গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
গাজীপুরের টঙ্গী এবং রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ছিনতাইকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা শরীফ হোসেনসহ (২২) ৫ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব বলছে, শরীফ উত্তরা আজমপুর থেকে আব্দুল্লাপুর বাসস্ট্যান্ড হয়ে টঙ্গি স্টেশন রোড পর্যন্ত সড়কের ছিনতাইকারী চক্রের দলনেতা। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছিচকে চোর ও ছিনতাইকারী চক্র চলন্ত গাড়ি থেকে থাবা দিয়ে কিংবা অন্ধকারে নিরীহ পথচারীদের জিম্মি করে যেসব মোবাইল ফোন ছিনতাই করতো সে সেই মোবাইলগুলো তার কাছে জমা করত। একদিনে শরীফ সর্বোচ্চ ৫০টি পর্যন্ত মোবাইল ফোন ছিনতাই করতে পারে সে।
শুক্রবার রাজধানীর উত্তরায় র্যাব ১ এর অফিস কম্পাউন্ডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফট্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
র্যাব জানায়, রাজধানীর উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় ছিনতাই চক্রের তৎপরতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা থেকে অন্যান্য জেলা অভিমুখে যাতায়াতকারীদের এক বিশাল অংশ আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা দিয়ে ভ্রমন করার সুযোগে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র নিরীহ পথচারীদের সর্বস্ব ছিনতাই করছে। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা নিরীহ মানুষকে অস্ত্রাঘাত করে, প্রাইভেটকার, মোটর সাইকেল, গাড়ী, টাকা পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার ইত্যাদি ছিনতাই করে জন জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে।
বিষয়টি র্যাবের নজরে এলে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং ওইসব এলাকায় ছিনতাই এর সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রকে সনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব এর অধিনায়ক জানায়, বৃহস্পতিবার র্যাব-১ এর আভিযানে ছিনতাইকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা মো. শরীফ হোসেন (২২), ও সদস্য আব্দুল্লাহ বাবু (২৩), মো. শ্যামল হোসেন ওরফে রাব্বিকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত ১টি মোটর সাইকেল, ১০টি মোবাইল ফোন, ১টি হাত ঘড়ি এবং ২৫ হাজার ৬৩৫ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যমতে আজ ভোর রাতে গাজীপুর টঙ্গী বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য নাছির রাজ (৩০) ও সাজেদুল আলম ওরফে শাওনকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত ৪৯টি মোবাইল, ২টি সিপিউ, ২টি মনিটর, ২ টি মাউস, ২টি কি-বোর্ড, ২টি ক্যাবল, ১টি সিসি ক্যামেরা, ১টি ডিভিআর, ১ টি চার্জার, ১ টি হাত ঘড়ি, ২ টি ভিসা কার্ড এবং ৩ হাজার ৭৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
লেফট্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানায়, গ্রেপ্তার শরীফ হোসেন এ চক্রের অন্যতম মূলহোতা ও মাষ্টারমাইন্ড। সে উত্তরা আজমপুর থেকে আব্দুল্লাপুর বাসস্ট্যান্ড হয়ে টঙ্গি স্টেশন রোড পর্যন্ত সড়কের ছিনতাইকারী চক্রের দলনেতা। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছিচকে চোর ও ছিনতাইকারী চক্র চলন্ত গাড়ি থেকে থাবা দিয়ে কিংবা অন্ধকারে নিরীহ পথচারীদের জিম্মি করে যেসব মোবাইল ফোন ছিনতাই করতো সে সেই মোবাইলগুলো তার কাছে জমা করত। সে স্বল্পমূল্যে এসব মোবাইল কিনে অপর দুই আসামী আব্দুল্লাহ বাবু ও শ্যামলের মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করত। গত ৫ বছর ধরে এ কাজের সাথে জড়িত সে। একদিনে শরীফ সর্বোচ্চ ৫০টি পর্যন্ত মোবাইল ফোন সংগ্রহ করার রেকর্ড করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা য়ায়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, আসামী আব্দুল্লাহ বাবু ও শ্যামল ছিনতাইকৃত মোবাইল ও অন্যান্য মালামাল বিক্রির কাজে জড়িত। তারা শরীফ এবং গত ৫ অক্টোবর র্যাব-১ কর্তৃক গ্রেপ্তার আরেকটি ছিনতাইকারী চক্রের অন্যতম হোতা জয় এর কাছ থেকে চোরাই মোবাইল সংগ্রহ করে বিক্রির কাজ করত। তারা বিভিন্ন দোকান, অনলাইন প্লাটফর্ম ও বিভিন্ন জনের কাছে খুচরা হিসেবে ও এসব মোবাইল বিক্রি করত। তারা ছিনতাই করা মোবাইল বাজারমূল্যের চাইতে প্রায় অর্ধেকেরও কম দামে বিক্রি করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করত।
তিনি আরও বলেন, নাছির ও শাওন মোবাইল ইঞ্জিনিয়ার। টঙ্গি বাজারে নাছিরের একটি মোবাইল মেরামতের দোকান রয়েছে। সে উক্ত দোকানে বৈধ ব্যবসার আড়ালে চোরাই মোবাইল এর লক খোলা ও পরিবর্তনের কাজ করে থাকে। সে ৩ বছর ধরে নিজস্ব দোকানে ব্যবসা করে আসছে। নিজের দোকানে ব্যবসা শুরু করার আগে নাছির অন্য একটি দোকানের কর্মচারী ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
গ্রেপ্তার শাওন একটি মোবাইল মেরামত দোকানের কর্মচারী। সে ৫০০/১০০০ টাকার বিনিময়ে ছিনতাই করা মোবাইলের লক খোলা এবং ও পরিবর্তনের কাজ করত। সে গত ৩ বছর ধরে এ কাজ করে আসছে।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লেফট্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানায়, গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার ছিনতাইকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা শরীফ। তার সহযোগী ৪ জনসহ চক্রের প্রতিটি সদস্য ওই এলাকায় তার নির্দেশে ছিনতাইয়ের মালামাল বিক্রির কাজ করে থাকে। তারা প্রত্যেকে বৈধ পেশার আড়ালে ছিনতাইকারী চক্রের মদদাতা ও আশ্রয়দাতা হিসেবে ভূমিকা পালন করছে বলেও জানায় র্যাবের এই কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।