Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক মাস পর জীবিত উদ্ধার

সালথায় হত্যার পর লাশ গুম মামলা

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

ফরিদপুরের সালথায় আত্মগোপনে থাকার ৩৫ দিন পর নুর ইসলাম চৌধুরী নামের এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ ছিল, তাকে অপহরণের পর লাশ গুম করা হয়েছে। এ অভিযোগে মামলাও করেন নুর ইসলামের স্ত্রী। গত শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে বগুড়া জেলা সদর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। গতকাল রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জুলাই সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয় নুর ইসলাম। ২৭ জুলাই ১৪ জনকে আসামি করে ফরিদপুরে কোর্টে একটি মামলা করেন তার স্ত্রী আন্না বেগম। আদালত মামলাটি সালথা থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটির তদন্তভারের দ্বায়িত্ব পান উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ হোসেনকে।

মামলার আসামি করা হয় উপজেলার রাঙ্গারদিয়া গ্রামের মান্নান, মাতুব্বর, সিদ্দিক মাতুব্বর, সানােয়ার মাতুব্বর, মুনছুর মুন্সী, হাবিব শেখ, আনিছ শেখ, হাসান শেখ, বাবলু মোল্যা, রাকিব শেখ, দবির শেখ, কবির শেখ, ইসমাইল মােল্যা, হিলাল শেখ ও হিমায়েত শেখকে।
নুর ইসলামের স্ত্রী আন্না বেগম মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, আসামিদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা ও গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে বিরােধ চলছিল। তার স্বামী একজন দরিদ্র্র কৃষক। কিছুদিন আগে গাছ কাটা নিয়ে মামলার এক আসামি আনিচের সঙ্গে তার স্বামীর বিরোধ হয়। গত ১৪ জুলাই রাত ৯টার দিকে নুর ইসলাম স্থানীয় স্লুইসগেট এলাকায় চা পান করতে যান। রাত ১১টার পরও তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মান্নান মাতুব্বর, সিদ্দিক মাতুব্বর ও সানোয়ার মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের নামে এত বড় মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রায় এক মাস ধরে এলাকা ছাড়া করে রেখেছেন নুর ইসলামের স্ত্রী। মিথ্যা মামলা দেওয়ায় আমরা তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করেিবা। সঠিক তদন্ত করে সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন করায় সালথা থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সালথা থানার এসআই ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত শুরুর পর অনেক কিছু বেরিয়ে আসে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেও বেশ কিছু তথ্য পাই। এসব তথ্যের সূত্র ধরেই নুর ইসলামকে উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, ‘মামলার আসামিদের একজনের বোনের সঙ্গে পরকীয়া ছিল নুর ইসলামের। ঘটনার রাতে আসামির বোনের সঙ্গে পরকীয়ায় ধরা খেয়ে মারধরের শিকার হন নুর ইসলাম।

‘মারধরের শিকার হওয়ার পর পরিবারের পরামর্শে নুর ইসলামকে ওই রাতেই বাড়ি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন নুর ইসলাম বগুড়া সদরে গিয়ে তার শ্যালক ওমর ফারুকের কাছে আশ্রয় নেন। সেখান তিনি আফরিন জুটমিলে চাকরি নেয়। পরে তার স্ত্রী আন্না বেগম আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, নুর ইসলামকে লুকিয় রেখে তার স্ত্রী মিথ্যা মামলা করেন। আমরা তাকে জীবিত উদ্ধার করে গত শনিবার বিকেলে আদালতে পাঠাই। আদালত তার পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেন। এখন আমরা নুর ইসলামের স্ত্রী আন্না বেগমকে খুঁজছি। মিথ্যা মামলা করায় তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, পরকীয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঘটনা। ওই লোকটি নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যার পর

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ