Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থলে পরিণত বানিগালা

কারণ দর্শানোর নোটিশ ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত আছি : যুক্তরাষ্ট্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

পাকিস্তানে রাজনৈতিক কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বাসভবন বানিগালা। সোমবার শত শত সমর্থক পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বানিগালায় জড়ো হয়, তার বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক করা সন্ত্রাসের মামলার প্রতিবাদ জানায়। এদিকে, গতকাল ইমরান খানকে করণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে ইসলামাবাদ হাইকোট।

সোমবারের বিক্ষোভ শুধু বানিগালার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ইমরান খানের আসন্ন গ্রেপ্তারের গুজবের পরে, লাহোর, ফয়সালাবাদ এবং করাচির মতো অন্যান্য শহরে খানের সমর্থনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে, ইমরান খান তার ক্ষমতা থেকে অপসারণের জন্য যে দেশকে দায়ী করেছেন সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বিক্ষোভ হয়েছে। পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সেøাগান দিয়ে ভার্জিনিয়ায় প্রায় এক ঘন্টা ধরে প্রতিবাদ করেন পিটিআই সমর্থকরা।

গত রোববার রাতে একটি বৃহৎ সমাবেশের বীজ বপন করা হয়েছিল যখন ইমরান খানের বাসভবনের বাইরে বিশাল জনতা জড়ো হয়েছিল, ইসলামাবাদ পুলিশের একটি দল পিটিআই চেয়ারম্যানকে আটক করতে আসছে এমন জল্পনার মধ্যে। রাতভর দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও অনুসারীরা পাহাড়ের চূড়ার বাসভবনের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে থাকেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা পিটিআই চেয়ারম্যানের পক্ষে সেøাগান দিচ্ছেন এবং ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার জন্য সরকারের যেকোনো পদক্ষেপকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার করছেন।

মাঠে উপস্থিতির পাশাপাশি, পিটিআই সমর্থকরাও ইমরান খান-পন্থী হ্যাশট্যাগ দিয়ে অনলাইনেও আধিপত্য বিস্তার করেছিল। যাইহোক, সোমবার বিকাল নাগাদ পরিস্থিতি শান্ত হতে শুরু করে; পুলিশ বাহিনী প্রত্যাহার করা হয় এবং পিটিআই প্রধানকে হাইকোর্ট জামিন দেয়। ইসলামাবাদ পুলিশ আরও স্পষ্ট করেছে যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বাইরে বিপুল সংখ্যক পিটিআই সমর্থকের উপস্থিতির কারণে সম্ভাব্য ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি’ এড়াতে তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং ইমরান খানকে গ্রেপ্তারে তাদের কোন পরিকল্পনা ছিল না।

সোমবার বিকালেও ইমরান খানের বাসভবনের আশেপাশে কয়েক শতাধিক দলীয় সমর্থক উপস্থিত ছিল, তারা তাকে পুলিশ এবং সরকারের কাছ থেকে ‘রক্ষা’ করতে চেয়েছিল। ইমরান খানের সমর্থকদের মধ্যে আবেগ তুঙ্গে ছিল, যারা তার বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে ছোট ছোট দলে জড়ো হয়েছিল, তারা ইমরান খানের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এবং তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছিল। বিক্ষোভকারীদের একজন বলেছেন যে, তারা ‘গত রাত থেকে বানিগালার বাইরে উপস্থিত ছিলেন’ এবং তারা ‘পুলিশকে ইমরান খানকে স্পর্শ করতে দেবেন না’।

সন্ধ্যা নাগাদ, যদিও ইমরান খানের বানিগালা এস্টেটের বাইরে কোনো পুলিশ দল ছিল না; তবে তার বাসভবনের দিকে যাওয়ার রাস্তার প্রধান চেকপোস্টে মাত্র কয়েকজন পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তী চেকপোস্ট, একটি বাধা দ্বারা অবরুদ্ধ, ইমরান খানের সমর্থকদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, যারা প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও অধ্যবসায়ের সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এসময় চেকপোস্টর দুই পাশে নারীসহ গণমাধ্যমকর্মী ও দলীয় সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

ইমরান খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ : ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) অতিরিক্ত দায়রা জজ জেবা চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার মন্তব্যের জন্য আদালত অবমাননার মামলায় গতকাল ইমরান খানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যানকে আগামী ৩১ আগস্ট ব্যক্তিগতভাবে বেঞ্চের সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে। অধিকন্তু, পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকে (সিজেপি) বেঞ্চে আরও বিচারকদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল কারণ তিন বিচারপতির বেঞ্চের নেতৃত্বে বিচারপতি মহসিন আখতার কায়ানি বলেছিলেন যে, আদালতের পবিত্রতার সাথে কোনও আপস করা উচিত নয়। বিচারপতি কায়ানি ইমরান খানের মন্তব্যকে ‘অনুপযুক্ত’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে, মামলাটি কেবল হাইকোর্টে সীমাবদ্ধ নয়, কারণ বার্তাটি সর্বোচ্চ স্তরে যাচ্ছে। তিনি যোগ করেছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকেদের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। তিনি অ্যাডভোকেট জেনারেল ইসলামাবাদ জাহাঙ্গীর জাদুনকে ইমরান খানের বিবৃতিটি উচ্চস্বরে পড়তে বলেছিলেন, যেখানে তিনি আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত আছি : মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পর্কে তারা অবগত আছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি একথা জানিয়েছেন। নেড প্রাইস বলেন যে, বিষয়টি সরাসরি আমেরিকার সাথে সম্পর্কিত নয়, এটি পাকিস্তানের আইনি ও বিচার ব্যবস্থার বিষয়। তিনি আরো বলছেন, পাকিস্তানে কোনো রাজনৈতিক দলের বিষয়ে আমেরিকার কোনো অবস্থান নেই। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আরো বলেছেন, পাকিস্তান ও বিশ্ব গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও আইনি নীতির শান্তিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণকে সমর্থন করে। সূত্র : ডন, ট্রিবিউন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তানের

৮ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ