পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবিরকে দেখে আমি জিজ্ঞাসা করি, আয়াতকে আপনি কিছু করেছেন। তখন আবির বলে আমি তাকে অপহরণ করে মেরে ফেলেছি। লাশ আমার বাসায় আছে। এতে আমি ভয় পেয়ে যাই। আমাকে সন্দেহ করবে এ ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি। কিন্তু সবাইকে বলে দিলে হয়ত তার লাশ অক্ষত পাওয়া যেত। পরে শুনেছি লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
গ্রেফতারের পর এভাবে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আবিরের কাছ থেকে শোনা পাঁচ বছরের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াত খুনের বর্ণনা দিয়েছে আবিরের বাল্যকালের বন্ধু মো. হাসিব (১৭)। গতকাল বুধবার মহানগর হাকিম মেহেনাজ রহমানের খাস কামরায় এ জবানবন্দি দেয় এই হোটেল বয়। তার আগে গত মঙ্গলবার নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট সাইফুল কলোনির বাসার সামনে থেকে হাসিবকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্তকারি সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। ওই এলাকার মৃত দুলাল মিয়ার পুত্র হাসিব সেখানে ভাই ভাই হোটেলের বয় হিসাবে কর্মরত।
গত ১৫ নভেম্বর নয়ারহাট এলাকার বাসার সামনে থেকে আয়াতকে তুলে নিয়ে হত্যা করে লাশ ছয় টুকরো করে সাগর ও খালে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ১০ দিন পর মূল আসামি আবির আলীকে গ্রেফতারের পর আয়াতের নিখোঁজ হওয়ার রহস্য উদঘাটন হয়। পরে তার দেখানো মতে আয়াতের মাথাসহ লাশের খণ্ডিত কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। পিবিআই বলছে, আবির বলেছে, সে আয়াতকে অপহরণের কথা তার বন্ধু হাসিবের কাছে জানিয়েছে। এই সূত্র ধরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
হাসিব জবানবন্দিতে জানায়, আমার মা-বাবা দুজনেই মারা গেছেন। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোট দুই বোন থাকে বরিশালে খালার কাছে। হোটেল চাকরি করে তাদের জন্য নিয়মিত টাকা পাঠাই। আমার চাকরিস্থল ভাই ভাই হোটেলের পাশে মঞ্জু বিল্ডিং। আবির আলী আগে এই বিল্ডিংয়ে থাকত। আবির ও আমি একদম ছোটবেলা থেকেই একই এলাকায় থাকি। সে বয়সে আমার বড়। তাই তাকে ভাই বলে ডাকি। গত বছর আমার বাবা এবং মা দুজনই মারা যান। আবিরের বাবা-মাও গত পাঁচ-ছয় যাবৎ আলাদা থাকতে শুরু করেন। আবির তার মা ও ছোট বোনসহ আকমল আলী রোডের পকেট গেইটের বাসায় থাকে।
অনুমান গত অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে একদিন আমি আবিরের সাথে নেভি গেইটের নালার পাশের দেয়ালে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখন আবির আমাকে বলে, মঞ্জুর বিল্ডিংয়ের মালিক মঞ্জুর নাতনি আয়াতকে কিডন্যাপ করে মেরে ফেলব। এরপর তার দাদার কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা নিব। আবির আমাকে তার সাথে থাকতে বলে। আমি বলি আমি এসবে নাই। একথা বলে আমি চলে আসি। আমি আবিরকে সবসময় ভদ্র ও ভালো ছেলে হিসেবে দেখেছি। সে পান, সিগারেট খেত না। এজন্য আমি তার কথা তখন বিশ^াসও করিনি, কারো কাছে বলিওনি।
১৫ নভেম্বর বন্ধু রবিনকে নিয়ে আবির আমাদের হোটেলে যায়। সেখানে আবির গরুর গোশত দিয়ে ভাত খায়। কিন্তু রবিন ভাত না খেয়ে চলে যায়। এরপর আবিরও চলে যায়। কিন্তু তখন আয়াতের বিষয়ে সে আমাকে কিছু বলেনি। ওইদিন বিকেল প্রায় ৫টার দিকে আমি হোটেলে থেকে দেখি লোকজন ছোটাছুটি করছে। একজনকে জিজ্ঞেস করি, কী হয়েছে। সে বলে আয়াতকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি হোটেলের কাজ শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে বের হয়ে মঞ্জু বিল্ডিংয়ের পাশে যাই। তখন লেবার কলোনীর সামনে আবিরের সাথে আমার দেখা হয়। অন্যদের সাথে আবির এবং আমি আয়াতকে খুঁজতে যাই। তখন আমি আবিরকে বলি আপনি কি আয়াতকে কিছু করেছেন। এরপর সে তাকে অপহরণ ও খুনের কথা বলে। আবির বলে খুন করে লাশ বাসায় রেখেছি।
আয়াতের দাদার কাছে দুই একদিন পর ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করব। টাকা নেওয়ার সময় তুমি আমার সাথে থেক। তাহলে তোমাকেও কিছু টাকা দেব। আয়াতকে মেরে ফেলেছে শুনে আমি ভয় পেয়ে যাই। আমি বাসার দিকে চলে যাই। এরপর আমি আমার মত করে দিন কাটাচ্ছিলাম। হাসিব বলে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কারণ আমি সময়মত আয়াতকে মেরে ফেলার ঘটনা সবাইকে বলে দিলে হয়ত লাশ টুকরো টুকরো করার আগে পাওয়া যেত। এ ঘটনায় খুনের বর্ণনা দিয়ে আগেই জবানবন্দি দিয়েছে আসামি আবির আলী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।