পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিজের ‘নাক কেটে পরের যাত্রা’ নয়তো! সেরকম আশঙ্কা করা হচ্ছে সিলেট ও মৌলভীবাজারের সড়ক ব্যবহার করে আসাম থেকে মেঘালয় হয়ে ত্রিপুরায় জ্বালানি তেল ও তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ভারতের বহনে। বন্ধু প্রতীম দেশ ভারত তাই, অনেকে বলছেন, নিজেদের ভার বহনে কতটুকু সামর্থ্য আছে আমাদের। তার বদলে অন্যের ভার তুলছি নিজেদের কাঁধে। দুই নৌকায় পা দিয়ে আস্তো থাকবে না দেশের রাস্তা। সম্প্রতি সিলেট সর্বনাশা বন্যায় রাস্তাঘাটকে করেছে তুলোধূনো। সেই বন্যার পিতৃ পরিচয় বন্ধু প্রতীম দেশ ভারতই। স্মরণকালের ভয়াল বন্যা ভারতের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে সিলেটজুড়ে। তারপরও ভারত লাশের উপর দিয়ে সুবিধা নিচ্ছে তেল পরিবহনে। বাংলাদেশ বন্ধুত্বের খাতিরে সেই সুবিধা দিচ্ছে এতো ক্ষয়ক্ষতির পরেও। সুবিধার প্রতিদান যেন আগামীতে পানি দিয়ে ভাসিয়ে না দেয়, সেই আশা সচেতন মহলের।
গত বৃহস্পতিবার তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ১০টি পেট্রোলিয়ামবাহী যান কনভয় নিয়ে ত্রিপুরায় পৌঁছে। গত ৩ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সঙ্গে ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন লিমিটেডের (আইওসিএল) একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর অংশ হিসেবে ১০টি পেট্রোলিয়ামবাহী যানবাহন একত্রে একটি কনভয় নিয়ে সিলেট তামাবিল-ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর-মৌলভীবাজার-শমসেরনগর-চাতলাপুর পথ দিয়ে পৌঁছে ত্রিপুরার কৈলাস্বরে।
সম্প্রতি ভারী বর্ষণে উত্তর-পূর্ব ভারতে রাস্তার অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে আসামের মধ্য দিয়ে পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। এতে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য ত্রিপুরা, দক্ষিণ আসাম এবং মিজোরামে পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্য বিকল্প পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রবীণ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ অ্যাড. মাওলানা আব্দুর রকিব ইনকিলাবকে জানান, জনগণকে না জানিয়ে তেল পণ্য পরিবহনে ভারত বাংলাদেশের একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। সাধারণ জনগণ জানতে চায়, তেল পণ্য ব্যবহারে সিলেটের রাস্তা উপযোগী আছে কি না? পণ্য পরিবহনে রাস্তা ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে সংস্কার বাবদ অর্থ জনগণের পিঠ থেকেই যাবে, সেই রাস্তা দূর্দশায় কষ্টের মুখে পড়বে যাতায়াতকারীরা। দেশের পরিবহনগুলো হবে ক্ষতিগ্রস্থ। তিনি বলেন, রাজস্ব আয় হবে, যদি স্বার্থটা এমন হয় তাহলে পাথর উত্তোলনে তো এর চেয়ে বেশি রাজস্ব আসতো সরকারের তহবিলে। সেই সাথে লাভবান হতেন সরকার। অভাব মোচন হতো স্থানীয় জনগোষ্ঠীর।
রাজনীতিবিদ সালেহ আহমদ খসরু জানান, নিজের ঘরের খবর নেই, পরের বাড়ির সুবিধা দেয়ার নাম যেমন পারিবারিক দায়িত্ব বোধ নয়, তেমনি সিলেটের রাস্তাগুলোর ভবিষ্যত না ভেবে, ভারতে পণ্য পরিবহনের সুবিধা প্রদান একটি প্রহসন মাত্র। সম্প্রতি বন্যার কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়ে সিলেটবাসী।
সুজন (সুশাসনের জন্য জনগণ) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ জানান, বন্ধু প্রতিম দেশ ভারত। কথা বললে সর্ম্পক থাকবে না, তাই এ নিয়ে কথা না বলাই ভালো। যেভাবেই হোক সম্পর্ক রাখা দরকার। তারা কি করলো তা নিয়ে ভাবার শক্তি তো আমাদের নেই! সে কারণে লাভ ক্ষতির চেয়ে নিজের ‘নাক কেটে পরের যাত্রা’ সুবিধা দিতে পারার নামই হয়তো এখন সর্ম্পক!
দুর্নীতি মুক্ত করন ফোরাম সিলেটের সেক্রেটারী মকসুদ আহমদ জানান, হয়তো মানিয়ে চলতে হচ্ছে আমাদের। যে রাস্তাগুলোতে সিলেটের পাথর পরিবহনের কথা সেই খাত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, পরিবহন খাতে মন্দা, বেকারের অভিশাপে জর্জরিত শ্রমিকরা। কিন্তু ভাগ্য ভারতের সেই রাস্তায় এখন তারা তেল পণ্য পরিবহন করছে। সেই পরিবহনে কত লাভ ও মঙ্গলের কথা বলা হচ্ছে, দিন শেষে দেখার অপেক্ষা ছাড়া কিছুই করার নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।