Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক মহলের ব্যাপক উদ্বেগ সত্ত্বেও নীরব সু চি

রোহিঙ্গাদের ওপর রক্তাক্ত নির্যাতন

| প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে নীরব ভূমিকার জন্য সমালোচিত হওয়ার পরও একই পথে হাঁটলেন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। এবারো তিনি রোহিঙ্গা নির্যাতনের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত বুধবার অং সান সু চি বলেন, তিনি ‘শান্তি এবং জাতীয়ভাবে সমঝোতা’র কাজ করবেন। তাঁর দেশ বর্তমানে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন। তবে এ সময় তিনি রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের গ্রামে শত শত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। দেশটিতে বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তদন্তের জন্য ওই এলাকায় কোনো স্বাধীন তদন্তকারীর প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের ব্যাপারে নীরব ভূমিকার জন্য এরই মধ্যে এই নেত্রী আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা মুখে পড়েছেন। এরপরও তিনি রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলেন। অন্যদিকে, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে সহিংসতার হাত থেকে বাঁচতে গত সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে বলে বাংলাদেশে জানিয়েছে জাতিসংঘ। মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে এরই মধ্যে উচ্ছেদ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা শুধু গায়ে কাপড়টুকু নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ব্যাংককে জাতিসংঘের অভিবাসী সংস্থার মুখপাত্র ভিভিয়ান ট্যান জানিয়েছেন, পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে এবং এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চালানো নির্যাতন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস হাইকমিশনারের অফিস থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে রক্তাক্ত সহিংসতায় আন্তর্জাতিক উদ্বেগে অং সান সু চি সরকারের সুনাম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ওপর বার্মা সরকারের চালানো দমন-পীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল। গত জুন মাসের একটি রিপোর্টের তথ্য পুনর্ব্যক্ত করে এতে বলা হয়, সরকার মূলত জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের ধরণ স্পষ্টতই মানবতাবিরোধী অপরাধ। জাতিসংঘের সাবেক প্রধান কফি আনান গত আগস্টে সপ্তাহব্যাপী ওই এলাকা পরিদর্শন করে ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন। পরিদর্শন শেষে তিনি রাখাইনে সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। চলতি মাসে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য সংখ্যালঘু হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর রক্তাক্ত নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশি রোহিঙ্গা নেতা আবু গালিব বলছেন, ইতিমধ্যেই দুই লাখ ২৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে, যাদের বেশিরভাগই অবৈধ। মাত্র ৩২ হাজার রোহিঙ্গা অভিবাসী হিসেবে বৈধভাবে নিবন্ধন করেছে। জাতিসংঘের অভিবাসী সংস্থার মুখপাত্র ভিভিয়ান ট্যান আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রবেশ করতে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে তাগাদা দিচ্ছে জাতিসংঘ। বিবিসি,রয়টার্স ও এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ