পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্রিমিনাল অফেন্স একেবারে খারিজ হয় না পুনরুজ্জীবিত করা যায় : এম এ কাইয়ুম
আদালতের এখতিয়ারের বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই : এ কে এম শহীদুল হক
মামলা খারিজ হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার বিধান আছে : কেএম রেজাউল ফিরোজ রিন্টু
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য জুলুম-নির্যাতন করছেন এবং মামলা করছেন ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহার এবং হত্যার মামলা দায়ের করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। গতকাল রাজশাহীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেছেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অতি উৎসাহী যেসব পুলিশ মামলা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ভবিষ্যতে মামলা করা হবে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও তাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ‘পুলিশ ভাইয়েরা আমাদের দেশের সন্তান। তাদের দায়িত্ব দেশের শান্তি বজায় রাখা। কিন্তু কিছু অতি উৎসাহী কর্মকর্তা বিএনপির সমাবেশে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আপনারা (পুলিশ সদস্য) অতি উৎসাহী হয়ে গণদুশমনে পরিণত হবেন না। যারা অতি উৎসাহী হয়ে মামলা, গ্রেফতার করছেন তাদের বিরুদ্ধেও ভবিষ্যতে এই হয়রানির জন্য মামলা দায়ের করা হবে।’
শুধু মিজানুর রহমান মিনু নয়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপিসহ আরো কয়েকজন নেতা ‘অতি উৎসাহী পুলিশ (তাদের ভাষায়) যারা বিএনপির শান্তিপ্রিয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে জুলুম-নির্যাতন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে মামলা করা হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
জানতে চাইলে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক ইনকিলাব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে আদালত বিচার বিশ্লেষণ করে সে মামলা খারিজ করে দিয়েছে। এটা আদালতের এখতিয়ার। এক্ষেত্রে আদালতের বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে এ প্রসঙ্গে সাবেক পুলিশ প্রধান এম এ কাইয়ুম ইনকিলাবকে বলেন, এ ধরনের মামলা খারিজ হলেও পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব। ক্রিমিনাল অফেন্স একেবারে খারিজ হয় না। সরকার ইচ্ছে করলে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে এ মামলা আবার চালাতে পারে। ন্যায়বিচার বিঘিœত হয়েছে মনে করলে হাইকোর্টের সহজাত ক্ষমতা আছে। সুতারাং সাক্ষ্যগ্রহণ না করে ন্যায় বিচারের পরিপন্থি কিংবা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিনা সাক্ষীতে এ এভাবে মামলা নিষ্পত্তি করা যায় না। ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৬১ (ক) ধারায় বলা আছে, ‘হাইকোর্ট বিভাগের সহজাত ক্ষমতার সংরক্ষণ, এই বিধির অধিনে প্রদত্ত কোনো আদেশ কার্যকর করিবার জন্য বা কোনো কোনো আদালতের কার্যক্রমের অপব্যবহার রোধ করিবার জন্য বা অন্যকোনোভাবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনো আদেশ প্রদানের নিমিত্তে হাইকোর্ট বিভাগে যে সহজাত ক্ষমতা আছে, এই বিধির কোনোকিছু তাহা সীমাবদ্ধ বা পূর্ণ প্রভাবিত করিবে বলিয়া গণ্য করা যাইবে না। অর্থাৎ ন্যায়বিচারের জন্য ন্যায়বিচার যেখানে বিঘিœত হয়েছে, তার সহজাত ক্ষমতা আছে এ আইনে যা কিছু থাকুক না কেন, হাইকোর্টের একটি সহজাত ক্ষমতা আছে তা দেখার। সুতরাং সাক্ষ্যগ্রহণ না করে মামলা খারিজ করে দেয়া বা পুলিশ আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করে একটি হত্যা করেছে, এগুলোর অধিকার থাকবে না। সাক্ষ্যগ্রহণ ছাড়া এভাবে কেস নিষ্পত্তি করা যায় না। মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য হাইকোর্টকে ক্ষমতা দেয়া আছে। তাছাড়া আইনের পরিপন্থি কিছু হলে পুলিশেরও তো আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কোর্ট সেটা বিবেচনা করবে। তদন্ত তো হতে হবে যে, লোকটা আত্মরক্ষার অধিকার ঠিকমতো প্রয়োগ করছে কি-না। এটা ওই রকম ছিল কি-না। এটা দরকার ছিল কি-না। এসবগুলোই কোর্টের বিচার্য বিষয়। সুতারাং আমি কিছু না দেখে সাক্ষী গ্রহণ না করে মামলা খারিজ করে দিলাম এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ন্যায়বিচারের পরিপন্থি বলে আমি মনে করি।
বিএনপির নেতাকর্মীদের এই হুংকারের পর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩০ জুলাইয়ে লোডশেডিং অতপর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ২২ আগস্ট থেকে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। এসব কর্মসূচিতে সংঘর্ষ, আওয়ামী লীগের হামলা ও পুলিশের গুলিতে (বিএনপির ভাষায়) প্রাণ হারায় ৭ জন নেতাকর্মী। এসব সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেও বিএনপি ও নিহতের পরিবারের সদস্যরাও পৃথকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। দেখা যায় বিএনপির কর্মীদের গুলি করে হত্যায় এখন পর্যন্ত ৭টি মামলা হয়েছে। বিএনপি করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ ১টি করে ও ভোলায় ২টি মোট ৪টি মামলা। আর অভিভাবকরা নারায়ণগঞ্জ ১টি রুপগঞ্জে ১, যশোরে ১টি মোট ৩টি। এসব মামলার মধ্যে একাধিক মামলা খারিজ করা হলেও রেকর্ড হিসেবে সেগুলো থেকেই যাচ্ছে। এসব মামলা করায় বিএনপি নেতাদের ঘন ঘন হুংকার ভবিষ্যতে অতিউৎসাহী যেসব পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে মামলা করার হুংকার প্রশাসনের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। যে সব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সরকার পরিবর্তনের পর কি হবে, তা নিয়ে তাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। কারণ অতীতে (বিএনপির শাসানামল) দেখা গেছে অনেক উৎসাহী আমলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যের অতি বাড়াবাড়ির কারণে পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। বিএনপির সময়ের অতি উৎসাহী পুলিশ অফিসারদের দু’একজনকে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রচার হয়।
বিএনপির নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন ভবিষ্যতে তারা ক্ষমতায় গেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যার সব মামলা পুনুরুজ্জীবিত করবেন এবং হত্যাকাÐের বিচার করবেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় জড়িত অতি উৎসাহী পুলিশ সদস্যদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের তালিকা করছে। পরিষ্কার করে বলতে চাই, যে সমস্ত আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বাধা দিয়েছে, নেতাকর্মীদের বলব আপনারা তালিকা করুন। যারা বাধা দিয়েছে, আক্রমণ করেছে, ভাঙচুর করেছে, নেতাকর্মীদের আহত করেছে তাদের লিস্ট করুন। অতি উৎসাহী পুলিশ যারা এভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে, পুলিশের আইন লঙ্ঘন করে, দেশের আইন লঙ্ঘন করে তাদেরও আমাদের মাথায় রাখত হবে। পুলিশের কিছু সদস্য যারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করেছে, হেনস্থা করেছেন তাদের আমি বলতে চাই, চাকরিতে ঢোকার আগে যে সংবিধানের ওয়াদা করে চাকরিতে ঢুকেছিল, সেগুলো আবার একটু পড়ে দেখার জন্য। তারা যদি আবার পড়ে না দেখে, এ কাজ করতে থাকে, জনগণ সেটা মেনে নেবে না। কিছু অতি উৎসাহী লোকের দায় কেন পুরো পুলিশ বাহিনী বহন করবে? কেন বদনাম নিবে? যারা বিনা ওয়ারেন্টে, বিনা কারণে, বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছেন, নির্যাতন করছেন আমরাও তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবো। তাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করব। এবার ছাড় দেওয়া হবে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, পুলিশ বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর বাসার চাকর-বাকর না, যে যা বলবে তাই শুনতে হবে। ভয় পাবেন না, কোনো অন্যায় আদেশ পালন করবেন না সরকাররে। যুদ্ধটা পুলিশের বিরুদ্ধে না। পুলিশ বাহিনীকে বুঝতে হবে। পুলিশ জনগণের টাকায় চলে, জনগণের সেবা করার জন্য। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ সারা দেশে বিএনপির নেতাদের তালিকা করার সার্কুলার দিয়েছে। পুলিশের যে অফিসার এই তালিকা করছেন, তাকে এই অধিকার কে দিয়েছে? এই অনাধিকার চর্চার অধিকার তাকে কে দিলো? সংবিধানের কোথায় লেখা আছে সভা-সমাবেশ করা যাবে না? আমি শেখ হাসিনাকে বলব, পুলিশকে জনগণের মুখোমুখি করবেন না। ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি বলেছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে গুলি করে ছাত্রদল নেতা নয়নকে হত্যা করা হয়েছে। এ ধরনের হত্যাকাÐের ইতিপূর্বে র্যাবের ওপর সেনশন হয়েছে সুতরাং পুলিশ ভাইয়েরা সাবধান হয়ে যান। শুধুমাত্র লিফলেট বিতরণের কারণে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছেন। নয়ন হত্যাকাÐের বিচার বাঞ্ছারামপুরের মাটিতে হতেই হবে। আমার দেশে আমার ভাইয়ের বুকে আপনারা গুলি চালাবেন, আমার ভাইয়ের রক্তে বাংলার মাটি ভিজবে, আপনাদের এর জবাব একটা একটা করে দিতে হবে। সেই দিন আর বেশি দেরি নেই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতা নয়ন নিহতের ঘটনায় পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসিসহ ৮ জনকে আসামি করে দায়ের করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
জানা যায়, ২৬ নভেম্বর বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. নয়ন মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ২৩ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার (২২) মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমানসহ ১৮ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বাঞ্ছারামপুর) সামিউল আলমের আদালতে নিহত নয়নের বাবা রহমত উল্লাহ বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পুলিশ কনস্টেবল বিশ্বজিৎ বিশ্বাসকে। এছাড়া পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা, ওসি ন‚রে আলম, পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ দে, এসআই আফজাল হোসেন খান, এসআই বিকিরণ চাকমা, কনস্টেবল শফিকুল ইসলামসহ আরও অজ্ঞাত ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়।
ভোলা : ভোলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের সময় গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আবদুর রহিম নিহতের ঘটনায় তার স্ত্রী খাদিজা বেগম বাদী হয়ে ৩৬ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। ৪ আগস্ট তিনি জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। মামলা নম্বর এমপি ৪০৫/২২। ভোলা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), উপ-পরিদর্শকসহ ৩৬ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী খাদিজা বেগমের আইনজীবী আমিরুল ইসলাম জানান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার কামাল মামলাটি আমলে নিয়ে ভোলা সদর থানা-পুলিশকে ৮ আগস্টের মধ্যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, সুরতহাল প্রতিবেদন, মেডিকেল প্রতিবেদনসহ সব তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশে সারা দেশের সঙ্গে ভোলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সমাবেশ ডাকা হয়। সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আবদুর রহিম তার বাড়ি সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রাম থেকে এসে সেই সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশ সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হলে ২৫০-৩০০ নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নেন। বিক্ষোভ মিছিল শুরু হতেই পুলিশ বাধা দিয়ে লাঠিপেটা করে। লাঠিপেটার একপর্যায়ে পুলিশ গুলি চালায়। এ সময় আবদুর রহিম গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। তখন পুলিশ বন্দুকের বাঁট দিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। রক্তাক্ত অবস্থায় ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই দিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. নুরে আলম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান।
নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী শাওন আহমেদ রাজার হত্যার ঘটনায় মামলার আবেদন করে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মোল্লার আদালতে এ হত্যা মামলার আবেদন করেন। জানা যায়, ডিবি পুলিশের এসআই মাহফুজুর রহমান কনকসহ ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে এ মামলার আবেদন করা হয়। মামলার অন্যান্য আসামি করা হয়, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক অঞ্চল) নাজমুল হাসান, সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তারিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আমীর খসরু, পুলিশ সদস্য শাহরুল আলম, সোহাগ, আরিফ দেওয়ান, ফেরদৌস দেওয়ান, সেলিম, রিপন, যুগল, মামুন, রিয়াজ, হাফিজ, সহকারী উপ-পরিদর্শক ইকবাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, পুলিশ সদস্য জাকির হোসেন, নাঈম, রাকিব, আনিস, সাইদুল, এএসআই সোহরাব, পুলিশ সদস্য ইনজামামুল, রাসেল, খলিলুর রহমান, মোহসিন, মোস্তাকিম, শাহাদাৎ, ফখরুল, আরিফ দেওয়ান, দীপক সাহা, শাহীন, ফরিদ উদ্দিন, মুরাদুজ্জামান, শাহীন, কবির হোসেন, মান্নান, রুবেল, সোহাগসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ জন। এছাড়াও মুন্সিগগঞ্জ, যশোরে বিএনপির কর্মী হত্যার অভিযোগ তুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কেএম রেজাউল ফিরোজ রিন্টু ইনকিলাবকে বলেন. কোনো ক্ষতিগ্রস্ত বা বিচারপ্রার্থী অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় থানায় যাওয়ার পরে নিয়ম মোতাবেক থানা কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক তথ্য বিবরণি হিসেবে এফআইআর গ্রহণের বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে যদি থানা কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অভিযোগ বা এফআইআর গ্রহণ না করে তার সুস্পষ্ট ব্যাখা লিপিবদ্ধ করতে হয়। পরে বিচারপ্রার্থী স্থানীয় প্রথমশ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও আমলী আদালত বিচারপ্রার্থী ব্যক্তির নালিশি আবেদন গ্রহণ করত : ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারায় অভিযোগকারিকে পরীক্ষা করে অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা আদালতের কাছে প্রতীয়মান হলে দাখিলকৃত নালিশি অভিযোগের বিষয়ে থানাসহ যে কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনিকে নালিশি বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিতে পারে। অথবা নালিশি বিষয়ে স্থানীয় থানাকে সরাসরি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে তদন্ত পূর্বক ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিতে পারে। এছাড়াও আমলী আদালত নালিশি বিষয়টি সরাসরি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করিতে পারে অথবা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী করতে পারে। এ নালিশি বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের সত্য বলে প্রতীয়মান না হলে তিনি এ নালিশি আবেদন খারিজ করতে পারেন। তবে কোনো আলোচিত ঘটনা অথবা বিভিন্ন জনসম্মুখে সংঘটিত ঘটনা যা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়া বা গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত ঘটনা যা সর্বমহলে আলোচিত এবং স্বাভাবিক অর্থে দৃশ্যমান এরুপ ঘটনা অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্তের দাবি রাখে। যা ন্যায়বিচারের পক্ষে সহায়ক। নালিশি মামলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খারিজ হলে বিচারপ্রার্থী ব্যক্তি অথবা বাদী ওই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা করিতে পারে। দায়রা জজ যদি বিচারপ্রার্থী কোনো প্রতিকার না পায়, সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার প্রার্থনা করতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।