে পেদ্রো কাস্তিলো বলেছিলেন, তিনি কংগ্রেসের পরিবর্তে একটি ‘ব্যতিক্রমী জরুরি সরকারের মাধ্যমে’ দেশ পরিচালনা করবেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট বোলুয়ার্তেসহ অন্যান্য সংসদ সদস্য। তাঁরা জরুরি বৈঠক করে প্রেসিডেন্ট কাস্তিলোকে অপসারণ করেন। এরপর তাঁকে আটক করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দিনা বোলুয়ার্তে তাঁর বক্তৃতায় পেরুর নাগরিকদের জাতীয় ঐক্যের জন্য এক জোট হওয়ার আহ্বান জানান এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাজনৈতিক যুদ্ধবিরতি চান।
বিবিসি জানিয়েছে, পেদ্রো কাস্তিলো গত বছরের জুনে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন। তারপর থেকে তিনি অন্তত তিনবার কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কাস্তিলোকে অপসারণের ঘটনার সূত্রপাত গতকাল বুধবার। তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দেওয়ার সময় বলেছিলেন, তিনি কংগ্রেস ভেঙে দেবেন এবং জরুরি সরকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করবেন। তাঁর এমন ঘোষণায় অনেকেই হতবাক হয়েছেন। বেশ কয়েকজন মন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগও করেন। পেরুর সাংবিধানিক আদালতের প্রধান কাস্তিলোর বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থানচেষ্টার’ অভিযোগ করেন।
পেরুর কংগ্রেস কাস্তিলোর বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত। তাঁরা জরুরি অধিবেশন ডাকে এবং অভিশংসন ভোটের মাধ্যমে কাস্তিলোকে প্রতিরোধ করে। কাস্তিলোকে অপসারণের পক্ষে ১০১টি ভোট পড়ে। মাত্র ছয়টি ভোট বিপক্ষে পড়ে এবং ১০ জন কংগ্রেস সদস্য ভোটদানে বিরত ছিলেন।
পেরু একটি কঠিন রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে পাঁচজন প্রেসিডেন্ট পেয়েছিল পেরু। সূত্র : বিবিসি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেরু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ