নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ম্যাচের ফলাফলটাই বিষ্ময়কর। আর্জেন্টিনা ১-২ সউদী আরব। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন। বিশ্বকাপের পঞ্চম ম্যাচে এসেই চমক দেখিয়ে দিল সউদী। লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে মধ্যপ্রাচ্যের দলটির অদম্য ইচ্ছা ও সাহসের কাছে হেরে গেল লিওনেল স্কালোনির দল। এমনকি বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসিকে, সউদী ডিফেন্ডাররা করে ফেললেন বোতলবন্দী। হার্ভ রেনার্ডের সাহসী শিষ্যরা হাই-লাইন ডিফেন্স ধরে রেখে ও দলগত ফুটবলের প্রদর্শনী করে শেষ পর্যন্ত হারিয়েই দিল কাতার বিশ্বকাপের হট ফেবারিটদের। তাতে আলবিসেলেসেস্তাদের অপরাজিত পথচলা ৩৬তম ম্যাচে এসে সমাপ্তির দেখা পেল। একই সঙ্গে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া নিয়ে লাতিন দলটি পড়ে গেল বিশাল শঙ্কায়।
অথচ ম্যাচের শুরুটা ছিল একদমই অন্যমাত্রার। সউদীকে বেশ ভালোভাবেই শুরু দিকে চেপে ধরেছিল আর্জেন্টিনা। আক্রমণের বন্যা বসিয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্স ছিঁড়ে ফেলেছিল স্কালানির দল। তবে সেই প্রচেষ্টাগুলো শেষ পর্যন্ত গোলের দেখা পায় নি। এই জায়গায় একটু দাড়ালাম। আসলে গোলের দেখা ঠিকই পেয়েছিল, তবে অফসাইডের বেড়ায় বাতিল হয়েছে আকাশি-নীলদের ৩টি গোল! সউদী ডিফেন্ডাররা গোটা প্রথমার্ধই হাই-লাইন ডিফেন্সে ধরে রাখে। অর্থাৎ আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডরা যেই গোলের জন্য ছুটেছে, সউদী ডিফেন্ডাররা খুবই সুকৌশলে উল্টো দিকে দৌড়ে অফসাইড নিশ্চিত করেছে। নিঃসন্দেহে খবই সূক্ষ ও কঠিন কৌশল। একটু এদিক সেদিক হলেই নিজেদের ফাঁদে নিজেদের মৃত্যু আসতে পারতো। এই ধরনের আগুনের কৌশল প্রয়োগ করতে লাগে বিশাল কলিজা। অন্তত গতকালের ম্যাচ দেখে মনে হয়েছে সউদীর প্রতিটি ফুটবালারেরই তেমন দুঃসাহসের অধিকারী।
তবুও প্রথমার্ধ শেষে আর্জেন্টিনার চালকের আসনেই ছিল। ছয় মিনিটে কর্নার ঠেকাতে গিয়ে সউদীর রাইটব্যাক সৌদ আবদুলহামিদ বক্সের মধ্যে ফেলে দেন লিয়ান্দ্রো পারেদেসকে। ভিডিও রেফারির সাহায্যে পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে ৯২তম গোল করেন মেসি। এরপর ২২ মিনিটের সময় ৭ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী আবারও বল জালে জরালে তা অফসাইডে বাদ হয়। মিনিট পাচেক পর লাওতারো মার্তিনেজের গোলও একইভাবে বাতিল হয়। এই স্ট্রাইকারই ৩৫ মিনিটে পুনরায় গোল করেন এবং সেটাও অফসাইডের ফাঁদে পড়ে।
দ্বিতীয়ার্ধে কীভাবে অফসাইড এড়ানো যায়, সে পরিকল্পনা পাকা করে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। এমনটাই হয়তো আশা ছিল সমর্থকদের। দ্বিতীয়ার্ধে আর অফসাইড নিয়ে তটস্থ থাকতে হয়ওনি আল্বিসেলেস্তা ফরোয়ার্ডদের। তারা পরের ৪৫ মিনিট পুরুটাই দিশেহারা ছিল অঘটনের শিকার হওয়ার শঙ্কায়!
প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার গোলে একটি শটও নিতে না পারা সউদী আরবের রুদ্রমূর্তি ধারণ করল দ্বিতীয়ার্ধে! ৪৭ মিনিটে ফিরাস আল-বুরাইকানের পাস ধরে দলকে সমতায় নিয়ে আসেন সালেহ আল শেহরি। আর্জেন্টিনার জন্য অবিশ্বাস্য ব্যাপার, যাকে ধরে আর্জেন্টিনা রক্ষণের পরিকল্পনা সাজিয়েছিল, সেই ক্রিস্তিয়ান রোমেরোকেই রীতিমত বুলি করলো শেহরি। রোমেরর পায়ের নিচ দিয়ে ভলি করে জালে বল পাঠান সউদী ফরোয়ার্ড। গোল খেয়ে আর্জেন্টিনা হতভম্ব। আর গ্রীণ ফ্যালকন তখন যেন আরব জয় করে উড়ছে তাদের ভয়ডরহীন উদ্দাম ফুটবলে কোণঠাসা স্কালোনির দল।
প্রথম গোলের মিনিট ছয়েক পর সউদীর লেফট উইঙ্গার আল দাউসারি যে গোলটি করলেন, তা কেবল উঁচু শ্রেণীর উইঙ্গারদের কাছ থেকেই দেখা যায়। বক্সের বাঁ প্রান্তে বলের দখল পেয়ে দারুণ বল প্লেয়িং দক্ষতায় তিন আর্জেন্টাইন ফুটবলারকে ঘোল খাওয়ালেন দাউসারি। এরপর ডান পায়ে নেয়া তার অবিশ্বাস্য বাঁকানো শট জালে! হাত ছুঁইয়েও বল রুখতে পারেননি বাজপাখি খ্যাত আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেস। ১৯৭৪ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই দুই গোল হজম করল আর্জেন্টিনা। এই নিয়ে মোট ৬ বার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে হারের শিকার আলবিসেলেস্তারা। সালগুলো যথাক্রমে ১৯৩৪, ১৯৫৮, ১৯৭৪, ১৯৮২, ১৯৯০ ও ২০২২।
দুই গোল পেয়ে ডিফেন্সে মনোযগী হয় রেনার্ডের শীষ্যরা। আর্জেন্টাইদের সব প্রচেষ্টা রুখে দিয়েছে সউদী রক্ষণভাগ। এগিয়ে যাওয়ায় সউদীরাও সবাই মিলে রক্ষণে ঝাঁপিয়েছে, তাতে আর্জেন্টিনার জন্য গোলের রাস্তা বের করাই আরও কঠিন হয়ে গেছে। গোলকিপার আল ওয়াইস তো রীতিমতো চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। মেসি, মারিয়া,আলভারেজদের আক্রমণের সব ঢেউ তাতে আছড়ে পড়ল, তবে অতিক্রম করতে পারল না। আর্জেন্টিনার তৃতীয়বার বিশ্ব জয়ের মিশন শুরু হলো পচা শামুকে পা কেটে । সঙ্গী হলো ভয় ও অনিশ্চয়তা। কাগজে-কলমে গ্রুপের সবচেয়ে সহজ দলের কাছেই হেরে যাওয়া আর্জেন্টিনার পরের দুই ম্যাচ যে মেক্সিকো আর পোল্যান্ডের সঙ্গে। তবে আশার বাণীও আছে। একযুগ আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে, সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ১-০ ব্যবধানে হেরেও আসর সেরা হয়েছিল স্পেন। তাছাড়া ১৯৯০ সালেও প্রথম ম্যাচ হারার পর রানার্স-আপ হয়েছিল আকাশি-নীলরা।
ক্যাপশন : রেফারির বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে হতাশায় নুয়ে পড়লেন আর্জেন্টাইন ডি মারিয়া, উল্লাসে সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া জানাতে সেজদায় দুই সউদী ফুটবলার আল-মালকি ও আলবুরাকি। গতকাল লুসাইল স্টেডিয়ামে -টুইটার
আজকের খেলা
মরক্কো-ক্রোয়েশিয়া, বিকাল ৪টা
জাপান-জার্মানি, সন্ধ্যা ৭টা
স্পেন-কোস্টারিকা, রাত ১০টা
কানাডা-বেলজিয়াম, রাত ১টা
সরাসরি : বিটিভি/টি স্পোর্টস
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।