Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পানির কারণেই নববধূরাও পালায় বউ ছাড়াই থাকতে বাধ্য পুরুষরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার সুরগানা তালুকের ছোট গ্রাম দান্ডিচি বারি। সারাগ্রামে সবমিলিয়ে ৩০০ জনের বসবাস। কিন্তু ওই গ্রামে কোনো পুরুষের বিয়ে হলে আনন্দ করার বদলে আতঙ্কে কাটে সেই পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে গ্রামের বাকিদের। বিয়ে হওয়া সত্তে¡ও সুখী সাংসারিক জীবন কেমন হয় তা ওই গ্রামের অনেক পুরুষই জানে না। কারণ গ্রামটিতে বেশিরভাগ নারী বিয়ের পর বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তাই গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ বিয়ে করেও বউ ছাড়া থাকতে বাধ্য হন। কিন্তু এমনি এমনি এমনটি করে না। বিশেষ এক কারণে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি ছাড়ে ওই গ্রামের নববধ‚রা। দান্ডিচি বারি গ্রামের বাসিন্দারা সারা বছরই খাবার পানির সমস্যায় ভুগতে থাকে। তীব্র পানিকষ্টের মধ্যে থাকলেও যারা ওই গ্রামে বড় হয়েছে, তারা এই জীবনের সাথে অভ্যস্ত। কিন্তু সমস্যায় পড়ে তারা, যারা বাইরে থেকে এই গ্রামে আসে। আর তাদের মধ্যে অধিকাংশই নববিবাহিতা। শ্বশুরবাড়িতে কিছু দিন কাটানোর পর তারা সুপেয় পানির সঙ্কট নিয়ে এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে যে, ওই গ্রামে থাকতে চায় না। বিয়ে-স্বামী-শ্বশুরবাড়ি সব ফেলে ফিরে যেতে চায় বাপের বাড়ি। গ্রামটির বাসিন্দা গোবিন্দ ওয়াঘমারে এ রকমই একটি বিয়ের কথা শুনিয়েছেন, যা মাত্র দু’দিন টিকেছিল। গোবিন্দ বলেছেন, ২০১৪ সালে গ্রামের এক জনের বিয়ে হয়েছিল। সেই বিয়ে মাত্র দু’দিনের জন্য স্থায়ী হয়েছিল। বিয়ের দু’দিনের মাথায় স্বামীর ঘর ছাড়ে ওই বধ‚। এই ঘটনা লোকমুখে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। গোবিন্দ আরো জানান, পানি নিয়ে আসার জন্য ওই নববধ‚ গ্রামের বাকি গৃহবধ‚দের সাথে পাহাড়ের নীচে গিয়েছিল। এক দিন পানি আনতে গিয়েই বুঝে গিয়েছিল যে, এই গ্রামে বসবাস করা কতটা কঠিন। অনেকটা পথ পেরিয়ে পাহাড়ের নীচ পর্যন্ত গিয়ে সুপেয় পানি আনতে হয় গ্রামের নারীদের। ওই নববধ‚ বুঝে গিয়েছিল, ওই গ্রামে থাকলে তার জীবন কঠিন হয়ে যাবে। পালানো ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। তাই পানি আনতে গিয়ে সেখানেই কলসি রেখে ওই বধ‚ বাপের বাড়ি পালিয়ে গিয়েছিল। গোবিন্দ আরও জানিয়েছেন, এই গ্রামের নারীদের প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে অর্থাৎ মার্চ থেকে জুন মাস, দেড় কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পাহাড়ের নীচে প্রায় শুকিয়ে যাওয়া একটি নদী থেকে পানি আনতে হয়। শুকনো নদীর সামনে থাকা পাথরের ফাটল থেকে গ্রামের গৃহবধ‚দের পানি ভরতে হয়। নদীর ধারে থাকা পাথরের ফাটলে হাত ঢুকিয়ে একটি বাটি দিয়ে সেই পানি তুলে পাত্রে ভরতে হয় তাদের। ফাটলের ভিতরের পানি ফুরিয়ে গেলে সেই পানি আবার ভর্তি হওয়ার জন্য নারীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এর পর দু’টি করে পাত্র মাথায় চাপিয়ে তাদের আবার পাহাড় ডিঙিয়ে গ্রামে ফিরতে হয়। এবিপি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নববধূ

২৯ জানুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ