Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার পর ১৬ বছর পালিয়ে, অবশেষে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:৪৯ পিএম

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ১৬ বছর ধরে পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো. উজ্জল প্রামাণিক ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।


বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানন।

 

সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব জানায়, ২০০৬ সালের জুন মাসে আলো বেগম নামে এক নারীকে বিয়ে করে উজ্জল। বিয়ের দিন উজ্জল ও তার পরিবার যৌতুক দাবি করে। ওই দিন আলোর বাবা আকবর আলী শেখ নগদ ৩০ হাজার টাকা দেন। বিয়ের এক মাস পর উজ্জল প্রামাণিক বিদেশ যাওয়ার জন্য আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এ নিয়ে সালিশ-বৈঠক হয়। সালিশে আকবর আলীকে ৫০ হাজার টাকা দিতে চাপ দেয়া হয়। টাকা না দিলে আলোকে তালাক দেয়ার ভয় দেখায় উজ্জল। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে।

 

র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন জানান, ২০০৬ সালে ১ আগস্ট উজ্জলের ভগ্নিপতি নাজমুল হোসেন লাবু মোবাইল ফোনে আলোর স্বজনদের জানান, আলো গুরুতর অসুস্থ। খবর পেয়ে তারা যেয়ে আলোর লাশ দেখতে পান। এ ঘটনায় আলোর দুলাভাই মো. জাহাঙ্গীর আলম বুলু বাদী হয়ে উজ্জল প্রামাণিককে প্রধান আসামি করে, তার মা আলেয়া বেওয়া, ভাই হিরা প্রামাণিক, বোন মোছা. লাভলী বেগম ও ভগ্নিপতি নাজমুল হোসেন লাবুর বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারপিট এবং শ্বাসরোধে হত্যার অপরাধে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুরো পরিবার আত্মগোপনে চলে যায়।

 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০২২ সালের ২৪ জুলাই বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (১) আসামি উজ্জলকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এ ছাড়াও মামলার অভিযুক্ত অন্য চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেন।


তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর আসামি উজ্জল তার মা আলেয়া বেওয়াকে নিয়ে পালিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা যায়। পরিচয় গোপন করে সেখানে বসবাস শুরু করে। পরে সেখানকার স্থানীয় একটি ফার্নিচারের দোকানে কাঠমিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করে। এর ছয় মাস পর মোছা. নাছিমা খাতুন নামে এক নারীকে বিয়ে করে উজ্জল।

 

র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক বলেন, বর্তমানে তাকে নিয়ে গাজীপুরে বসবাস করে আসছিল। তাদের ১০ বছর এবং তিন বছর বয়সী দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বগুড়ায় নিজ বাড়ি এবং তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ রাখে উজ্জল।


কিন্তু কিছুদিন আগে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারে, হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা হয়েছে। সংবাদ পাওয়ার পর থেকে সে আশুলিয়ার একটি ভাড়া বাসায় স্বপরিবারে আত্মগোপন করে বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ