বহির্নোঙরে কোনোরকম অপেক্ষা ছাড়াই সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়লো ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ এমভি ট্রান্স সমুদ্রা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জাহাজটি বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি-১) জেটিতে ভেড়ানো হয়। রাতে এ জাহাজ থেকে ভারতীয় পণ্যবাহী কনটেইনারটি খালাস করা হয়। এরপর কাস্টমস ছাড়পত্রসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে ২৫ মেট্রিক টন টিমএমটি বারভর্তি কনটেইনারটি সড়কপথে শেওলা সিলেট হয়ে ভারতের সুতারকাটি স্থলবন্দর হয়ে আসাম রাজ্যের উদ্দেশে রওনা হয়। কনটেইনার পরিবহনে ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশের কনটেইনারবাহী লরি। এই দীর্ঘ সড়কপথে দেয়া হচ্ছে বিশেষ এসকর্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের মধ্যেই ট্রানজিটের এ দ্বিতীয় ট্রায়াল রান হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে ভারতে তথা দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পণ্য পরিবহনের দ্বিতীয় ট্রায়াল রানের অংশ হিসেবে এ জাহাজটিতে চট্টগ্রাম আসে।

ম্যাঙ্গো শিপিং লাইন চট্টগ্রামের ম্যানেজার হাবিবুর রহমান জানান, বিকেলেই জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসে। এরপর রাতে সেখান থেকে সরাসরি এনসিটি-১ জেটিতে জাহাজটি বার্থিং দেয়া হয়। জাহাজটিতে ২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি কনটেইনারে ২৫ মেট্রিক টন রড আনা হয়েছে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা ওই জেটিতে অবস্থান করছিলেন। তারা জাহাজ থেকে ভারতীয় পণ্যবাহী কনটেইনারটি নামিয়ে ভারতের আসামে নেয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছিলেন। কাস্টম হাউসের একজন কর্মকর্তা জানান, রাতেই চালানটি খালাস করে আসামের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। কনটেইনারটি ফিরতিপথে ভারতের শিলং থেকে চা পাতা নিয়ে ডাউকি থেকে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ফের চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে একই জাহাজে করে চা পাতার ওই চালান কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ বন্দরে পৌঁছানো হবে।

গত শনিবার কলকাতা বন্দর থেকে কনটেইনারটি ম্যাঙ্গো শিপিং লাইনের এমভি ট্রান্স সমুদ্রা নামের জাহাজে তোলা হয়। এরপর জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের মধ্যে ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর একটি চুক্তি হয়। চুক্তিটির আওতায় বিগত ২০২০ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ট্রায়াল রান হয়েছিল। সম্প্রতি মোংলা বন্দর দিয়েও ট্রানজিটের একটি চালান ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পৌঁছানো হয়। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ওই দুটি চালানের মাধ্যমে বাংলাদেশের পাঁচটি রুট বা পথে ট্রানজিট পণ্য আনা-নেয়া শেষ হবে।