গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর শাহজাহানপুর, মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ এবং কমলাপুর এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি এবং ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা হলো- মো. রুবেল (১৯), মো. আরমান (২১), মো. তুহিন মোল্লা (৩৫), মো. শামীম শেখ (২৩), মো. শান্ত (১৯) মো. বাবু মিয়া (৩২), মো. সোহাগ (২৮), মো. আরশেদ (২৫), মো. মিলন (২৫), মো. সাকিব (২০), মো. সাগর (২২), মো. বাবু হোসেন গাজী (২৬), মো. আকাশ (২২), মো. ইমরান (২২), সাগর (২৮), শান্ত (২২), রিফাত উদ্দিন (২৩), মো. সুজন (২২), সুজন (২৩), মো. ওয়াসিম আকরাম (২২), ইব্রাহিম (২২), আরিফ হোসেন (২৭), মো. সুমন (২২), মো. কবির হোসেন (৩৫), কামরুল হাসান (৩৮) রকি ব্যাপারী (৩২) ও সোহাগ (৩২)।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১টি সুইচ গিয়ার, ৮টি চাকু, ২টি ক্ষুর, ৯টি ব্লেড, ৩টি এন্টিকাটার, ৩টি বিষাক্ত মলমের কৌটা, ২ টি বিষাক্ত স্প্রে, ৭টি মোবাইলফোন, ২টি সীমকার্ড, ৫টি মানিব্যাগ, ২টি হাত ঘড়ি, ১টি হেডফোন এবং ৩ হাজার ৩১৩ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
র্যাব জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারী ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে জখমপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন। এসব ভ‚ক্তভোগীদের বেশির ভাগই কোন আইন-শৃংখলা বাহিনীর দ্বারস্থ হয় না। ফলে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের প্রায় সবাই মাদকাসক্ত। সাম্প্রতিককালে ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়টি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। র্যাব উক্ত ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসামীরা রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারী সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। তারপর সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদেরকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং বিষাক্ত চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে।
উক্ত বিষাক্ত পানীয় সেবন করার বা বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ নেয়ার পর ওই যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এসব ছিনতাইকারী সদস্যদের ভূক্তভোগীরা খুব কম ক্ষেত্রেই সনাক্ত করতে পারেন। ফলে এসব ছিনতাইকারী সদস্যরা নির্বিঘ্নে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
র্যাব-৩ অধিনায়ক জানান, সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে উৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা।
লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এসব ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার ফলে পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে আসা যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে স্বস্তির সাথে বাড়ী ফিরে যেতে পারেন এলক্ষ্য নিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।