মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নভেম্বরের শুরুতে পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর তিনটি জেএফ-১৭ ফাইটার বাহরাইন ইন্টারন্যাশনাল এয়ার শো-তে প্রদর্শনী দেখায়। একই সময়ে চীন জুহাইতে বার্ষিক ‘চায়না ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন এন্ড এরোস্পেস এক্সিবিশন’-এ জেএফ-১৭ প্রদর্শন করে। এসব জেট শুধুমাত্র পাকিস্তান, মিয়ানমার এবং নাইজেরিয়াতে কাজ করছে, যেগুলোর সংখ্যা ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ছিল মোট ১শ’ ৪৫টি। এভিয়েশন উইক-এর তথ্য অনুযায়ী, এ দশকের মাঝামাঝিতে সংখ্যাটি মোট ১শ’ ৮৫টি জেএফ-১৭-তে উন্নীত হবে, যা এটিকে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর চাহিদাসম্পন্ন ও সবচেয়ে ব্যাপকভাবে পরিচালিত চীনা যুদ্ধ বিমানে পরিণত করবে।
চীনের তৈরি একক-সিট, একক-ইঞ্জিন জেটটি পাকিস্তানে জেএফ-১৭ থান্ডার এবং চীনে শাওলঙ-১ নামে পরিচিত। সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ফুট উচ্চতায় উড্ডয়নে সক্ষম এবং ঘণ্টায় প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতি সম্পন্ন জেএফ-১৭ আকাশ শত্রু বিমান ধ্বংস করতে এবং স্থলে আক্রমণসহ বেশ কয়েকটি লক্ষ্য সম্পাদন করতে পারে। এটি সাতটি হার্ডপয়েন্ট বা কুঠুরিতে ৩ হাজার কেজিরও বেশি অস্ত্র বহন করতে পারে এবং একটি একক টুইন-ব্যারেল ২৩ মিলিমিটার স্বয়ংক্রিয় কামান দিয়ে সজ্জিত।
জেএফ-১৭’র অতি সাম্প্রতিক সংস্করণে আরো একটি অতিরিক্ত হার্ডপয়েন্ট, একটি কোয়াড-রিডানডেন্ট ডিজিটাল ফ্লাই-বাই-ওয়্যার সিস্টেম বা স¦য়ংক্রিয় ডিজিটাল কমান্ড সিস্টেম এবং একটি সক্রিয় ইলেকট্রনিকভাবে রাডার স্ক্যানারসহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য উন্নতি রয়েছে। পাকিস্তান তার জেএফ-১৭-কে একটি ৪.৫-প্রজন্মের জেট হিসাবে বিবেচনা করে এবং এর বিমানবাহিনীতে অন্তত ৫০টি অর্জনের পরিকল্পনা করেছে। জেটগুলোকে ইতোমধ্যেই চীনের সবচেয়ে উন্নত ‘এয়ার টু এয়ার’ মিসাইল বহন করতে দেখা গেছে।
প্রথম কয়েকটি জেএফ-১৭ সম্পূর্ণরূপে চীনে তৈরি করা হলেও এগুলোর বেশিরভাগই বর্তমানে পাকিস্তান উৎপাদন করে থাকে। বর্তমানে এর ৫৮ শতাংশ পাকিস্তানে এবং ৪২ শতাংশ চীনে উৎপাদন হয়। পাকিস্তানের বাহিনীতে কমপক্ষে ১শ’ ২৫টি জেএফ-১৭ রয়েছে, যা এর মেরুদণ্ড। পাকিস্তান বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জেএফ-১৭ চালায়। মায়ানমার এর প্রথম আন্তর্জাতিক গ্রাহক, যার ছয়টি জেএফ-১৭ এবং নাইজেরিয়ার তিনটি রয়েছে। ১শ’ ৫০ কোটি থেকে ২শ’ ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের জেএফ-১৭ সমর বাজারে কার্যত অন্যান্য চতুর্থ প্রজন্মের জেটের তুলনায় যথেষ্ট সস্তা।
জেএফ-১৭-এর প্রাণঘাতী ক্ষমতা এটিকে কম প্রতিরক্ষা বাজেটের দেশগুলোর কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে, যারা বহুমুখি যুদ্ধ জেট চায়। র্যান্ড কর্পোরেশনের সিনিয়র আন্তর্জাতিক এবং প্রতিরক্ষা গবেষক টিমোথি হিথ মনে করেন, ‘এটি অতি অত্যাধুনিক নয়, তবে এটি একটি নির্ভরযোগ্য খেলোয়ড়। এটি এমন বিমান নয়, যা এফ-২২-এর সাথে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, তাই এর সবচেয়ে অত্যাধুনিক ইঞ্জিন এবং যন্ত্রাংশের প্রয়োজন নেই। এটি একটি সস্তা বহুমুখি বাজেট বিমান, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উপযুক্ত এবং সম্ভবত সবচেয়ে আকর্ষণীয়, যারা একটি মৌলিক বিমান খুঁজছেন তাদের নিজস্ব বিদ্রোহীদের মতো লোকদের ওপর বোমা বর্ষণ করার জন্য বা একই ধরনের দেশগুলোর বিরুদ্ধে মৌলিক প্রতিরক্ষার জন্য।
ইতোমধ্যে, বেশ কয়েকটি দেশ জেএফ-১৭ নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইরাক অন্তত ১২টি কিনতে চেয়েছে বলে জানা গেছে, এবং মিসর বলেছে যে, তারা পাকিস্তানের সাথে সম্প্রসারিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতার অংশ হিসাবে জেএফ-১৭ কিনতে আগ্রহী। আজারবাইজান বহু বছর ধরে বলে আসছে যে, তারা জেএফ-১৭ চায়, এবং বলিভিয়া ও আর্জেন্টিনা উভয়ই জেটটি কেরার কথা বিবেচনা করছে। আর্জেন্টিনা তার নিজস্ব যুদ্ধ বিমান উৎপাদন সম্প্রসারণেরও চেষ্টা করছে। যদি দেশটি অভ্যন্তরীণভাবে জেএফ-১৭ তৈরির লাইসেন্স পায়, তবে এটি জেটটিকে তার প্রতিবেশীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। জেএফ-১৭ বিক্রয় সম্প্রসারণ চীনের ‘মূল্য সাশ্রয়ী অস্ত্র’ অস্ত্রের বাজারে তার আধিপত্য বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, যা কম পরিশীলিত, কিন্তু মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে এখনও কার্যকর, যারা দীর্ঘদিন ধরে জেট, সাঁজোয়া যান এবং ভারী কামানগুলোর জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভর করে আসছে। সূত্র : বিজনেস ইন্সাইডার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।