পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
গতকাল গেছে ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মৃত্যু দিবস। তাই ভাবলাম, বঙ্গবন্ধুর জীবনের অনেক পেছনের একটি দিক নিয়ে আলোচনা করি। এই মুহূর্তে সারাদেশে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট ও লোডশেডিং মানুষকে কাবু করে ফেলেছে। তার ওপর আবার পণ্য সামগ্রির দামে অবিশ্বাস্য ঊর্ধ্বগতি। এমন কোনো পণ্য নাই, যার দাম বিগত ৩ সপ্তাহে দ্বিগুণ হয়নি। এসবই এখন টক অব দি কান্ট্রি। গণমাধ্যমগুলোও এসমস্ত আলোচনায় ভরপুর। স্বাভাবিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে, এটাই হয়তো পাঠকদের প্রত্যাশা। কিন্তু আমি ভাবলাম, শেখ মুজিবকে নিয়ে আলোচনার কয়েকটি অকেশন থাকে। যেমন তার জন্ম ও মৃত্যু দিবস, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস ইত্যাদি। তাই ভাবলাম যে, যেহেতু গতকালই তার মৃত্যু দিবস গেছে তাই তাকে নিয়েই কিছুটা আলোচনা করি। আলোচনাটিকে ট্রিগার করেছে, অর্থাৎ আলোচনা করবো এমন চিন্তার উদয় হয়েছে ১৩ আগস্ট ‘দৈনিক ইনকিলাবের’ প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম কলামে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট দেখে। রিপোর্টটির শিরোনাম, ‘রাজনীতির পাশাপাশি সশস্ত্র পন্থায়ও বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু’। রিপোর্টটি শুরু হয়েছে এভাবে।
‘দীর্ঘ রাজনীতির লক্ষ্যই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। আর তাই নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পাশাপাশি সশস্ত্র পন্থায়ও বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’ এখানে আমি একটি কথা বলে রাখতে চাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ইত্যাদি বিষয়ে আমার কাছে প্রচুর তথ্য জমা হয়ে আছে। তার কিছু কিছু এর মধ্যে অন্যান্য গণমাধ্যম এবং বই পুস্তকে প্রকাশিত হয়েছে। আর অনেক তথ্য অপ্রকাশিত রয়েছে। যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বস্তুনিষ্ঠভাবে লিখতে গেলে বা পর্যালোচনা করতে গেলে সিরাজুল আলম খানের ভূমিকাকে বাদ দেওয়া যাবে না। সিরাজুল আলম খান এবং সমর্থকরা দাবি করেছেন যে, তারা স্বাধীনতার লক্ষ্যে নিউক্লিয়াস গঠন করেছিলেন। এই নিউক্লিয়াসের কথা আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতারা স্বীকার করতে চান না। আরেকটি অবাক করা ব্যাপার হলো এই যে, সিরাজুল আলম খান একটি মাত্র বই লিখেছেন। নাম, ‘আমি সিরাজুল আলম খান বলছি’। সিরাজুল আলম খানের ওপর আরেকটি বই লিখেছেন মহিউদ্দিন আহমেদ। নাম, ‘সিরাজুল আলম খান / প্রতি নায়ক’।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সেটি হলো, ১৯৭১ সালের ১৪/১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথমে পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ইয়াহিয়া খান, শেখ মুজিব এবং জুলফিকার আলী ভুট্টোর মধ্যে কী আলোচনা হয়েছিল, সেটি আজও বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। আমরা শুধু এটুকু জানি যে, শেখ মুজিবের কাছে ইয়াহিয়া ক্ষমতা হস্তান্তর না করে মিলিটারী ক্র্যাকডাউন করেছিলেন। এ কথা পুরাপুরি সত্য। কিন্তু তার পরেও কথা থেকে যায়। ঐ ৯ দিন ধরে প্রথমে দুই নেতা এবং পরে তিন নেতা কী আলোচনা করেছিলেন সেটি বিস্তারিত জানা যায়নি। এই ধরনের আরো অনেক হাইফেন রয়েছে। যাই হোক, আমি আজকের আলোচনায় ফিরে যাচ্ছি।
ইনকিলাবের ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই শেখ মুজিব অনুধাবন করেন যে পাকিস্তানের কাঠামোতে বাঙালি জাতির মুক্তি আসবে না। এই লক্ষ্য নিয়ে তিনি দু’ভাবে এগুতে থাকেন। নিয়মতান্ত্রিকভাবে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি প্রথমে বাঙালি জাতি গঠনের ওপর জোর দেন। ধীরে ধীরে জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার তীব্র আকাক্সক্ষা জাগাতে শুরু করেন। এরপর রিপোর্টটিতে যে কথা বলা হয়েছে সেটি এবারই প্রথম শোনা গেল। বলা হয়েছে যে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সশস্ত্র পন্থায় বাংলাদেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর সম্মতি নিয়ে একটি বিপ্লবী সংস্থা যে গঠন করা হয়েছিল, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিবরণেও তাই বলা হয়েছে।
॥দুই॥
ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা ছিলেন সাহাবুদ্দিন খালেদ চৌধুরী। পরবর্তীকালে তিনি আগরতলা মামলার ১২ নং আসামী ভূপতি ভূষণ চৌধুরী ওরফে মানিক চৌধুরীর মাধ্যমে ভারত সরকারের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জওহরলাল নেহরু। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মানিক চৌধুরী ত্রিপুরা রাজ্যের তৎকালীন কংগ্রেস নেতা সচিন লাল সিংহের মাধ্যমে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে যোগাযোগ করেন। সচিন লাল সিংহ পরবর্তীতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। রিপোর্টটিতে বলা হয় যে, পাকিস্তানে সামরিক শাসন চলার সময়ে বঙ্গবন্ধু জেল থেকে বেরিয়ে মানিক চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে আগরতলা হয়ে নয়াদিল্লী যান। প্রয়াত ভূপতি ভূষণ চৌধুরী (মানিক চৌধুরী) জীবদ্দশায় তাকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন বলে জানান অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন খালেদ চৌধুরী।
এরপর ঐ রিপোর্টে মরহুম সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ লিখিত, ‘আগরতলা মামলা, শেখ মুজিব ও বাংলার বিদ্রোহ’ গ্রন্থেও বঙ্গবন্ধুর আগরতলা যাওয়ার বিবরণ পাওয়া যায়। বলা হয় যে, ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবির মধ্যদিয়ে স্বায়ত্তশাসন দাবির আগেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন।
ইনকিলাবের রিপোর্টটি এখানেই শেষ হয়েছে। আমার কাছে এ সম্পর্কে ফয়েজ আহমেদের পুস্তক ছাড়াও মহিউদ্দিন আহমেদের বই রয়েছে। আরো রয়েছে দুটি বই। একটি বইয়ের নাম, ‘অস্তরাগে স্মৃতি সমুজ্জল /বঙ্গবন্ধু তার পরিবার ও আমি’। বইটি লিখেছেন বঙ্গবন্ধুর আপন ফুপাতো ভাই মমিনুল হক খোকা। আরেকটি বই আমি গত বই মেলায় কিনেছি। বইটির নাম, ‘আগরতলায় শেখ মুজিবের গোপন মিশন / স্বাধীনতার প্রস্তুতি পর্ব’। লেখক সোহরাব হোসেন। এছাড়া বেশ কয়েকটি পেপার কাটিং আছে। ঐসব পেপার কাটিংয়ের একটি হলো বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশিত তথ্য। এতগুলো তথ্য এই একটি নিবন্ধে পরিবেশন করা সম্ভব হবে কিনা, জানি না। তবে শুরু করছি বঙ্গবন্ধুর ফুপাতো ভাই মমিনুল হক খোকার বই দিয়ে। বইটির ১৬ পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর রবীন্দ্রসংগীত প্রীতির ওপরে একটি প্যারা রয়েছে। মমিনুল হক সেগুনবাগিচায় থাকতেন। তিনি শেখ মুজিবকে ‘মিয়াভাই’ বলে সম্মোধন করতেন। সেখানে বলা হয়েছে, আজও কানে বাজে সেগুনবাগিচার বাসাতে মিয়াভাইয়ের গুনগুনিয়ে সুর ভাজা, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’, ‘বিপদে মোরে রক্ষা করো / এ নহে মোর প্রার্থনা’, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি ইত্যাদি রবীন্দ্রসংগীতের পংক্তি। সেই সাথে ৫০ দশক থেকেই তার স্বগতোক্তি- ওদের সাথে থাকা যাবে না, কিছুতেই না।’ ওদের সাথে বলতে তিনি বোঝাতেন তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানীদেরকে।
ঐ বইয়ের ৪১ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন, ‘মন্ত্রিসভা গঠন করার কিছুদিন পরেই (মন্ত্রিসভা বলতে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভাকে বোঝানো হয়েছে) শেরে বাংলা কলকাতা গেলেন। কলকাতাতে প্রদত্ত এক সংবর্ধনা সভায় তিনি বলেন, বাঙালি এক অখণ্ড জাতি। তারা একই ভাষায় কথা বলে এবং একই সুসংহত দেশে বাস করে। তাদের আদর্শও এক, জীবনধারণের প্রণালীও এক। আমি ভারত বলতে পাকিস্তান ও ভারত দুটোই বুঝি। কারণ, ঐ বিভাগকে আমি কৃত্রিম বিভাগ বলে মনে করি (পৃষ্ঠা ৪১ ও ৪২)।’
১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র প্রণীত ও গৃহীত হয়। এই শাসনতন্ত্রে পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সংখ্যা সাম্য মেনে নেন জনাব হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। সোহরাওয়ার্দী ছিলেন শেখ মুজিবের নেতা। সংখ্যা সাম্য মেনে নেওয়ার পর আক্ষেপ করে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘মিয়াভাই কিন্তু কোনো দিনই এই প্যারিটি প্রথা মেনে নিতে পারেননি। তিনি প্রায়ই আক্ষেপ করতেন, জিন্নাহ সাহেব পর্যন্ত আমাদের সংখ্যা সাম্য মেনে নিয়েছিলেন। আর আজ আমাদের তা বিসর্জন দিতে হলো শুধুমাত্র নেতার জন্য (পৃষ্ঠা ৪১ ও ৪২)।’
মমিনুল হক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আগরতলা গমন ও প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে বিস্তৃত বিবরণ দিয়েছেন। আজকের লেখায় সেই বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ৮২ পৃষ্ঠায় তিনি বলেছেন, “১৯৫৮ সাল, মার্শাল ল’ জারির পূর্বে মিয়াভাই প্রথমবারের মত মর্নিং নিউজের বিখ্যাত সাংবাদিক এ্যান্থনি মাসকারেন হাসের কাছে তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এদের সঙ্গে আমাদের আর থাকা সম্ভব নয়। আমাদের নিজেদের সব কিছুই আলাদা করে নিতে হবে। আমাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী থাকতে হবে।’”
॥তিন॥
শেখ মুজিব যে অন্তত ৬২ সাল থেকেই স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং এ ব্যাপারে ভারতের সাথে বিভিন্ন চ্যানলে যোগাযোগ করছিলেন তার বিস্তারিত তথ্য এখন পাওয়া যায়। সেগুলো সময় ও সুযোগ হলে আলোচনা করা যাবে। মমিনুল হক বলছেন, একদিন মার্চেন্ট নেভীর ক্যাপ্টেন রহমান আমাদের সেগুনবাগিচার বাসায় এলেন আমাদের সাথে দেখা করতে। মিয়াভাই বলছিলেন, আইয়ুব খান আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা প্রায়ই জাতীয় সংহতির কথা বলেন। কিসের জাতীয় সংহতি? সংহতি তখনই হতে পারে যখন যাদের নিয়ে জাতি, তাদের মধ্যে একজাতি গঠনের সাধারণ উপাদান থাকে। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষেদের নিয়ে কখনোই এক জাতি হতে পারে না।
বঙ্গবন্ধু বলেন, আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ঐতিহ্যের কথা না হয় রেখেই দিলাম। কিন্তু স্থুলভাবে দেখতে গেলেও তো কোনো মিলই তুমি খুঁজে পাবে না। আমরা পরি লুঙ্গি ও পাঞ্জাবী বা শার্ট। ওরা পরে কুর্তা ও স্যালোয়ার। আমরা খাই মাছ ভাত, ওরা খায় চানা রুটি। আমরা লিখি বাঁ দিক দিয়ে, ওরা লেখে ডান দিক দিয়ে। তাই বলছিলাম, কোনো দিক দিয়েই যখন আমাদের কোনো মিল নেই তখন শুধুমাত্র ধর্মের দোহাই দিয়ে এই কৃত্রিমতা বজায় রাখা সম্ভব নয়। তাই যদি হতো তাহলে আজ মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশ মিলে একটি রাষ্ট্র গঠিত হতে পারতো। ওদের ভাষা তো এক। তবুও তা সম্ভব হয়নি।
১৯৬২ সালে মিয়াভাইয়ের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা উপস্থিতি কি তার সেই ভাবনা বাস্তবায়নের প্রয়াস? বিরোধী দলের চরমপন্থী গ্রুপের কয়েকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে মিয়াভাই স্থির করলেন, উনি দেশ ত্যাগ করবেন। প্রথমে ভারত, তারপর সেখান থেকে লন্ডন গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করবেন। আর বিশ^ জনমত গড়ে তুলবেন। যেমনটি করেছিলেন নেতাজি সুভাস চন্দ্র।
এই অন্তর্ধান পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তিনজন- প্রয়াত রুহুল কুদ্দুস সিএসপি, আহমদ ফজলুর রহমান এবং মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী নামের সিলেটের একজন চা বাগান মালিক।
আজ এ পর্যন্তই। সময় ও সুযোগ মিললে এ বিষয়ে একাধিক কলাম লেখার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ। তবে দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে গড়াচ্ছে তাতে কতদূর সময় ও সুযোগ মিলবে সেটি এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।