যোগ করার সময় শেষ মিনিটের খেলা চলছে। ফ্রান্সের বিপক্ষে ১-০ গোলের লিড থাকা তিউনিসিয়া তখন প্রাপ্য এক জয়ের দ্বারপ্রান্তে।কাতার বিশ্বকাপের উড়তে থাকা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স তখন লজ্জাজনক এক হারের প্রহর গুনছে।এমন মুহূর্তে ফ্রান্সের ত্রাতা হয়ে এলেন আতোয়ান গ্রিজম্যান।শেষের বাঁশি বাজার মাত্র ৩০ সেকেন্ড আগে ডি বক্স থেকে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে দুর্দান্ত ভলিতে দলকে ফেরালেন সমতায়।স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে পুরো ফ্রান্স দল,সমর্থকরা ফেটে পড়ে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে। মিনিটখানেক ধরে চলে উদযাপন।
তিউনিশিয়ার খেলোয়াড়দের মুখে তখন রাজ্যের হতাশা, এ যেন তীরে এসে তরী ডুবি।তবে নাটকের শেষ তখনো হয়নি আর তখনই ভিএআর চেক করে রেফারি জানালেন গোলটি ছিল অফসাইড! মুহূর্তে পাল্টে যায় স্টেডিয়ামের দৃশ্যপট।এবার বুনো উল্লাসে মাতেন তিউনিসিয়ানরা। সব নাটকের শেষে ১-০ গোলের ঐতিহাসিক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আরব দেশটি। পরিসংখ্যান আর অতীত ইতিহাসের নিরিখে এটি বিশ্বকাপের চতুর্থ অঘটন। তবে তিউনিসিয়া যেভাবে খেলেছে, তাতে মনে হয়নি তাদের প্রতিপক্ষ বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
অপ্রত্যাশিত এ হারের গ্রুপ সেরা হয়েই পরের রাউন্ডে যাচ্ছে দিদিয়ে দেশামের দল। প্রথম দুই ম্যাচ থেকে পূর্ণ ছয় পয়েন্ট তুলে নেওয়ায় তিউনিসিয়ার কাছে এ হার ভোগাচ্ছে না ফ্রান্সকে।
আগেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করায় মূল একাদশের নয়টি পরিবর্তন এনেছিলেন ফ্রান্স কোচ। তার এই অতিরিক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কাজ হল গতবারের চ্যাম্পিয়নদের জন্য।
আফ্রিকান দলটির সামনে বল পজিশনে ধরে রাখা ছাড়া বলার মত কিছুই করতে পারেননি ফ্রান্সের বেঞ্চের খেলোয়াড়রা। প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে একটিও অন টার্গেট শট নিতেও পারেনি ফ্রান্স।
গোলশুন্য সমতায় প্রথমার্ধ তিউনিসিয়া বিরতির পর আক্রমণে যায়।ফলও আসে দ্রুত। ফরাসিদের অপেক্ষাকৃত দুর্বল রক্ষণভাগকে পরাস্ত করে ৫৮ মিনিটে লিড নেয় আরব দেশটি।ফ্রান্স মাঝমাঠের ভুলের সুযোগে বল দখলে নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন
ওয়াহবি খাজরি।
দারুণভাবে তিনি বাঁ পায়ের শটে গোলকিপার স্টিভ মাঁদাঁদাকে ফাঁকি দিয়ে এই ফুটবলার খুঁজে নেন জাল।আচমকা এই গোল হজমের পর টনক নড়ে দিদিয়ে দেশামের। নিয়মিত বিরতিতে তিনি মাঠে নামান কিলিয়ান এমবাপ্পে, আঁতোয়ান গ্রিজমান, উসমান দেম্বেলে,আঁদ্রিয়া রাবিওদের। তবে মূল তারকারা মাঠে ফিরলেও গোলের দেখা পায়নি ফরাসিরা। গ্রিজম্যানের শেষ মুহূর্তে পাওয়া গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হলে হারের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ফ্রান্সকে।
তবে স্মরণীয় এ জয়ের পরও শেষ হলো টিকেট পাচ্ছে না তিউনিসিয়া। প্রথম দুই ম্যাচে জয় না পাওয়া বিষয়টি আর পুরোপুরি তাদের হাতে ছিল না। এই ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি শেষ ষোলোতে ওঠার জন্য তাদের ডেনমার্কের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার হারের প্রার্থনা করতে হতো।ম্যাচের শেষ পর্যায়েই খবর আসে, ডেনমার্ককে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে গেছে অস্ট্রেলিয়া। তারপরও বড় এক অর্জন নিয়ে কাতার থেকে ফিরল তিউনিসিয়া।