Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঋষি কি সত্যিই ভারতীয় বংশোদ্ভূত? দাদা-দাদি পাকিস্তানের গুজরানওয়ালা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ১০:১৫ এএম

যুক্তরাজ্যের ৫৭তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঋষি সুনাক। তিনি ব্রিটেনের চলতি বছর দায়িত্ব নেওয়া তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী। ৪২ বছর বয়সী ঋষি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক কে এই ঋষি?

যশবীর এবং ঊষা সুনাকের কোল আলোকিত করে ১২ মে ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন শহরে জন্ম নেন ঋষি। তিন ভাইবোনের মধ্যে ঋষি বড়। পিতা যশবীরের জন্ম কেনিয়ার। মাতা ঊষার জন্ম বর্তমান তানজানিয়ায়। যশবীর পেশায় চিকিৎসক এবং ঊষা ছিলেন ফার্মাসিস্ট যিনি স্থানীয় ফার্মেসি চালাতেন। অনেকেই ধারণা করছেন ঋষী সুনাক ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

উইকিপিডিয়া বলছে ‘ঋষির দাদা-দাদি ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬০-এর দশকে তাদের সন্তানদের সঙ্গে পূর্ব আফ্রিকা থেকে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন।’

এ দিকে সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ গবেষণা বিষয়ের এক অধ্যাপক টুইটারে দাবি করে লিখেছেন: ‘ঋষি সুনাকের দাদা-দাদি পাকিস্তানের গুজরানওয়ালা, ঋষির পিতামাতা নাইরোবি, কেনিয়ার। ঋষির জন্ম যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন শহরে।’ ফলে ঋষি আসলেই কোন দেশের বংশোদ্ভূত তা নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।

ঋষি উইনচেস্টার কলেজে পড়েছেন, পরে অক্সফোর্ডের লিঙ্কন কলেজে দর্শন, রাজনীতি এবং অর্থনীতি পড়েন এবং ফুলব্রাইট স্টুডেন্ট হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ার স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। এখানে পড়ার সময় তার সঙ্গে অক্ষতা মূর্তির পরিচয়।

যিনি ভারতীয় বিলিয়নারি এন আর নারায়ণ মূর্তির মেয়ে। জানা যায় ভারতের বিল গেটসখ্যাত এই নারায়ণ মূর্তি সফটওয়্যার কোম্পানি ইনফোসিস-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং এই প্রতিষ্ঠানের ০.৯১ শতাংশ শেয়ার তার মেয়ের নামে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ব্যাঙ্গালুরুতে ঋষি ও অক্ষতার বিয়ে হয়। ২০২২ সালের তথ্যানুযায়ী ঋষি ও অক্ষতা ব্রিটেনের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ২২২তম হন এবং তারা প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক। বর্তমানে ঋষির দুই মেয়ে রয়েছে- কৃষ্ণা ও আনুশকা।

ঋষি মাত্র সাত বছরে এমপি থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। যা বর্তমান সময়ে যে কোনো প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে দ্রুত। ঋষির শীর্ষে যাওয়ার এই পথ সুগম ছিলো না। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হন ঋষি। এরপর প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে থাকাকালীন তিনি লোকাল গভর্নমেন্ট’র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৯ সালে বরিস প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সরাসরি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন।

৫ সেপ্টেম্বর টরি সদস্যদের ভোটে লিজ ট্রাসের কাছে হেরে তিনি রাজনীতি থেকে দাঁড়াবেন বলে আশা করা হয়েছিল৷ কিন্তু ট্রাসের অর্থনৈতিক নীতি ও কর্মসূচি নিয়ে তার প্রশাসন ও কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে যখন নজিরবিহীন তোলপাড় চলছিল তখন ঋষি গ্রীষ্মকালীন প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

কনজারভেটিভ পার্টির নীতি-নির্ধারণী কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল কেউ পার্টির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদে নির্বাচন করতে চাইলে তাকে কমপক্ষে ১০০ টোরি এমপির সমর্থন পেতে হবে। এ ঘোষণার পর ঋষি সুনাক, পেনি মর্ডান্ট ও বরিস জনসনের নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত ১০০ জন টোরি এমপির সমর্থন পেতে হতো তিনজনের একজনকে। তবে রোববার স্থানীয় সময় রাতে নির্বাচন থেকে সরে যান বরিস জনসন। এরপর শুধু ঋষি সুনাক ও পেনি মর্ডান্ট লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু সোমবার পেনি মর্ডান্টও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ঋষি সুনাক।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ঋষী বলেছেন, তার আশা ‘উচ্চ উৎপাদনশীল যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি’ বাস্তবায়ন করা এবং জনগণের নিম্ন কর আবারও ফিরিয়ে আনবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাজ্যে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ