নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
যে ফরম্যাটেই হোক পাকিস্তান-ভারত ম্যাচ মানেই রোমাঞ্চের ছড়াছড়ি। উত্তেজনার পারদ ২২ গজের এই ক্রিকেটীয় সীমানা ছাড়িয়ে যায় গোটা বিশ^ময়। ম্যাচ শেষেও যার রেশ থেকে যায়- দিয়ে যায় বিনোদনের খোরাক, আলোচনার রসদ আর প্রায়ই বিতর্কের উষ্কানি। এই যেমন গতপরশু টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের ম্যাটিই যার জ¦লন্ত প্রমাণ। অস্ট্রেলিয়ায় আসরের সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। সাদামাটা এক ম্যাচ শেষ ওভারে রূফ নেয় রোমাঞ্চের খনিতে। ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টির নিখাদ বিনোদনের পরও যেখানে ছিল বিনোদনের সবচাইতে বড় এক খোরাকও।
শুরুটা বেশ কিছু প্রশ্ন দিয়েই করা যায়। মেলবোর্নে শেষ ওভারে মোহাম্মদ নেওয়াজের বলটি কি ‘নো’ ছিল, বিরাট কোহলি ফ্রি হিট বলে বোল্ড হওয়ার পর দৌড়ে ৩ রান নিলেন কীভাবে? সমর্থকেরা শুধু নন, নো বল আর ফ্রি হিট নিয়ে এই প্রশ্নগুলো তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ব্র্যাড হগ, পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতারও। সেই সাথে দুই ফিল্ড আম্পায়ারা রড টাকার আর মারাইস এরাসমাসের সমালোচনাও করেছেন তারা। কেউ কেউ এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে রোহিত শর্মার আউট হওয়া বলে নো ডাকার বিষয়টিও মনে করে দিয়েছেন। সেই আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে রুবেল হোসেনের একটি ‘নো বল’ ঘিরে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল। টিভি রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছিল, সেটি নো বল নয়। ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত হেরে যায় বাংলাদেশ। এবার আরো একটি বিশ্বকাপে সৃষ্টি হয় ‘নো বল’ বিতর্ক। এবার শিকার পাকিস্তান।
প্রথম ঘটনা ছিল ২০তম ওভারের তৃতীয় বলের পর। ভারতের তখন ৩ বলে প্রয়োজন ১৩ রান। নেওয়াজের উঁচুতে আসা ফুলটসকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারেন কোহলি। ছক্কার সঙ্গে আম্পায়ারের নো বলের সংকেতে ওই বলেই আসে ৭ রান। তবে ‘নো’ বলের সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি বাবর আজম। আম্পায়ারদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে এগিয়ে যান পাকিস্তান অধিনায়ক। তবে ‘নো’ বলের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। এমন একটি সময়ে আম্পায়ার নো ডাকলেন, যখন সময়টা খুবই স্পর্শকাতর। আম্পায়ারদের যখন আরও বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়া প্রয়োজন ছিল। অস্ট্রেলিয়ান সাবেক ক্রিকেটার ব্র্যাড হগই প্রশ্নটা বড় করে তুলেছেন। তিনি টুইটার লিখেছেন, ‘কেন নো বলটি পুনরায় বিবেচনা করা হলো না? কেন কোহলি বোল্ড হওয়ার পর বলটি ডেড হয়নি?’ ব্র্যাড হগের এই টুইট ঘিরেই এখন বিতর্কটা সবচেয়ে বেশি মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে।
যে বলে নো ডাকা হলো, কোহলি তখন ক্রিজ জেড়ে বেরিয়ে এসে ছক্কা হাঁকান। বলা হচ্ছে, ব্যাটার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসলে তখন কোনোভাবেই উচ্চতাসূচক (নওয়াজের বলকে যে কারণে নো ডাকা হলো) নো বল দেয়া যায় না। আইসিসির ক্রিকেট নিয়মে এমন ধরনের কোনো নীতি লেখা নেই। অথচ, আম্পায়ার দিব্যি নো ডেকে দিলেন। সেটিকে আবার চেকও করলেন না। অথচ, ওই বল থেকে সাত রান যোগ হলো ভারতের ইনিংসে। আইসিসির রুল বুকের ৪১.৭.১ ধারা বলছে, ‘যদি কোনো ডেলিভারি পিচ না করে পপিং ক্রিজে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা স্ট্রাইকারের কোমর উচ্চতার ওপরে ওঠে, আম্পায়ার তাৎক্ষণিকভাবে “নো” বলের সংকেত দেবেন।’ রিপ্লেতে দেখা গেছে, শট খেলতে কিছুটা এগিয়ে গেলেও কোহলির পেছনের পা পপিং ক্রিজে ছিল। এখানেই আম্পায়ারের পক্ষপাতমূলক আচরণ খুঁজে পেয়েছেন সোয়েব। পরপর দুটি টুইটে পাকিস্তানি স্পিডস্টার সমালোচনা করেন আম্পায়ারের। তিনি খিলেছেন, ‘নো বল ডাকার সময় অবশ্যই আম্পারকে সেই নো বল চেক করা কিংবা ভালোভাবে দেখা উচিৎ। অথচ এই বলটাকে চেক করা হলো না।’ পরের টুইটে লিখেছেন, ‘আম্পায়ার ভাইয়েরা, আজ রাতে ভালোভাবে চিন্তা করো।’
আরফা পিরোজ জ্যাক নামে পাকিস্তানের জিও নিউজের একজন সাংবাদিক পোস্ট করেছেন, ‘পাকিস্তানের উচিৎ নো বল ইস্যুটা নিয়ে কথা বলা। আইসিসি রেফারির সামনেই আম্পায়াররা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এত বাজে আম্পায়ারিং দিয়ে ভারত কখনোই একটি স্বচ্ছ জয় নিয়ে যেতে পারলো না।’ জন ব্রুক নামে এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘যখন ক্রিজের বাইরে এক পা চলে যায়, তখন সেটা কখনোই নো বল হয় না। অবশ্যই এটা অসম্মানজনক একটি সিদ্ধান্ত এবং একটি বড় অপরাধ।’ জেমস উইলিয়ামস নামে একজন লিখেছেন, ‘ক্রিজের বাইরে একটি পা চলে গেলে সেটা কখনোই নো বল হয় না। এ ধরনের মুহূর্তগুলোতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে থার্ড আম্পায়ার দিয়ে চেক করে নেয়া জরুরি।’
অনেক পাকিস্তান সমর্থকও নো বলের সিদ্ধান্ত নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। টুইটারে এক পাকিস্তান সমর্থক লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারিং অনেকটাই ভারতের পক্ষে হয়েছে। এমন অনেক বিতর্কিত ঘটনা আছে, যখন আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ভারতের পক্ষে গেছে।’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘এটা নো বল ছিল না। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত খুবই পক্ষপাতিত্বমূলক ছিল। এটা অন্যায়।’ শুধু তাই নয়, বিতর্কটা আরও বেশি হয়েছে, পরের বলে (একটি ওয়াইড দেয়ার পর)। ‘নো’ বলের সূত্র ধরে পরের বলটি ছিল ফ্রি হিট। এই বলে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি কোহলি। বল আঘাত হানে স্টাম্পে- বোল্ড। নাটকীয়তার অবশ্য সেখানেই শেষ নয়। স্টাম্পে লেগে বল চলে যায় থার্ড ম্যানে, সেখান থেকে শাহিন শাহ আফ্রিদি ফিল্ডিং করে পাঠানোর আগেই দৌড়ে ৩ রান নেন কোহলি-কার্তিক। যদিও পাকিস্তান তখন ওই বলটিকে ডেড বল দাবি করেছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।