মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তান তাহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান অবশেষে নির্বাচনের ঘোষণা দিতে সরকারকে চাপ দেয়ার জন্য আগামীকাল শনিবার থেকে একটি নতুন আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানীর দিকে পিটিআইয়ের লং মার্চকে সমর্থনকারী প্রদেশগুলোতে গভর্নর শাসন জারির হুমকি দিয়েছেন এবং ডি-চকে পৌঁছানোর চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন। এদিকে, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) গতকাল ইমরান খানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যক্রম স্থগিত করেছে, যখন তিনি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জেবা চৌধুরীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এর আগেই সরকারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আগাম নির্বাচন ঘোষণা করার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। ফলে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেয়া ও লং মার্চের সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত কিছু ছিল না। এ প্রেক্ষিতে ইসলামাবাদ পুলিশ মঙ্গলবার থেকেই রাজধানীর রেড জোনের প্রবেশ এবং প্রস্থান পয়েন্টে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। তবে পুলিশ একটি টুইটে দাবি করেছে যে, নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে কারণ পাঞ্জাব থেকে ‘কিছু লোক’ তাদের রাজনৈতিক দাবি মেনে নেয়ার জন্য ইসলামাবাদের দিকে রওনা হয়েছিল।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট লাহোর রেজিস্ট্রির বাইরে একটি সম্মেলনে দেয়া বক্তৃতায় ইমরান খান জাতিকে দেশে ‘প্রকৃত স্বাধীনতা’র জন্য তার আন্দোলনে যোগ দেয়ার আবেদন করেছিলেন। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি দাবি করেছেন, বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পাকিস্তানের জন্য শ্রীলঙ্কার মতো অশান্তির পূর্বাভাস দিয়েছে। অর্থনীতি সঙ্কুচিত হওয়ার সাথে সাথে বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি আকাশচুম্বী হওয়ায় দেশ সামাজিক অস্থিরতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক ‘অস্থিরতা’ থেকে বের করে আনার জন্য তার পরিকল্পনা তুলে ধরে পিটিআই প্রধান বলেছিলেন যে, বিদেশী পাকিস্তানিদের অর্ধেক এখানে বিনিয়োগ করলে দেশটির আইএমএফের অর্থের প্রয়োজন হবে না। লন্ডনে তার ভাই নওয়াজের সাথে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের বৈঠক এবং সেনাপ্রধানের নিয়োগের বিষয়ে কথিত আলোচনার বিষয়ে খোঁচা দিয়ে ইমরান খান প্রশ্ন করেছিলেন, ‘এই লোকেরা কি জাতীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে? শেয়ালের নেতৃত্বে সিংহের বাহিনী হেরে যাবে, কিন্তু সিংহের নেতৃত্বে শেয়ালের বাহিনী জিতবে।’
এদিকে, গত ২০ আগস্ট ইসলামাবাদের এফ-৯ পার্কে একটি জনসভায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় পিটিআই নেতা শাহবাজ গিলের রিমান্ডের অনুমোদনকারী বিচারক জেবা চৌধুরীর বিরুদ্ধে কট‚ক্তি করার অভিযোগে আইএইচসি ইমরানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। আগের শুনানিতে, আইএইচসি মামলায় পিটিআই প্রধানের সংশোধিত প্রতিক্রিয়াকে ‘অসন্তোষজনক’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং গতকাল আবার শুনানির ঘোষণা দিয়েছিল।
এ দিন আইএইচসি প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহর নেতৃত্বে এবং বিচারপতি মহসিন আখতার কায়ানি, বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেব, বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গিরি এবং বিচারপতি বাবর সাত্তার সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর বেঞ্চ এ মামলার শুনানি করেন। সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ‘আমি মহিলা বিচারকের কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, ‘আদালত মনে করে আমি একটি সীমা অতিক্রম করেছি। মহিলা বিচারককে হুমকি দেয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না। তাই আদালত যেহেতু বলেছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিচারকের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত।’ ‘আমি আদালতকে আশ্বস্ত করছি যে, আমি ভবিষ্যতে এমন কোন মন্তব্য করব না,’ তিনি যোগ করেছেন, ‘আমি দুঃখিত যদি আমি একটি লাল রেখা অতিক্রম করে থাকি।’
এর পরে, আইএইচসি প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে, আদালত পিটিআই প্রধানের বক্তব্য রেকর্ড করবে এবং ইমরানকে একটি হলফনামা জমা দিতে বলেছে। আইএইচসি বেঞ্চ বলেছে, ‘বিচারকের সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করা আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আপনি যদি (আপনার) ভুল বুঝতে পেরে থাকেন এবং এর জন্য ক্ষমা চাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন তবে সেটাই যথেষ্ট।’ পিটিআই প্রধানকে এক সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়ে আদালত পরবর্তীতে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে। শুনানির পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ইমরান বলেন যে, পিটিআই-এর ‘হাকিকি আজাদি’ (সত্যিকারের স্বাধীনতা) আন্দোলন মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ছিল। আমি পাকিস্তানের বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে লড়তে চাই না। সূত্র : ডন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।