বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোরে বিএনপির শীর্ষ চার নেতার বাড়িতে মধ্যরাতে তা-বের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এই হামলা, ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। হামলার ঘটনা ঘটেছে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ মিজানুর রহমান খাঁনের বাসভবনে। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার পর থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এই হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। হামলায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি স্প্রাইট, সেভেনআপ, কোকাকোলার বোতলও ব্যবহার করা হয়েছে।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসভবনের সিটি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সন্ত্রাসীরা একটি সিলভার কালারের মাইক্রোবাস, ৪ থেকে ৫ টি প্রাইভেট কার এবং ১০টির অধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেয়। যার মধ্যে একটি সাদা এবং একটি কালো রংয়ের প্রাইভেটকার ছিল। উঠতি বয়সি সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মুখে কাপড় বেঁধে এই হামলা শুরু করে।
সন্ত্রাসীরা প্রথমে রাত দেড়টার পর ঘোপ পিলু খান সড়কস্থ বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের বাসভবনে হামলা করে। গেটের বাইরে থেকে সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বাসার জানালার গ্লাসসহ বাসভবনে ব্যাপক ভাংচুর করে। গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টায় চালায়। পরে ব্যর্থ হয়ে সন্ত্রাসীর অনবরত ইটপাটকেলের সাথে কাঁচের স্প্রাইট, সেভেনআপ, কোকাকোলার বোতল ছুড়তে থাকে। তাদের ছোড়া ইট পাটকেল ও ভাঙা কাচের বোতলের টুকরোয় বাস ভাবনের আঙিনা ভরে যায়। তাদের ছোড়া ইট পাটকেলে আঘাতে পাশের বাড়ির বেলকনিতে লাগানো এসিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বেশ কিছু সময় ধরে সন্ত্রাসীর তান্ডব চালিয়ে উপশহর বি ব্লকস্থ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর বাস ভবনে হামালা চালায়। সন্ত্রাসীর গেটের বাইরে থেকে ইট পাটকেল ও কাঁচের বোতল নিক্ষেপ করে বাসার জানালা গ্লাস ভেঙে ফেলে। সেখন থেকে উপশহর ডি ব্লকস্থ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ মিজানুর রহমান খাঁনের বাসভবনে গিয়ে হামলা চালায়। তার বাসার সামনে রাখা মাইক্রোবাস ভাংচুর করে। গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশেরে চেষ্টা চালায়।
সবশেষে সন্ত্রাসীরা ধর্মতলা মোড়স্থ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের বাসভবনে গিয়ে হামলা চালায়। তার বাস ভবনেও সন্ত্রাসীরা ইটপাটকেল ছুঁড়ে জানালার কাচ ভাংচুর করে। বৈদ্যুতিক মিটার বক্স ভেঙে ফেলে। বাসার গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। সন্তাসীদের এমন তা-বে বাসার মধ্যে থাকা শিশু থেকে শুরু করে মহিলারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। হামলার প্রতিবাদে শনিবার সকালে নগর বিএনপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসী মধ্যরাতে বিএনপি নেতাদের বাড়িতে হামলা ও তা-ব চালিয়েছে। এনিয়ে ৫ বার করে এই নেতাদের বাড়িতে হামলা চালানো হলো। কিন্তু কোনো ঘটনায়ই দোষীদের চিহ্নিত করা বা বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। তারপরও আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা মামলা করবো।
এব্যাপারে যশোর পুলিশের মুখপাত্র ডিবি ওসি রূপণ কুমার সরকার জানিয়েছে, হামলা ভাংচুরের কোনো অভিযোগ তারা পাননি।
এদিকে, এই হামলার ঘটনায় শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ। বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বিএনপি যখনই দেশের গণতন্ত্র পুণরুদ্ধার, আইনের শাসন, মানবাধিকার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ জনগণের সকল ন্যায্যা দাবি এবং অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে; তখনই সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা জনতার আন্দোলনকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য এই ধরণের হামলা তা-ব শুরু করে। ইতিপূর্বেও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা একইভাবে দলের নেতা কর্মীদের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু কোনো ঘটনারই কোনো বিচার হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে হামলার ঘটনা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপি নেতা আলহাজ মিজানুর রহমান খাঁন, মফিকুল হাসান তৃপ্তি, সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইসহক, জাফর সাদিক, মুনির আহমেদ সিদ্দকী বাচ্চু প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।