মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে অবশ্যই রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দেশটির সামরিক সরকারের প্রতি এমন আহবান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। রোহিঙ্গা ঢলের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুধবার এ কথা বলেন তিনি। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ানমার সরকার এবং আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে বার বার তাগিদ দিয়ে আসলেও আশ্বাস ছাড়া এখন পর্যন্ত প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়ে উঠেনি। মূলত নেপিদোর টালবাহানার কারণেই থমকে আছে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। এ নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিখ বলেন, গুতেরেস রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যত নিয়ে অস্পষ্ট আকাক্সক্ষা উল্লেখ করেছেন। যারা বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে ব্যাপক বৈষম্যের সম্মুখীন। তারা বেশিরভাগ নাগরিকত্বসহ অন্যান্য অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত। গুতেরেসের মুখপাত্র আরও বলেন, মিয়ানমারে সংঘটিত সব ধরনের আন্তর্জাতিক অপরাধে জড়িত অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। যদিও সামরিক বাহিনীর হাতে ক্ষমতা চলে যাওয়ার পর মিয়ানমারের মানবিক, মানবাধিকার এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্টিফেন দুজারিখ। এবিসি নিউজ এ খবর জানিয়েছে। অপরদিকে, এবার রাখাইন ধাঁচেই সাগাইং অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে সামরিক বাহিনী। প্রতিরোধযোদ্ধাদের হাতে মার খেয়ে যেন উন্মাদ হয়ে উঠেছে জান্তারা। তাদের প্রতিশোধের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে তিন গ্রামের কমপক্ষে ২৫০ বাড়ি। গ্রামগুলো থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৭ হাজারের বেশি মানুষ। শুধু তাতেই ক্ষান্ত হয়নি জান্তা সদস্যরা। অঞ্চলটির বহু নাগরিককে অপহরণ করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করেছে সরকারি বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন কয়েকজন নারী। দি ইরাবতী এ খবর জানায়। চলতি মাসের শুরু থেকেই মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে জান্তা বাহিনী। এসব সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে কয়েক জান্তা, পাশাপাশি মারা গেছেন কয়েকজন প্রতিরোধযোদ্ধাও। সেসব ঘটনার জের ধরেই মাসব্যাপী আটক কার্যক্রম চালিয়েছে জান্তারা। স¤প্রতি আয়াদাও টাউনশিপের এনগওয়ে ডুইন গ্রামের অন্তত ২২ জন বাসিন্দাকে আটক করেছে তারা। তাদের মধ্যে কয়েজন নারীও রয়েছেন, যারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। গ্রামটির ৯০০ পরিবারের অধিকাংশ বাসিন্দাই কৃষক। এ গ্রামের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ১৬ আগস্ট স্থানীয় বৌদ্ধ মঠ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র, মঠের গাড়ি এবং নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জান্তা সদস্যরা। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, আটকদের স্বজনদের কাছে প্রত্যেক অপহরণকারী মুক্তিপণ দাবি করেছে ২৫ লাখ কিয়াত (প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা)। আয়াদাউ টাউনশিপ প্রতিরোধ গোষ্ঠীর একজন সদস্য বলেছেন, ‘গ্রামবাসীদের কোনো কারণ ছাড়াই আটক করা হচ্ছে। ৫০ জনেরও বেশি গ্রামবাসীকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণ শুরু হওয়ার পর থেকে ২০০ জনেরও বেশি বাসিন্দা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে।’ সোমবার সাগাইং অঞ্চলের কাথা টাউনশিপে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এবং কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) যৌথ হামলার সময় নিজেদের বোমায় অন্তত ৩০ জান্তা সৈন্য নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিন মান্দালয় অঞ্চল থেকে মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যে খাদ্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে যাচ্ছিল জান্তাদলটি। এ সময় কমপক্ষে ২ ঘণ্টা স্থায়ী যুদ্ধে ৫টি জেট থেকে ৯টি বোমা ফেলেছিল জান্তা বাহিনী। সরকারি বাহিনী বিমান হামলা করতে পারেÑএমন খবর পেয়েই পিডিএফ ও কেআইএফ সদস্যরা পালাতে সক্ষম হয়। কাথার পিডিএফ-এর একজন সদস্য জানিয়েছেন, বান্ট বওয়ে গ্রামে ভুলক্রমে নিজস্ব বোমা হামলায় মারা গেছে ওই সেনারা। একটি সামরিক যানে মৃত ও আহত সেনাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চারজন প্রতিরোধযোদ্ধা সামান্য আহত হয়েছেন। এর আগে সাগাইংয়ের তিনটি গ্রামে অগ্নিসংযোগের ফলে ছয় বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। খবরে বলা হয়, সাগাইং অঞ্চলের শাসকবিরোধী শক্ত ঘাঁটি বলে খ্যাত ইয়নিমাবিন টাউনশিপের তিনটি গ্রামে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে জান্তারা। এ সময় ওপর থেকে হেলিকপ্টারে গুলি করতেও দেখা যায় তাদের। ১৮ থেকে ২১ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত এসব ঘটনায় ৭ হাজারের বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়ে কাছাকাছি বনাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে। প্রথম দিনেই তারা কা পাইং এবং থি কোন গ্রামের বাড়িঘর ও শস্যভান্ডারে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় ওই দুটি গ্রামসহ পাউং ওয়া, থা লুক, উইন কোন এবং ইয়াওয়ার সিন গ্রামের যোদ্ধারা জান্তাদের শান্তিতে রাখেনি। তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছিল জান্তারা। কা পাইং গ্রামটি তুলনামূলকভাবে বড়। এখানকার ৮০০ বাড়ির মধ্যে ২০০ বাড়ি আগুনে ছাই হয়েছে। থি কোনের ৮০০ বাড়ির মধ্যে পুড়ে গেছে সাতটি। আর পাউং ওয়া গ্রামের ২০০ বাড়ির মধ্যে আগুনে ছাই হয়েছে ৪০টিরও বেশি বাড়ি। স্থানীয় গবেষণাদল ডেটা ফর মিয়ানমারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালের ১ ফেব্র“য়ারি থেকে চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত সামরিক বাহিনী এবং সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর হামলায় ১৮ হাজার ৮৮৬টি বেসামরিক বাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৮০০টিই সাগাইং অঞ্চলের। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ১ আগস্ট পর্যন্ত মিয়ানমারজুড়ে আনুমানিক ১ কোটি ২৪ লাখ লোক অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ১ ফেব্রæয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে মিয়ানমারের ৮ লাখ ৯৭ হাজার মানুষ। এবিসি নিউজ, ইরাবতী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।