নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ফুটবলপ্রেমীরা ম্যাচের আগেই ইংল্যান্ডকে শেষ আটে দেখতে পাচ্ছিল। তবে ফুটবল কি আর কাগজ-কলমের হিসাব মেনে চলে? মোটেই না। ধরণীর সুন্দরতম শিল্প মাঠের বাইরের হিসেবে চলে না। চর্মাকার গোল বস্তুটি নিয়ে ৯০ মিনিটে যে দল এগিয়ে যাবে, জয় যে তারই। বেশিদূর যাওয়ার দরকার নেই, পরশু রাতে থ্রি লায়ন্সদের প্রতিপক্ষে সেনেগালই তো ২০০২ সালের পূর্বের আসরের শিরোপাধারী ফ্রান্সকে কুপোকাত করে বিশাল অঘটেনর জন্ম দিয়েছিল। অথবা এই আসরে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সউদীর জয়, সবই বিস্ময়ের অংশ। তবে আল বাইত স্টেডিয়ামে পরশুরাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে পচা শামুকে পা কাটেনি থি লায়ন্সরা। সেনেগালকে দলীয় পারফরম্যান্সের নৈপুণ্যে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল।
ইংল্যান্ডের ফোডেন, কেইন, বেলিংহ্যাম, সাকা, হেন্ডারসনরা কাগজে-কলমে করা অঙ্ককেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন পরশু রাতে। একাধিক নাম না নিয়ে তো উপায় নেই। ইংল্যান্ড যে দলগত প্রচেষ্টায় উড়িয়ে দিল সেনেগালকে। তাই কোনো একজনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করার উপায় নেই। আফ্রিকার চ্যাম্পিয়ন সেনেগালকে বিদায় করে এমবাপ্পে-গ্রিজম্যানদের বিপক্ষে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সাউঠগেটের শীষ্যরা। পরশুরাতে জর্ডান হেন্ডারসন, হ্যারি কেইন আর বুকায়ো সাকার গোলে সেনেগালকে নিয়ে অনেকটা তামাশা করল ইংল্যান্ড। গোলের ব্যবধান আরো অনেক বড় হতে পারত। চোটের কারণে সেনেগালিজদের প্রাণভোমরা সাদিও মানে ছিলেন না বিশ্বকাপে। এদিকে বাড়তি হলুদ কার্ড হজম করা মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গায়ের নিষেধাজ্ঞা আর আরেক মিডফিল্ডার কুয়াতের চোট। থ্রি লায়ন্সদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেই তাই বেশ দুর্বল ছিল সেনেগাল।
তবে ম্যাচের শুরু থেকে সাহসের কমতি ছিল না ইসমাইলি সার ও দিয়াত্তাদের। ম্যাচের শুরুতে আক্রমণাত্মক ফুটবলের ফুলঝুড়ি বসিয়ে দিলো সেনেগাল। মাঝমাঠে বেশ প্রেস করে খেলেছে, নিশ্চিত করেছে প্রতিপক্ষ কাপ্তান হ্যারি কেইনের পায়ে যেন কোনোভাবেই বল না যায়। আলিও সিসের শীষ্যদের যন্ত্রণায় কখনও কখনও নিজেদের মধ্যে পাসও ঠিকভাবে দিতে পারছিল না ইংলিশরা। সেনেগালের ফুটবলাররা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বল কেড়ে নিয়ে দ্রুতই প্রতি আক্রমণে উঠে যাচ্ছিলেন।
কিন্তু আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নদের আক্রমণের ফলাফল আসেনি। ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই খেলার দখল নেয়া শুরু করে সাউথগেট বাহিনী। পরশুরাতে থ্রি লায়ন্সরা খেলল ৪-৩-৩ ছকে। তবে তাদের কৌশলকে দারুণভাবে প্রয়োগ করতে সাহায্য করেছেন দুইজন ফুটবলার। মাঝমাঠে জর্ডান হেন্ডারসন আর লেফট উইংয়ে ফিল ফোডেনের উপস্থিতির কারণে ইংল্যান্ডের খেলার মান বেড়ে গিয়েছিল আসরের পূর্বের ৩ ম্যাচের তুলনায়। একই সঙ্গে বিস্ময়বালক বেলিংহ্যাম যোগ করেছিলেন ভিন্ন মাত্রা। তাতে ইংল্যান্ডের খেলার যে মান দাঁড়াল, তার বিপক্ষে পুরো ৯০ মিনিট পাল্লা দেয়ার সামর্থ্য ছিল না ভঙ্গুর সেনেগালের। প্রত্যেকটা গোলের সময় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল দুইদলের গুণগত পার্থক্য। ম্যাচের ৩৮তম মিনিটে কেইনের পাস ধরে বক্সের বাঁ দিক থেকে লিভারপুলের অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনকে গোলে সহায়তা করেন ডর্টমুন্ডের বেলিংহ্যাম। হেন্ডারসনের মুভমেন্ট দেখে গোলকিপার এদুয়ার্দ মেন্ডি চাইলে আরো আগে রিফ্লেক্স দেখাতে পারতেন হয়তো। তবে ফর্ম হারিয়ে নিজে খোঁজা এই চেলসি গোলরক্ষকের পক্ষে তা করা সম্ভব হয়নি।
প্রথম গোল হজম করেই সেনেগালের আত্মবিশ্বাসটা মুহূর্তেই ভেঙে যায় তাসের ঘরের মতো করে। যার ফল, প্রথমার্ধ খেলা শেষ হওয়ার অন্তিম মুহূর্তে দুর্দান্ত প্রতি আক্রমণে ফিল ফোডেনের সহায়তায় হ্যারি কেইনের গোল। এই আসরে ৩ এসিস্ট করার পর অবশেষে গোলের মুখ দেখলেন ইংলিশ অধিনায়ক। এ গোলেরও শুরুটা হয়েছিল বেলিংহ্যামের মাধ্যমে। এই ১৯ বছর বয়সি ফুটবলার যেভাবে মধ্যমাঠ থেকে বল টেনে আক্রমণে গেলেন, তা দেখে ইংল্যান্ডের ঘোর বিরোধীরও বিস্ময় জাগতে বাধ্য। তবে দায়টা সম্পূর্ণভাবে করা যায় সেনেগালের অধিনায়ক কালিদু কুলিবালিকে।
বাকি সময়টা সেনেগালের অবস্থা দেখে একটি প্রবাদ মনে পড়ে যায়, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। একের পর এক বিকল্প খেলোয়াড় নামিয়েও গোলের দেখা পাননি সেনেগাল কোচ সিসে। ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে ফোডেনের সহায়তায় সাকার গোলটা শেষ পেরেক ঠুকে দেয় সেনেগালের কফিনে। ফলে আফ্রিকার দলটি ২০০২ সালের কোরিয়া-জাপান আসরের মতো আর চমক দেখাতে পারল না শেষ আটে উঠে। অন্যদিকে কোয়ার্টার ফাইনালে এমবাপ্পে-গ্রিজম্যানদের সঙ্গে এমন আক্রমণাত্মক ইংল্যান্ডকে দেখা যায় কি-না, তা জানার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব!
আজকের খেলা
মরোক্কো-স্পেন, রাত ৯টা
পর্তুগাল-সুইজারল্যান্ড, রাত ১টা
সরাসরি : বিটিভি/জিটিভি/টি স্পোর্টস
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।