মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জার্মান চ্যান্সেলার ওলাফ শোলৎজের সাথে বৈঠকের পর জার্মানির সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন।
বেইজিংয়ে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, ‘পরিবর্তিত এবং অস্থির এই বিশ্ব পরিস্থিতিতে’ দুই দেশের একসাথে কাজ করা উচিত।
শোলৎজ দুই দেশের মধ্যে ‘সমতার ভিত্তিতে অর্থনৈতিক যোগাযোগ ও প্রতিদানের সম্পর্ক গড়ে তোলার’ কথা বলেন।
তিনি চীনকে আরো অনুরোধ করেন ইউক্রেনে বেসামরিক মানুষের ওপর রাশিয়ার আক্রমণ বন্ধ করতে যেন মস্কোর ওপর তার প্রভাব খাটান।
তিন বছর পর জি-সেভেন গোষ্ঠির তিনিই প্রথম নেতা যিনি বেইজিং সফরে গেলেন।
কিন্তু শি তৃতীয় মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় নিজেকে বহাল করার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই শোলৎজের বেইজিং সফরের সিদ্ধান্ত নেয়ায় জার্মানির ভেতর এবং ইউরোপের অন্যত্র বিতর্ক আর সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বার্লিনের সরকারের মধ্যে এই সফর নিয়ে নজিরবিহীন ও তিক্ত বিতণ্ডা চলছে।
খবর প্রকাশ হয়েছে যে চীনের একটি কোম্পানি হামবুর্গ বন্দরের একটি শিপিং টার্মিনালে অর্থ লগ্নি করতে চাচ্ছে। সরকারের ছয়জন মন্ত্রী এই খবরে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
তারা যুক্তি দেখাচ্ছেন, এই চুক্তি হলে জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর চীনের বড় ধরনের প্রভাব তৈরি হবে। জার্মানির নিরাপত্তা বিভাগও এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু জার্মান চ্যান্সেলার এই চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে কার্যত অনড়। বলা হচ্ছে, তিনি চুক্তির একটা কাঠামো দিয়েছেন যাতে এই বিনিয়োগের অঙ্ক এবং বন্দরের যে অংশ চীনকে দেয়া হবে তার আকার কমিয়ে ২৪.৯% এ নামিয়ে এনেছেন, যাতে চীনের প্রভাব কম থাকে।
কিন্তু কেন এই চুক্তির ব্যাপারে শোলৎজ এতটা বদ্ধপরিকর সে ব্যাপারে কেউই নিশ্চিত নয়।
শোলৎজ একসময় হামবুর্গের মেয়র হিসাবে কাজ করেছেন এবং নগর কর্তৃপক্ষের সাথে তার সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। তার যুক্তি হল এই চুক্তির ফলে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিনিয়োগ আসবে।
তবে অনেক বিশ্লেষকের সন্দেহ চুক্তিটি সম্পাদনের ব্যাপারে শোলৎজ যেভাবে চাপ দিয়েছেন তার পেছনে একটা কারণ হলো, তিনি শি জিনপিংএর জন্য একটা ‘উপহার’ ছাড়া খালি হাতে বেইজিংয়ে যেতে চাননি। আর সে কারণেই অনেকে বিস্ময় এবং উষ্মা প্রকাশ করছেন।
আরো ক্ষোভ তৈরি হয়েছে জার্মান চ্যান্সেলার তার সাথে জার্মানির বড় বড় ব্যবসায়ীদের চীনে নিয়ে যাওয়ার কারণে।
তার পূর্বসুরী অ্যাঞ্জেলা মার্কেল কিন্তু একই ধারাতেই কাজ করতেন। তার নীতি ছিল ‘বাণিজ্যের মাধ্যমে পরিবর্তন’ অর্জন। তিনি বিশ্বাস করতেন চীন এবং রাশিয়ার মত দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারলে তা রাজনৈতিক সম্পর্ককেও প্রভাবিত ও উন্নত করবে।
তবে জার্মান চ্যান্সেলার এমন একটা সময় চীন সফরে গেলেন যখন কিছুদিন আগেই চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট শি তার ক্ষমতা আরো সুসংহত করেছেন এবং তাইওয়ানকে ঘিরে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
শোলৎজের জোট সরকারের শরিক দল গ্রিন পার্টির চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান রয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগেই গ্রিন পার্টির এমপি জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালিনা বেয়ারবক বেশ কঠোর ভাষায় শোলৎজকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে চীনের ব্যাপারে জার্মানির কৌশলের পুনর্বিন্যাসের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন।
দলের পক্ষ থেকে শোলৎজকে আরো মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে যে রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতার বিষয় থেকে শিক্ষা গ্রহণের কথা। কিন্তু তিনি এসব জটিল সমীকরণ সম্পর্কে অবহিত থাকলেও চীনের সাথে তার দেশের গভীর সম্পর্কের দিকটাও ভাবতে হচ্ছে।
চীনের ওপর নির্ভরতা
জার্মানিতে ১০ লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান চীনের সাথে সম্পর্কের ওপর নির্ভরশীল। যেমন একটা উদাহরন হলো ডেমলার গাড়ি। এই গাড়ি কোম্পানি তাদের উৎপাদিত গাড়ির এক তৃতীয়াংশই বিক্রি করে চীনে।
এ বছরের প্রথম ছয় মাসে জার্মান ব্যবসায়ীরা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় চীনে বিভিন্ন খাতে সবচেয়ে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছে।
শোলৎজ বেইজিংএ ১২ ঘণ্টার কম সময় কাটিয়েছেন। সফরের আগে তিনি বলেছিলেন এই সময়ের মধ্যে তিনি দেখতে চেয়েছেন চীনের সাথে কতটা সহযোগিতা সম্ভব। কারণ তিনি মনে করেন ‘বিশ্বের চীনকে প্রয়োজন’।
‘চীন যদি বদলায়, তাহলে চীনের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিরও বদল ঘটা উচিত,’ তিনি বলেন।
সূত্র : বিবিসি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।