ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল ইরানের।সেই ম্যাচে বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার ইংল্যান্ডের কাছে ৬ গোল হজম করলেও ইরান কখনোই খোলসবন্দি ছিল না। একটু আধটু যা সুযোগ পেয়েছে,তাতেই তারা সাউথগেটের দলের রক্ষণভাগকে ফেলেছে বিপদে। আদায় করে নিয়েছিল দুটি গোলও।
সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আজ ওয়েলসের বিপক্ষে উজ্জীবিত ফুটবল খেল্ল দেশটি।আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে আজ বি গ্রুপের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইরান ও ওয়েলস। প্রথামর্ধে শুরুতে ওয়েলস কিছুটা আধিপত্য দেখালেও সময় করানোর সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচে ফিরে ইরান। চাপ সামলে বেশ কয়েকবার তারা আক্রমণে যায়। তবে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়
তৃতীয়ারদের শুরুতে খেলার গতি বাড়ায় ইরান। ৪৯ থেকে ৫২ -এই তিন মিনিটের ভেতরে দলটি অন্তত দুটি গোল পেতে পারতো। ইরান দলের স্ট্রাইকার সরদার আজমাউন এ সময় তিনটির জোরালো শট নিয়েছিলেন। ইরানকে হতাশ করে যার দুটি গোল পোষ্টে লেগে ফিরে আসে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা সমতে শেষ হলে এই দুঃখ ভোগাবে ইরানিদের।তবে অতিরিক্ত সময়ে মাত্র ৩ মিনিটে ওয়েলসের জালে দুইবার বল পাঠিয়ে ম্যাচ থেকে পূর্ণ তিন পয়েন্ট আদায় করে মাঠ ছাড়ে কার্লোস কুইরোজের দল।
অথচ এদিন শুরু দেখে মনে হয়নি ওয়েলসসের শেষ পরিণতি এতটা করুণ হবে। ওয়েলসের হয়ে এদিন সব থেকে থেকে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড করেন।তার রেকর্ডের ম্যাচে প্রথামর্ধে ওয়েলস ছিল এগিয়ে। বল পজিশন আর আক্রমণে তারা ইরানকে চাপে রাখে।ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে রবার্টসের ক্রসে কিফার মুরের শট ঠেকিয়ে দেন ইরানের গোলরক্ষক।
নিষ্প্রভ শুরুর পর ইরান গোছালো ফুটবলে ম্যাচ ফিরতে শুরু করে।১৫ তম মিনিটে সরদার আজমাউনের সাথে ওয়ান টু ওয়ান খেলে ওয়েলসের জালে বল পাঠান আলি গোলিজাদেহ।তবে অফসাইডের কারণে সে গোল বাতিল হয়।
এরপর প্রথামার্ধের বাকিটা সময় সাবধানী ছিল দুই দলই।গোলশূন্য সমতায় বিরতিতে যায় দুই দলই।তবে দ্বিতীয়ার্ধে ইরানের কাছে একরকম পাত্তাই পায়নি গ্যারেথ বেলের ওয়েলস।৫১ তম মিনিটে সরদার আজমাউনের জোরালো শট ডান গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে।পরের মিনিটে এই হতাশা আরও বাড়িয়ে তার নেওয়া শট লাগে বাম দিকের গোলপোস্টে।সেই যাত্রায় বেচে যায় ওয়েলস।
এরপর থেকে খেলেছে শুধু ইরান।৭৩ তম মিনিটে ওয়েলস গোলরক্ষক হেনেসি সাইয়িদ এজাতোলাহির নেওয়া শট দারুণভাবে না ঠেকালে এগিয়ে যেত ইরান।আক্রমণের চাপে পড়ে ভুল করে বসেন হেনসি।৮৬ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখেন এই ওয়েলস গোলকিপার । আক্রমণে ধেয়ে আসা তারেমিকে ঠেকাতে গিয়ে হেনসিপা তুলে দেন ইরান ফরোয়ার্ডের গায়ের ওপরে।ভিএআর দেখে তাকে মাঠছাড়া করেন রেফারি।
৯০ মিনিট পর্যন্ত কোন গোল না হলে মনে হচ্ছিল ওয়েলস ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে যেতে পারবে।তবে শেষ রক্ষা হয়নি দশ জনের দলে পরিণত হওয়া বেলদের। যোগ করার সময়ে নাটকীয়তায় ২-০ গোলে ম্যাচ জেতে ইরান।যোগ করা সময়ের সপ্তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে জটলার ভেতর দিয়ে নিচু শট নেন ইরান ডিফেন্ডার রুজবেহ চেশমি। চেষ্টা করেও সেটি আটকাতে পারেননি বদলি হিসেবে নামা নতুন গোলরক্ষক। প্রথম গোলের পর এলোমেলো হয়ে যায় ওয়েলস। সমতা ফেরাতে দলটির সব খেলোয়াড় উঠে যান ইরান অর্ধে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাউন্টার এটাকে ইরানকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন রামিন রেজাইয়ান।
গ্রুপের শেষ ম্যাচে ইরানের প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েলস খেলবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।