মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
থাইল্যান্ডের ফুকেট এলাকার নিকটবর্তী অঞ্চলে আন্দামান সমুদ্রে দুইশো'র বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে একটি নৌকা সাত দিনের বেশি সময় ধরে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ঐ নৌকায় থাকা শরণার্থীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু, যাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন খাবার ও পানির অভাবে এরই মধ্যে মারা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি থাই সার্ভিস।
নৌকাটি কয়েকদিন আগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। এই নৌকায় থাকা শরণার্থীরা বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির থেকে পালিয়ে নৌকায় উঠেছে বলে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের রোহিঙ্গা অ্যাসোসিয়েশন একটি এক মিনিটের ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে ভাসমান ঐ নৌকায় শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নৌকায় অবস্থান করতে দেখা যায়।
ঐ ভিডিওটি ধারণ করার সময় নৌকাটি থাইল্যান্ডের পশ্চিমে ফুকেট প্রদেশের কাছে আন্দামান উপকূলে অবস্থান করছিল। থাইল্যান্ডে বসবাসরত রোহিঙ্গা অধিকার কর্মী সাইদ আলম বিবিসি থাইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানান যে বুধবার রাত পর্যন্ত পাওয়া খবরে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। "অনেকেই মারা যাওয়ার পর তাদের লাশ সাগরে ফেলে দেয়া হয়েছে। তাদের খাবার শেষ হয়ে গেছে, নৌকায় পানি উঠছে", টেলিফোনে বিবিসি থাই সার্ভিসকে জানান সাইদ আলম।
বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে পালানোর ঘটনা এর আগে অনেকবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে যে অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর এমন সাগর পাড়ি দেয়ার ঘটনা অনেক বেশি ঘটছে।
এই নৌকাটি নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে বলে খবর প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। নৌকায় থাকা শরণার্থীদের সাথে কথা বলে মানবাধিকার সংস্থা আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক ক্রিস লেওয়া রয়টার্সকে জানান যে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের রানং উপকূলে থাকার সময় নৌকাটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং সেটিতে পানি ওঠা শুরু করে।
নৌকায় থাকা শরণার্থীদের বরাত দিয়ে রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে লেওয়া বলেছেন যে নৌকার যাত্রীরা ক্রমাগত নৌকা থেকে পানি সেচে ফেলার চেষ্টা করছেন। বিবিসি থাইকে রোহিঙ্গা অধিকার কর্মী সাইদ আলম বলেছেন, “কেউ এই নৌকাটির সাহায্য না করলে এটি দুই দিনের মধ্যে নৌকাটি ডুবে যাবে।” তার বক্তব্য অনুযায়ী এই নৌকাটি নভেম্বরের মাঝামাঝি বাংলাদেশ থেকে যাত্রা করে বিশ দিনেরও বেশি সময় ধরে সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে।
নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে আলম জানিয়েছেন যে বুধবার সকাল পর্যন্ত নৌকায় অন্তত ত্রিশজন এরই মধ্যে মারা গেছেন। আরো ৬০-৭০ জন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। তাদের অধিকাংশই খাবার ও পানির অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক ক্রিস লেওয়া নৌকায় থাকা শরণার্থীদের বরাত দিয়ে রয়টার্সকে বলেন যে নৌকাটির যাত্রীরা দুইদিন আগে থাই নৌবাহিনীর একটি জাহাজ দেখে সাহায্যের আবেদন করলেও তারা এগিয়ে আসেনি।
বিবিসি থাইকে একই ধরণের তথ্য দিয়েছেন সাইদ আলমও। তিনি বলেন থাই সেনাবাহিনীর একটি জাহাজ দুই দিন আগে শরণার্থী বহনকারী নৌকার সাথে যোগাযোগ করে এবং তাদের সহায়তার আশ্বাস দেয়, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সংস্থাই নৌকাটির সহায়তায় পদক্ষেপ নেয়নি। আলম বলছেন গত কয়েকমাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে অন্তত চারটি নৌকা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার দিকে গিয়েছে, যার মধ্যে এই নৌকাটিও রয়েছে। তিনি বলছেন, এই চারটি নৌকায় অন্তত ৮০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী ছিলেন।
থাইল্যান্ডের নৌ চলাচল নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ম্যারিটাইম ন্যাশনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সেন্টারের অঞ্চল-৩ এর একজন কর্মকর্তা বিবিসি থাই সার্ভিসকে নিশ্চিত করেছেন যে রোহিঙ্গা শরণার্থী বহনকারী এই নৌকাটি সম্পর্কে তারা অবগত আছেন। তবে এটি থাইল্যান্ডের উপকূলের ১০০ নটিকাল মাইলের বেশি দূরত্বে থাকায় তারা কোনো সহায়তা করতে অপারগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর অঞ্চল-৩ এর একজন কর্মকর্তা বিবিসি থাইকে জানিয়েছেন যে তারা নৌকাটির অবস্থান সম্পর্কে অবগত রয়েছেন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখছেন। তবে ঐ কর্মকর্তা বলছেন নৌকাটি থাইল্যান্ডের সমুদ্র সীমার বাইরে থাকায় তারা নৌকার যাত্রীদের আটক করতে বা খাদ্য সহায়তা দিতে পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর আরেক কর্মকর্তা বুধবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে নৌকাটি এখন ভারতের সমুদ্রসীমায় রয়েছে। তবে ভারতের কোস্ট গার্ডের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন যে নৌকাটি সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছেন এবং নৌকাটি তাদের জলসীমায় অবস্থান করছে না। ওদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর থাইল্যান্ড মুখপাত্র নৌকাটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন এবং আহ্বান জানিয়েছেন যেন থাই কর্তৃপক্ষ যেন নৌকাটি উদ্ধার করে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।