Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ইন্তেকাল

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বনানীতে দাফন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

জাতীয় সংসদ উপনেতা এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য, ফরিদপুর-২ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গত রোববার দিবাগত রাতে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর এবং তিনি ৩ ছেলে, ১ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।

সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গভীর শোক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো, আর আমরা একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে হারালাম এবং আমি হারালাম সত্যিকারের একজন অভিভাবক।
গতকাল বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার মহেন্দ্র নারায়ণ একাডেমি (এম এন একাডেমি) মাঠে মরহুমের ১ম জানাজা নামাজ এবং বাদ আসর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ২য় জানাজা নামাজ শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মরহুমের লাশ নেয়া হলে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। এরপর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের নেতারা শ্রদ্ধা জানান। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মতিয়া চৌধুরী, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কার্যনির্বাহী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মারুফা আক্তার পপি উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, জাসদ কেন্দ্রীয় সংসদ, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্রী পার্টি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ ঢাবি শাখা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ,¡ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, নরসিংদী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসোসিয়েশন, ইসমত কাদির গামা, জাতীয় মহিলা শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ, অরুণ রানার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় কবিতা পরিষদ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বঙ্গবন্ধু শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, লিয়াকত আলী লাকী বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় পার্টি (জেপি), বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, বাংলা আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ, মহিলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশ জাদুঘর, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি, জাতীয় শ্রমিকলীগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, সংগীত ভবন, বাংলাদেশে গার্লস গাইড, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আইন মন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। এছাড়াও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম।

উল্লেখ্য, ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। ১৯৫৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৬৯-১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ’৬৬-এর ছয়দফা আন্দোলন এবং ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলন-সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখেন। তিনি ’৭০-এর নির্বাচনে সাতজন নারী গণপরিষদ সদস্যের একজন ছিলেন। ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডের ন্যাশনাল কমিশনার এবং ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইন্তেকাল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ