পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শরৎ পেরিয়ে হেমন্তের শুরু হয়েছে। চলছে কার্তিক মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ। এরই মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীত তার আগমনী বার্তা জানিয়ে দিচ্ছে। প্রতিদিন ভোর রাতে প্রচণ্ড শীত অনুভব করছেন মানুষ। দিনাজপুর, নিলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম জেলার সকালে ঘাসের উপর শিশির বিন্দু দেখা যায়। কোথাও কোথাও শীতের কারণে সকালে উত্তপ্ত রক্তিম সূর্যটাও নিস্তেজ দেখা যায়। গাছ-পালা, ফুলফল, সবুজ ঘাস ও ফসলের মাঠও প্রতিদিন সকালে শিশিরাসিক্ত। আবার কাক ডাকা ভোর ও সন্ধ্যা নামার পরপরই প্রকৃতিকে যেন গ্রাস করছে কুয়াশার চাদর। মোট কথা উত্তরে হেমন্তের হাত ধরে আসছে শীত।
কুড়িগ্রামের একটি বিমা কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানালেন, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর আশপাশের গ্রামগুলোতে সকালে বেশ শীত অনুভূত হয়। কুয়াশার কারণে নদীর তীরে দাঁড়ালের দূর-দূরান্তের কিছুই দেখা যায় না। সকালে রাস্তায় বা ঘাসের উপর দিয়ে হেঁটে গেলে বোঝা যায় শিশিরে পা ভিজে যাচ্ছে। তবে শীতের সবজির চাষাবাদ এখনো শুরু হয়নি। আগাম ধান কাটা হলেই আলু রোপণ শুরু হবে।
ভৌগলিকভাবে হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়, লালমনির হাট, কুড়িগ্রামে প্রতিবছর শীতের আমেজ শুরু হয় একটু আগেই। মৌসুমের বেশিরভাগ সময়ই ওই জেলাগুলোতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে। অন্যান্য জেলার তুলনায় শীতের অনুভূতিও হয় বেশ তীব্র। এ বছরও আগে ভাগেই নামছে এসব জেলায় শীত। আর তা জানান দিচ্ছে প্রকৃতি। দিনের বেলায় বেশ গরম থাকলেও রাত থেকেই শুরু হয় কুয়াশা পড়া। রাত বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে কুয়াশার গাঢ়ত্ব। সকাল অবধি থাকে এ কুয়াশা। রাত ও ভোরের এই কুয়াশা পথঘাটে দৃষ্টিসীমা হরণ করছে। ঘাস এবং ফসলের ডোগায় জমছে শিশির বিন্দু।
পঞ্চগড় : দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। হিমালয় পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায় এ জেলায় শীতের আগমন আগাম ঘটে সবার আগে। এখনই সন্ধ্যা শুরু হলেই উত্তরের হিমেল হাওয়ায় জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। অনুভূতি হচ্ছে শীত। আর মধ্য রাতের পর থেকেই সকাল পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে গোটা জেলা। কুয়াশায় শিশিরে ভেজা থাকে লতাপাতা। স্থানীয়রা জানায়, এবার বর্ষা শেষ না হতেই শীতের আভাস। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের আমেজ অনুভব হচ্ছে। মধ্য রাতে কাঁথা গায়ে নিয়ে থাকতে হয়। তবে গতবারের তুলনায় এবার আগাম শীত পড়তে শুরু করেছে।
এ জেলায় শীত যেমন আগে আসে, তেমনি শীত পরে যায়। এদিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানায়, আগাম শীতের অনুভূতির কারণে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। তবে নভেম্বরের শুরুতে শীতের মাত্রা আরও বাড়বে বলে জানায় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা।
পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষক কর্মকর্তা আরো বলেন, হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় শীতের আগমন ঘটে। আগাম শীতের অনুভূতির কারণে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। প্রতিদিন গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠানামা করছে। আবহাওয়া পর্যবেক্ষকের ভাষ্য, দেশে ডিসেম্বরের দিকে শুরু হয় শীতের তীব্রতা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো. রোকনুজ্জামান বলেন, এ জেলায় শীত যেমন আগে শুরু হয়, তেমনি বিদায়ও হয় শেষে। এবছরও শীত অনুভূত হওয়া শুরু হয়েছে। এখন থেকে তাপমাত্রাও কমা শুরু হবে এবং তীব্রতা বাড়বে শীতের।
গতকালও রংপুর বিভাগীয় শহরের আশপাশ কুয়াশায় ঢাকা দেখা যায়। কয়েকদিন ধরে খানিকটা বৈরী আবহাওয়া। দিনের বেলা গরম থাকলেও বিকেল থেকে শীত শীত অনুভূত হচ্ছে। বাসাবাড়িতে রাতে বৈদ্যুতিক পাখা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। দিনের বেলা চালু থাকলেও থেমে থেমে পাখা বন্ধ করতে হয়। শহরের মাহিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মোতালেব মিয়া জানান, হঠাৎ ঠান্ডাটা পড়ল মনে হয়। রাতে ফ্যান কখনো বন্ধ, কখনো চালু থাকে। বন্ধ করলে গরম লাগে কিছুটা, আবার চালু করলে ঠান্ডা লাগে। কয়াশার কারণে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে; সকাল আটটার দিকেও ভোরের আমেজ। এর মধ্যে চার থেকে পাঁচ দিন ধরে রাতে কুয়াশা ঝরছে। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা। সেই সঙ্গে উত্তরের হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা মৃদু ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে। পথে সাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকদের গায়ে গরম কাপড় জড়িয়ে গাড়ি চালাতে দেখা যায়।
এখনো ধান কাটা শুরু হয়নি। তবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত ধানকাটার সময় শীত পড়ে। এখনো ধান উঠতে অনেক সময় আছে। এবার একটু আগে শীত আসবে। রাতে কুয়াশা পড়ছে।’
রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, রংপুরে সকালে সূর্য না ওঠা এবং হালকা বাতাস থাকায় শীত অনুভূত হচ্ছে। রংপুরের স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, রাতে শীতের কাতা গায় দিয়েই ঘুমাতে হচ্ছে। তবে কুড়িগ্রাম, লালমনির হাট ও পঞ্চগড়ের মানুষকে গরম লেপ গায়ে দিয়েই ঘুমাতে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।