নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গোলপোস্টের সামনে মাথা ঠান্ডা রেখে এতটা দুর্দান্ত পারফর্ম করতে শেষ কবে কোন গোলরক্ষককে দেখেছে বলা মুশকিল। তার একক বীরত্বে সেকেন্ড রাউন্ডের লড়াইয়ে জাপানকে হারায় ক্রোয়েশিয়া। গতকাল সেই ডমিনিক লিভাকোভিচই ফের নায়ক। এবার প্রতিপক্ষ কাতারের অন্যতম সেরা ফেভারিট ব্রাজিল। আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার-ফাইনালের নির্ধারিত সময়ে ছিল গোলশূন্য সমতা। পরে অতিরিক্ত সময়ে দু’দলই পায় গোলের দেখা। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-২ গোলে জিতে শেষ চারে জায়গা করে নেয় কোয়াটরা। টাইব্রেকারে আবার বীরত্ব দেখানো লিভাকোভিচ ম্যাচে করেন ১১টি সেভ!
২০০২ বিশ্বকাপ জেতার পর টানা চার বিশ্বকাপে নক আউট পর্বে যে দলটি থামে ইউরোপের চার দলের বিপক্ষে হেরে। নেইমারের পেলেকে ছোঁয়া রেকর্ড গোলে মনে হচ্ছিল কেটে যাচ্ছে সেই গেরো। কিন্তু লক্ষ্যে রাখা একমাত্র শটেই গোল করে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়ার ব্রæনো পেতকোভিচ। সেখানে শেষ হাসি হাসল গতবারের রানার্সআপরা। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করে দ্বিতীয়বারের মতো সেমি-ফাইনালে গেল জøাতকো দালিচের শিষ্যরা। আর তাতে টানা পঞ্চমবারের মতো নক আউট পর্বে ইউরোপের কোনো দলের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিল ব্রাজিল।
২০১৮ সালের ফাইনাল ছাড়া বড় টুর্নামেন্টের নক আউট পর্বে ক্রোয়েশিয়ার টানা নয় ম্যাচ গেল অতিরিক্ত সময়ে। এবার দ্বিতীয় রাউন্ডে জাপানকে তারা হারিয়েছিল টাইব্রেকারে। সেই আত্মবিশ^াস নিয়েই কি-না উজ্জীবিত ফুটবলই খেলল বর্তমান রানার্সআপরা। বল দখলেও একটু এগিয়ে ছিল ক্রোয়েশিয়া। তবে আক্রমণ ও গোলের সুযোগ তৈরি করায় অনেক এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। ২১ শটের ১১ ছিল লক্ষ্যে। ক্রোয়েশিয়ার নয় শটের কেবল একটি ছিল লক্ষ্যে। তবে কাক্সিক্ষত ঠিকানা পাচ্ছিল না কোনো দলই।
অবশেষে একের পর এক আক্রমণে ব্রাজিলর সুফলের দেখা পায় ১০৬তম মিনিটে। ক্রোয়েশিয়ার একজনের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে পাকেতার বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নেন নেইমার। ছুটে গিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন গোলরক্ষক। তাকেও এড়িয়ে গিয়ে খুব কাছ থেকে জাল খুঁজে নেন নেইমার। ব্রাজিলকে এগিয়ে নেওয়ার সঙ্গে স্পর্শ করেন দেশের হয়ে কিংবদন্তি পেলের সর্বোচ্চ ৭৭ গোলের রেকর্ড।
তবে ছেড়ে দেবার পাত্র যে নয় ক্রোয়াটরাও! পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলের ডি বক্সে বিপজ্জনক কিছু ক্রসও করে তারা। কিন্তু সেগুলোর সুবিধা নিতে পারছিলেন না কেউই। অবশেষে ১১৭তম মিনিটে মেলে সাফল্য। মাঝমাঠ থেকে বল থেকে বিনা চ্যালেঞ্জে অনেকটা এগিয়ে যান একটু আগেই বদলি নামা অরসিচ। ডি বক্সে তিনি খুঁজে নেন অরক্ষিত পেতকোভিচকে। তার বুলেট গতির শট মার্কিনিয়োসের হাঁটুতে লেগে কিছুটা দিক পাল্টে জড়ায় জালে। ঝাঁপিয়ে নাগাল পাননি আলিসন। এটাই ছিল লক্ষ্যে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম শট!
অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়ে খুব কাছ থেকে মার্কিনিওসের শট ঠেকিয়ে ক্রোয়েশিয়ার ত্রাতা গোলরক্ষক। পরে টাইব্রেকারে রদ্রিগোর প্রথম শট ঠেকিয়ে সুর বেঁধে দেন তিনি। পেনাল্টি শ্যুটআউটের স্নায়ুচাপেই যেন সামলাতে পারল না তিতের শিষ্যরা। ব্রাজিলের প্রথম শট নেন রদ্রিগো। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান লিভাকোভিচ। পরের দুই শটে গোল করেন কাসেমিরো ও পেদ্রো। ততক্ষণে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে জালের দেখা পেয়ে গেছেন শট নেয়া চারজনই- নিকোলা ভøাসিচ, লভরো মাইয়ের, লুকা মদ্রিচ ও মিসলাভ অরসিচ। চতুর্থ শট মার্কিনিয়োস মারেন বারে। ভীষণ হতাশায় চোখে অশ্রæ নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় ব্রাজিল। অশ্রæ ঝরে ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার ও সমর্থকদের চোখেও, তবে সেটি উচ্ছ¡াসের আনন্দঅশ্রæ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।