কাতার বিশ্বকাপের পর ফেভারিট,ছোট দল বড় দল এসব তকমা ভুলে যাওয়ায় ফুটবল প্রেমীদের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে।এবারের বিশ্বকাপে তথাকথিত ছোট দলগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে দিনশেষে ফুটবলটা মাঠে খেলে জিততে হয়।যেখানে অতীত ইতিহাস আর পরিসংখ্যান খুব বেশি কাজে লাগে না।জাপানের সাথে একই গ্রুপে ছিল দুই সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন ও জার্মানি। বিশ্বকাপ শুরুর আগের সব ভবিষ্যৎবাণীকে তুরি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এই দুই পরাশক্তিকে হারিয়ে জাপান নকআউটে যাচ্ছে গ্রুপ সেরা হিসেবেই।
আজ জাপানের বিপক্ষে ২-১ গোলে স্পেনের হারে আরও একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেল।ফুটবল দিনশেষে গোলের খেলা।এখানে বল পজিশন আর মাঠের আধিপত্য খুব বেশি গুরত্ব পায়না।যদিনা তার সাথে গোলের সংযোগ ঘটে। আজ ম্যাচের প্রায় ৮৩ শতাংশ সময় বল নিজেদের স্পেনের দখলে ছিল,নিজেদের মধ্যে তারা খেলেছে রেকর্ড ১০৫৮টি পাস।এর পরেও হার এড়াতে পারেনি দলটি।
খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল পুরো স্পেনময়।বল নিজেদের দখলে রেখে প্রায় পুরোটা সময় জাপানকে চাপে রেখে গাভি-মোরাতারা।ম্যাচে লিড দিতে এনরিকের দল সময়ে নেয় মাত্র ১২ মিনিট।উইলিয়ামসের থেকে পাস থেকে ডি বক্সে বল পেয়ে আনমার্কড অবস্থায় থাকা মোরাতা হেডে লক্ষ্যভেদ করেন।এ নিয়ে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই গোল পেলেন মোরাতা। ম্যাচে স্পেনের সফলতা বলতে ওইটুকুই।
প্রথমার্ধে আরও কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল স্পেন। যদিও কাজে লাগাতে পারেনি তারা।প্রথমার্ধে দাতে দাত চেপে রক্ষণ সামলে যাওয়া জাপান বিরতির পর খেলার ধরণ পুরোপুরি পাল্টিয়ে ফেলে।বিরতির পর মাত্র ১৪৮ সেকেন্ডের ব্যবধানে এশিয়ান দলটি দুই দুইবার স্পেনের জালে বল পাঠায়।
৪৮তম মিনিটে রিতসু দোয়ানের গোলে সমতায় ফেরে জাপান।এর মিনিট খানেক পরে আসা পরের গোলেও এই মিডফিল্ডার ছিলেন এসিস্টের ভুমিকায়। ডান দিক থেকে তার নিচু শট চলে যাচ্ছিল বাইরে। সাইডলাইনের ওপর থেকে ক্রস দেন কাওরো মিতোমা,আর কাছ থেকে হাঁটুর ছোয়ায় জালে বল পাঠান আও তানাকা।
শুরুতে অবশ্য গোল দেননি রেফারি। টিভিতে রিপ্লে দেখে মনে হচ্ছিল,বল সাইডলাইন পেরিয়ে গেছে। ভিএআরের সাহায্যে শেষ পর্যন্ত গোলের বাঁশি বাজান তিনি।
জাপান জানত সমীকরণ এভাবে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত থাকলে তারাই যাবে নকআউটে।তাই দ্বিতীয় গোলের পর তারা পুরোপুরি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলা শুরু করে।আর জাপানের জমাট রক্ষণভেদে আটকা পড়ে বাকিটা সময় আর গোলের দেখা পায়নি স্পেন।
স্প্যানিশদের বিপক্ষে জাপানের প্রথম জয় এটিই। এর আগে একবারই মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। ২০০১ সালের ওই প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছিল স্পেন।
শেষ ষোলোয় আগামী সোমবার ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলবে জাপান। পরদিন স্পেন লড়বে মরক্কোর বিপক্ষে।