Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ধনেপাতার ক’টি পার্শ¦-প্রতিক্রিয়া

প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নিত্যদিনের বিভিন্ন খাবারে আমরা ধনেপাতা ব্যবহার করে থাকি। ধনেপাতার বৈজ্ঞানিক নাম ‘কোরিয়ানড্রাম স্যাটিভাম’। কিন্তু কখনও কি কল্পনা করেছেন যে, এই সুস্বাদু খাবারটির কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে? অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি কথা হল, এই সুপরিচিত খাবারটির অনেক ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিদ্যমান যা আমাদের শরীরকে দিনদিন অসুস্থ করে তুলছে। * অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে তা লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এ ছাড়া, এতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে। * অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া হৎপি-ের স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে, নি¤œ রক্তচাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নি¤œ রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এ ছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে। * স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ার সমস্যা তৈরি করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যেমন এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া এমনকি পাতলা পায়খানা হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়। * ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু বেশি পরিমাণে খেলে ডায়ারিয়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। এ ছাড়া, এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন। * আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই ধনেপাতা আহার থেকে বিরত থাকুন। কেন না, এর ফলে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়। * অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মতো জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা র্দীঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খেতে পারেন। * সবুজ ধনেপাতাতে মোটামোটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিসি উপাদান থাকে যা ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন ‘কে’ থেকে বঞ্চিত হয়। এ ছাড়া, ধনেপাতা ত্বকের ক্যানসারের প্রবণতাও তৈরি করে থাকে। * ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জির সমস্যা তৈরি হয়। এই অ্যালার্জির ফলে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র‌্যাশ ওঠা-এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে। * অতিরিক্তি ধনেপাতা সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন অ্যাসিডিক উপাদান যা আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লাল হয়েও যায়। * গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রƒণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজজন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে এতে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায় এবং বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রƒণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।
ষ আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।



 

Show all comments
  • Fahad ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:৩৭ পিএম says : 0
    thanks for this valuable news
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধনেপাতার ক’টি পার্শ¦-প্রতিক্রিয়া
আরও পড়ুন