Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পীরগঞ্জে নববধূকে অপহরণ ও ইন্টারনেটে আপত্তিকর ছবি : ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১০:৫৯ পিএম, ১২ জুন, ২০১৮

এক নববধুকে অপহরন ও ইন্টারনেটে অপত্তিকর ছবি প্রকাশে সহায়তা করার অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে এক ইউপি চেয়ারম্যান সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গন্য করে ৬০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্তক্রমে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঠাকুরগাও সদর উপজেলার ভাউলারহাট রায়পুর গ্রামের বিষ্ণু প্রসাদ রায়ের ছেলে আপন চন্দ্র রায় তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সহায়তায় এবং তার সর্ম্পকীয় আতœীয় পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায়ের প্রশ্রয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বকুল চন্দ্র রায়ের কন্যা লক্ষী রানীকে সুযোগ পাইলেই কুপ্রস্তাব দিত। লক্ষী রানী বিষয়টি তার পিতা বকুল চন্দ্রকে জানায়। বকুল চন্দ্র বিষয়টি বিবাদীদের জানায়। কিন্তু বিবাদীরা এর কোন প্রতিকার করেনি। এতে আপন চন্দ্র আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এ অবস্থায় মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে গত ১১ মে বকুল চন্দ্র তার মেয়েকে সাগুনী গ্রামের রাজ মোহনের ছেলে গনেশ চন্দ্রের সাথে রেজি: মুলে বিয়ে দেন। বিয়ের দিন আপন চন্দ্র ও তার ভাই গোপাল চন্দ্র তাদের লোকজন নিয়ে বকুলের বাড়িতে এসে তার মেয়েকে অপহরণ করার চেষ্টা করলে গ্রামবাসী আপন ও গোপালকে আটক করে। এরুপ আর করবে না অঙ্গিকার করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায় পরে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এরপরও বিবাদীরা লক্ষী রানীকে অপহরণ করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। এরই মধ্যে গত ২১ মে রাতে বিবাদীরা লক্ষী রানীকে জোর পূর্বক একটি মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ঐদিনই ইউপি চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায় সাদা কাগজে বকুলের স্বাক্ষর নেয় এবং লক্ষী রানী হারিয়ে গেছে মর্মে পীরগঞ্জ থানায় জিডি করেন। পরবর্তীতে লক্ষীকে ফেরত দেওয়ার শর্তে আপনের ভাই যতিশ চন্দ্র ও ইউপি চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র গত ২৫ মে কন্যার পিতা বকুলের সাথে বিষয়টি সাদা কাগজে লিখিত ভাবে আপোষ করেন। কিন্তু আপোষের শর্তানুযায়ী লক্ষীকে ফেরত না দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র বিবাদীদের সাথে যোগসাজস করে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। এরই মধ্যে আপন চন্দ্র ভিকটিম লক্ষী রানীর সাথে জোর পূর্বক দৈহিক সম্পর্ক করে এবং এর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। এতে সামাজিক ভাবে হেয় হয় লক্ষীর পরিবার। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে গত ২ জুন বকুল চন্দ্র থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। পরে ৪ জুন ইউপি চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র, নায়ক আপন চন্দ্র, আপনের ভাই গোপল চন্দ্র ও যতিশ চন্দ্র এবং ভাবী সুমিত্রা রানীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল, ঠাকুরগাওয়ে মামলা করেন লক্ষীর পিতা বকুল চন্দ্র। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গন্য করে ৬০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্তক্রমে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
এ বিষয়ে সোমবার রাতে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায় জানান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়।
পীরগঞ্জ থানর ওসি আমিরুজ্জামান বলেন, আদালতে মামলা হয়েছে শুনেছি। এখনো পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ