Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জেঁকে বসছে শীত

| প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাজশাহীতে পারদ ৯.৮ ডিগ্রিতে      
চট্টগ্রাম ব্যুরো : অগ্রহায়ণের শেষ প্রান্তে এসেই বাংলাদেশের আবহাওয়ামন্ডলে শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাপক পারদ ১০ ডিগ্রির নিচে থাকলে তা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ৩১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড় ‘ভারদাহ’ গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ আরও দুর্বল হয়ে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাডু উপকূলের চেন্নাইয়ের নিকট দিয়ে অতিক্রম করে গেছে। সপ্তাহ ধরে অবস্থানরত ঝড়টি কেটে যেতে না যেতেই বাংলাদেশে শীতের আমেজ বেড়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। ভোর থেকে সকালে নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী পাঁচ দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস তথা শীতের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে।  
দক্ষিণাঞ্চলে বিলম্বে আগমন
নাছিম উল আলম জানান, একটু দেরী করে হলেও শীত আসছে দক্ষিণাঞ্চলে। তবে তাপমাত্রার পারদ এখনো স্বাভাবিকের কিছুটা ওপরে। চলতি মাসে বরিশাল অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৩ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার কথা।
সেখানে মাসের প্রায় অর্ধেক পার করার পরও তাপমাত্রার পারদ এখনো ১৪ ডিগ্রির কাছে পীঠে। গতকাল বরিশালে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চলতি মাসে ২৬.৫ ডিগ্রি থাকার কথা হলেও তা এখনো অন্তত ২ ডিগ্রি বেশি।
আন্দামান সাগর সন্নিহিত ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এতদিন উত্তরের হাওয়া বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় শীত কিছুটা দেরি করেই দেশের সীমায় প্রবেশ করছে। নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে গতরাতের মধ্যেই ভারতের চেন্নাই এর নিকট দিয়ে উত্তর চেন্নাই ও দক্ষিণ অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করার কথা। ঘূর্ণিঝড়টি সরে গেলে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলেও শীতের তীব্রতা আরো বাড়তে পারে। তবে উত্তরবঙ্গে ইতোমধ্যে শীত জেকে বসেছে। গতকাল দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে, ৯.৮ ডিগ্রি  সেলসিয়াস। ইতোমধ্যে পদ্মা ও মেঘনা অববাহিকাসহ এর শাখা নদ-নদীগুলো শেষ রাত থেকে মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যেতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহেই পর পর দুদিন ঘন কুাশায় দেশের প্রধান ফেরি রুটে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ৩Ñ৫ঘণ্টা পর্যন্ত যানবাহন পারাপার বন্ধ ছিল।
আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘমেয়াদী বুলেটিনে চলতি মাসের মধ্যভাগ তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবার কথা বলা হয়েছে। এ মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ১-২টি মৃদু  এবং ৬Ñ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝারী শৈতপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। পাশাপাশি শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা ও মাঝারী ধরনের কুয়াশার ফলে নৌ যোগাযোগ বিপর্যস্ত হবার আশঙ্কার কথাও জানান হয়েছে।
বিলম্বে হলেও শীত পড়তে শুরু করায় দক্ষিণাঞ্চলে শীতকালীন সবজির ফলনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছেন কৃষিবীদরা। পাশাপাশি রবি ফসলের জন্যও তা যথেষ্ঠ অনুকূল হবে। বোরো ধানের বীজতলা তৈরিসহ রোপণের জমির জন্যও এ আবহাওয়া যথেষ্ঠ উপযোগী বলে মনে করছেন কৃষিবীদগণ।
গত কয়েকদিন ধরেই শেষ রাত থেকে মাঝারী কুয়াশায় মেঘনা অববাহিকা সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল ঢেকে যাচ্ছে। ফলে গড় বাষ্পীভবনসহ দৈনিক গড় সূর্য কিরণকালও যথেষ্ঠ হ্রাস পাচ্ছে।  পাশাপাশি তাপমাত্রার পারদ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়ায় ফলে শিশু ও বয়স্কদের ঠা-াজনিত নানা ধরনের রোগবলাইও বিস্তার লাভ করছে। বিশষজ্ঞ চিকিৎসরা এ সময়ে শিশু ও বয়স্কদের যতটা সম্ভব ঠা-া এড়িয়ে চলাসহ সম্ভব হলে গায়ে সকালের রোদ লাগানোরও পরামর্শ দিয়েছেন।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ’ভারদাহ’ আরো পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ১৩.২ক্ক উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮১.৬ক্ক পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছিল।  প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। পায়রাসহ দেশের সবকটি সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণে নিষেধ করেছে আবহাওয়া বিভাগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শীত

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ