পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিতর্কের ঊর্ধ্বে ও নির্দলীয় ১০ জনের নাম প্রেসিডেন্টকে দিয়েছেন খালেদা জিয়া
স্টাফ রিপোর্টার : বিতর্কের ঊর্ধ্বে সাবেক বিচারপতিদের একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে চায় বিএনপি। একই সাথে দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে কমিশনার নিযুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। গতকাল প্রেসিডেন্টের সাথে সংলাপে এমন প্রস্তাব দিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে দলের প্রস্তাবাবলির সারসংক্ষেপ লিখিতভাবে তুলে ধরেন তিনি। একই সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়া ‘বাছাই কমিটি’র বিষয়ে প্রেসিডেন্টের কাছে সুনির্দিষ্ট মতামত রেখেছেন।
গতকাল রোববার বঙ্গভবনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় নয়া পল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা জানান।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির তরফ থেকে সার্চ কমিটির জন্য পৃথকভাবে ১০ জনের নামের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিএনপির প্রস্তাবনার সাথে মিল রেখে এসব নামগুলোও প্রেসিডেন্টের কাছে দেয় বিএনপি। তাতে বলা হয়Ñ প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যেনো বিতর্কের ঊর্ধ্বে সাবেক বিচারপতিদের একজনকে নিযুক্ত করা হয়।
বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানান, প্রেসিডেন্ট আলাপচারিতায় আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘সঙ্কটের সমাধান হবে।’
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপের জন্য বঙ্গভবনের উদ্দেশ্যে বেলা ৩টায় গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে রওনা হন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় হয়ে বিকেল ৪টা ৩৭ মিনিটে দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গভবনে পৌঁছান তিনি। বঙ্গভবনে তাকে স্বাগত জানান প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদুল ইসলাম খান। এরপর বঙ্গভবনের দরবার হলে এসেই প্রেসিডেন্ট মো: আবদুল হামিদ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কুশল জানতে চান। উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, তিনি ‘মোটামুটি’ আছেন। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এ সময় তার স্পিকার থাকার দিনগুলোর কথা স্মরণ করে সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে বলেন, আগে সংসদে থাকতে তো দেখা হতো। এখন তো আমি দূরে থাকি।’ এর পরপরই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সাথে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সাথে সংলাপে বসেন।
প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী সংলাপে নতুন নির্বাচন কমিটি গঠন এবং বিএনপির সুপারিশ শুনেন প্রেসিডেন্ট। প্রতিনিধি দলে ছিলেনÑ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তালিকায় নাম থাকলেও অসুস্থতার কারণে স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম ও বিদেশে থাকায় আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস সংলাপে অংশ নিতে পারেননি ।
সংলাপ শেষে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে খুশি হয়েছি, আশাবাদী হয়ে উঠেছি। বৈঠকে বাছাই কমিটি গঠন সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। বাছাই কমিটির বিষয়ে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার সুনির্দিষ্ট মতামত মহামান্য প্রেসিডেন্টের কাছে উপস্থাপন করে এসেছেন।
তিনি বলেন, আমরা আশাকরি, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য প্রেসিডেন্টের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটা ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করবে এবং এই আলোচনার প্রক্রিয়াটা অব্যাহত থাকবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রেসিডেন্টের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, প্রেসিডেন্ট একজন আপাদমস্তক রাজনৈতিক নেতা, তিনি দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন মানুষ।
আমরা এটা জোর দিয়ে বলতে চাই, প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা আশাবাদী হয়েছি যে, এই সঙ্কট নিরসনে রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন তিনি।
বাছাই কমিটির বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাছাই কমিটির ব্যাপারে আমাদের দলের চেয়ারপারসন সুনির্দিষ্টভাবে তার মতামত মহামান্য প্রেসিডেন্টের কাছে দিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনা অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে ও উষ্ণ আমেজে হয়েছে। মহামান্য প্রেসিডেন্ট তার স্বভাবসূলভ আচরণ ও আন্তরিকতা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ও সদস্যদেরকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই আলোচনায় জাতির উদ্দেশ্যে একমাস আগে যে প্রস্তাব বিএনপি চেয়ারপারসন দিয়েছিলেন, সেই প্রস্তাবগুলো তার কাছে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবে যে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা হলোÑ সকল রাজনৈতিক দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করা। যেহেতু এই কমিশন গঠনে কোনো আইন এখনো তৈরি হয়নি, এখন আর বিকল্প কোনো পথ নেই।
নির্বাচন কমিশন গঠন ও শক্তিশালীকরণে প্রস্তাবাবলি দেয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে প্রেসিডেন্ট ধন্যবাদ জানিয়েছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দেশনেত্রী গঠনমূলকভাবে সুন্দর কতগুলো প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, যেটা ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন গঠন ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে প্রেসিডেন্ট মনে করেন। একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট এই অভিমতও প্রকাশ করেন যে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আলোচনা ও সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। এই সমস্যার সমাধানগুলো আলোচনার মাধ্যমে হতে হবে বলে প্রেসিডেন্ট মনে করেন।
নির্বাচন কমিশন গঠনে খালেদা জিয়ার দেয়া প্রস্তাবাবলি বিষয়টি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বাছাই কমিটি গঠনের পদ্ধতিগত বিষয়গুলো মহামান্য প্রেসিডেন্ট পরীক্ষা করবেন বলে তাদের জানিয়েছেন। মহামান্য প্রেসিডেন্ট মনে করেন যে, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, সাহসী ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা জাতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সেজন্য সকল রাজনৈতিক দলের সমর্থন তিনি আশা করেন এবং এ বিষয়ে সকলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেÑ এটাও প্রেসিডেন্ট আশা করেন।
আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, আগামী মাসের মধ্যে প্রেসিডেন্ট এই পুরো প্রক্রিয়াটা শেষ করবেন।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি আগামী ফেব্রুয়াারিতে বিদায় নিচ্ছে। গত বারের মতোই সার্চ কমিটি গঠন করে নতুন ইসি গঠন করতেই রাজনৈতিকদলগুলোর সাথে এই সংলাপ শুরু করলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট মো: আবদুল হামিদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।