২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
জলাতঙ্ক একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ, যা সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না নিলে মৃত্যুই এর একমাত্র পরিণতি। এই আরএনএ ভাইরাস দিয়ে মস্তিস্ক প্রদাহ বা এনকেফালাইটিস হলে এই রুগীকে আর বাঁচান যায় না। তাই রেবিড পশু-পাখি দিয়ে আক্রান্ত হলে আতংকিত না হয়ে দ্রæত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সকল জেলা সদর হাসপাতালে, ঢাকার সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে, চট্টগ্রামের ট্রপিক্যাল ও ইনফেকশাস ডিজিজ হাসপাতাল ও কিছু কিছু উপজেলা হাসপাতালে বিনামূল্যে এর বিরুদ্ধে টিকা দেয়ার ব্যাবস্থা আছে। আর বাজারেও বাংলাদেশে তৈরী টিকা সহজলভ্য।
১। যেসব পশু-পাখি থেকে জলাতঙ্ক জীবাণু ছড়ায়ঃ
- গৃহপালিতঃ কুকুর, বিড়াল
- বন্যঃ শেয়াল, বানর, নেকড়ে, বাদুড়, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, বেঁজি, চিকা, জংলি-বিড়াল, খরগোশ
- গৃহ-পরিবেষ্টিতঃ গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, শূকর, গাধা, ঘোড়া, উট
২। ক্যাটাগরি অনুযায়ী জীবাণুর সংস্পর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থাঃ
- ক্যাটাগরি ১ঃ পশু যদি শুধু স্পর্শ করে বা অক্ষত চামড়ায় লেহন করেঃ কিছু করতে হবে না।
- ক্যাটাগরি ২ঃ আঁচড়, রক্তপাতহীন ছুলে যাওয়াঃ চামড়ার যতœ নেওয়া (পরে লিখছি) এবং টিকা নেওয়া লাগবে।
- ক্যাটাগরি ৩ঃ চামড়া ভেদ করা কামড়, ছুলে যাওয়া চামড়া কিংবা দেহাভ্যন্তরে লেহন, মুখমন্ডল বা পিঠে মেরুদন্ডের কাছাকাছি আঁচড়, রক্তখেকো বাঁদুরের আঁচড়ঃ চামড়ার যতœ, টিকা এবং ইমিউনো গেøাবিন ইনজেকশন নেওয়া লাগবে।
৩। চামড়ার যতেœ করণীয়ঃ
- তীব্র পানির ঝাঁপটায় ১৫ মিনিট ধরে ধুতে হবে।
- সাবান, জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন।
- গভীর ক্ষত হয়ে গেলে আক্রান্ত স্থানে ক্যাটাগরি ৩ এর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪। চামড়ার যতেœ বর্জনীয়ঃ
- হাত দিয়ে সরাসরি স্পর্শ করবেন না।
- মাটি, কয়লা, তৈল, চক লাগাবেন না।
- সেলাই, বৈদ্যুতিক কটারি (পুড়িয়ে দেওয়া) করবেন না। প্রয়োজনে সেলাই লাগলেও একটু আলগা করে করবেন।
- টিকা এবং ইমিউনো গেøাবিন একই সিরিঞ্জে দেওয়া যাবে না। ইমিউনো গেøাবিন দেওয়ার আগে ‘স্কিন টেস্ট’ করে নেওয়া উচিত।
৫। টিকার ধরণ এবং ডোজঃ
- জলাতঙ্কের দুই ধরণের টিকা রয়েছে। এক ধরণের টিকা মাংসপেশিতে (শুধুমাত্র বাহুতে) এবং অন্যটি চামড়ায় দিতে হয়। চামড়ায় দেওয়া টিকা বেশি কার্যকর, কম খরচ হলেও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে মাংসপেশির টিকাই বেশি প্রচলিত।
- পূর্বে কিংবা গত পাঁচ বছরে টিকা দেওয়া হয়নি এমন ব্যক্তির (কিংবা শিশু) জন্য ডোজঃ ০ (কামড় নয়, টিকা দেওয়ার দিন), ৩, ৭, ১৪ এবং ২৮ তম দিন। আরেকটি শিডিউল হচ্ছে ০ তম দিনে দুই বাহুতে ২ টিকা, ৭ এবং ২১ তম দিন।
- পশু আক্রমণের সাথে সাথে, অন্তত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত।
- কোন কারণে ইমিউনো গেøাবিন পাওয়া না গেলে (ক্যাটাগরি ৩) ০ তম দিনে দুই বাহুতে ২ টিকা নিতে হবে। ৩, ৭, ১৪ এবং ২৮ তম দিনে দিয়ে ডোজ পূর্ণ করতে হবে।
- গত পাঁচ বছরের মধ্যে টিকা নেওয়া থাকলেঃ ০ এবং ৩য় দিনে বুস্টার টিকা নিলেই হবে।
- ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে কামড়ের পূর্বেই টিকাঃ ০ এবং ৩য় দিন। এর পর আক্রান্ত হলে ০, ৭ এবং ২১/২৮ তম দিন।
- শুধুমাত্র গৃহপালিত কুকুর এবং বিড়ালের কামড়ের পর যদি সেই পশু পরবর্তী দশ দিন সম্পূর্ণ সুস্থ থাকে, তবে ১৪ এবং ২৮ তম দিনের টিকা না দিলেও হবে।
পরিশেষে একটি কথা বলা উচিত, জলাতঙ্ক মস্তিষ্কের এমন একটি গুরুতর অসুখ, যেটা প্রতিরোধের জন্য কোন ধরণের অবহেলা করা যাবে না। গর্ভবতী, স্তন্য দানকারী মা, নবজাতক শিশু, অতিবয়স্ক ব্যক্তিও টিকা নিতে পারবেন। কোন রকম সন্দেহ, প্রশ্ন থাকলেও অসুখের ভয়াবহতা বিবেচনা করে টিকা নিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
রেজিস্ট্রার (শিশু বিভাগ), আইসিএমএইচ, মাতুয়াইল, ঢাকা।
মোবাইল: ০১৯১২২৪২১৬৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।