পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
উপমহাদেশের প্রাচীনতম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজ। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সকল আন্দোলন সংগ্রামে যেখানকার শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। এমনই এক কালজয়ী বিদ্যপীঠ আজ বহুমুখী সংকটে জর্জরিত। সারা দেশ থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসে। অথচ না আছে পর্যাপ্ত ক্লাসরুম, না আছে কলেজের সুন্দর পরিবহন ব্যবস্থা, না আছে পর্যাপ্ত হলসহ আনুষাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা। প্রাচীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৮টি ছাত্র হোস্টেল আছে। সবগুলো হোস্টেলই ২-৩ তলা উঁচু এবং বেশ পুরনো। কখনো পলস্তেরা খসে পড়ে শিক্ষার্থীদের মাথায়, কখনোবা সিলিং ফ্যান খসে পড়ে। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রতিষ্ঠানে সবগুলো হল মিলে সুন্দরভাবে থাকার মতো ২০০০ এর বেশি ছাত্র থাকা সম্ভব না। যেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫ হাজারের অধিক। ফলে শিক্ষার্থীদের হলে থাকতে হয় গণরুমের মতো। একেক রুমে থাকে ১০-১২ জন বা আরো বেশি। অথচ, থাকার কথা ৩-৪ জন করে। নেই যুগের পর যুগ ছাত্র সংসদ নির্বাচন। ফলে ছাত্ররা নিজেদের খুশিমতো রাজনীতি চর্চা করতে পারে না। ফলস্বরূপ যখন যেই দল ক্ষমতায় থাকে তাদের আধিপত্য থাকে ক্যাম্পাসজুড়ে। এই বিদ্যাপীঠ থেকে পড়াশোনা করে সারাদেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী নেতৃত্ব দিচ্ছে। কিন্তু এখন আর সেই রাজনীতি চর্চা হয় না। যার ফলে নতুন নেতৃত্বও বের হয়ে আসে না। ক্ষমতাশীন দলের ও কমিটি নেই বছরের পর বছর ধরে। ক্লাসরুমের সংকট থাকে সবসময়। এক বর্ষের ক্লাস হলে আরেক বর্ষের ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়। এছাড়াও নিয়মিত বিভিন্ন সরকারি পরীক্ষা এবং সরকারি সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা থাকার ফলে ক্লাস বন্ধ থাকে বছরের দীর্ঘসময়। নেই সুন্দর একটা গবেষণার ল্যাব। কোনরকম দায়সারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই অনার্স-মাস্টার্স শেষ করতে হয় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের। যেহেতু এখানে অনার্স-মাস্টার্সের পাশাপাশি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিও আছে, তাই শিক্ষকদের চাহিদা বেশি। অথচ দেখা যায়, প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক সংকট। ফলে শিক্ষকদের উপর অতিরিক্ত চাপ থাকে বছরের ১২ মাস। এমন অসংখ্য সংকট মোকাবেলা করে কোনো রকমে টিকে আছে প্রাচীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত, প্রাচীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে মনোযোগ দেওয়া। শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত মান উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। বিশেষ করে, হোস্টেলগুলোর দিকে অতিদ্রুত মনোযোগ দেওয়া উচিত। হোস্টেলগুলো বহুতল ভবন করা শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি। প্রাচীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সোনালি অতীত আবার ফিরে আসুক, এটাই প্রত্যাশা করছি।
মো. সায়েদ আফ্রিদী
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।