জাপানের কাছে হারের পর জার্মানির নকআউটে ওঠার চাবি আর পুরোপুরি নিজেদের হাতে ছিল না।শেষ ম্যাচে তাই কোস্টারিকাকে হারালেই হত গেনেব্রি-মুলারদের।প্রার্থনা করতে হতো জাপানের বিপক্ষে স্পেনের জয়ের।তবে স্পেন প্রথম দুই ম্যাচ যেভাবে খেলেছে সে হিসেবে এ ফলাফল আশা করা খুব বেশি বাড়াবাড়ি ছিল না। তবে এই ফুটবল ওয়াল্ড কাপে যে পরিসংখ্যান আর ফেভারিট টকমাঝে কোন কাজে আসছে না সেটা তো প্রমাণ হয়েছে আগেই।
তাই ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের কাজটা ঠিকটাক করতে পারলেও জাপানের কাছে স্পেনের অপ্রত্যাশিত হারে আরো একবার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। গত আসরেও তারা গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছিল।
কাতারের আল বাইত স্টেডিয়ামে এদিন ম্যাচটি ছিল রোমাঞ্চে ঠাসা।প্রথামার্ধে অবশ্য একছত্র আধিপত্য ছিল জার্মানির। ম্যাচের শুরু থেকেই কোস্টারিকার গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে ব্যস্ত রাখেন জার্মান ফুটবলাররা।চালিয়ে যান একের পর এক আক্রমণ।সফলতাও আসে খুব দ্রুত। ডেভিড রোউমের বক্সে বাড়ানো নিখুঁত ক্রস থেকে জালে বল পাঠিয়ে দলকে এগিয়ে দেন গানেব্রি।এরপর প্রথমার্ধের বাকিটা সময় শুধু গোলই পায়নি জার্মানি।এর বাইরে আক্রমণ,বল দখল সবদিকে এগিয়ে ছিল মুলাররা।
এবারের কাতার বিশ্বকাপে সব রোমাঞ্চ যেন জমা থাকে দ্বিতীয়ার্ধের জন্য।এ ম্যচেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি।প্রথমার্ধে কোণঠাসা কোস্টারিকা দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায়। ৬০ তম মিনিটে মিনিটে জার্মান ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষক নয়্যারের ভুলের সুযোগে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান কোস্টারিকার মিডফিল্ডার ইয়েলৎসিন তেহেদা।চাপে পড়ে জার্মানি। গ্রুপের আরেক ম্যাচে স্পেন পরপর দুই গোল খেলে সেই চাপ বেড়ে হয় আরো কয়েকগুণ।
জার্মানির বিপদ আরও বাড়ে কোস্টারিকা দ্বিতীয় গোল করলে। ম্যাচের ৭০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় কোস্টারিকা। গোল করেন হুয়ান পাবলো ভারগাস। চোখের পলকে পাল্টে যায় পয়েন্ট টেবিলের সমীকরণ।পয়েন্ট টেবলে শীর্ষ দুইয়ে তখন জাপান ও কোস্টা রিকা,জার্মানি ও স্পেনের সামনে বিদায়ের শঙ্কা।
গোল হজমের তিন মিনিট পর কাই হাভার্টজের গোলে।পুরো ম্যাচে জার্মানির আধিপত্য কতটা ছিল সেটা তো বুঝা যায় পরিসংখ্যানে। নির্ধারিত সময়ে তারা কোস্টারিকার গোলমুখে শট নেয় রেকর্ড ৩২ বার!
এইসব আক্রমণের বেশিরভাগের কারিগর ছিলেন জার্মানির তরুণ তুর্কি জামাল মুসিয়ালা।পাস,এসিস্ট,শট আর পায়ের কারুকাজে পুরো ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন এই আটার বছর বয়সী জার্মান ফুটবলার।ভাগ্য সহায় হলে এদিন পেয়ে যেতে পারতেন হ্যাট্রিকও,তবে দুইবার গোলপোস্টের বাধায় আর আর কয়েকবার কেইলর নাভাসের দুর্দান্ত গোলকিপিং দক্ষতায় তাকে ম্যাচ শেষ করতে হয়েছে গোলহীন থেকেই।৮৫ মিনিটে হাভার্টজের ও ৮৯ মিনিটে ফুলক্রুগের গোলে জার্মানির বড় জয় নিশ্চিত হয়।
তখন শুধু দলটির সমর্থকরা প্রার্থনা করছিল স্পেন যেন জাপানের বিপক্ষে অন্তত আর একটি গোল করে। তবে প্রতিবেশী জার্মানিকে সেই সহায়তা আর করতে পারেনি স্পেন। টানা দ্বিতীয়বারের মত গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয় চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।