পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘মুহাররাম’ ইসলামী আরবী বর্ষপুঞ্জির প্রথম মাস। মুহাররাম শব্দটি নাম বাচক বিশেষ্য নয়, বরং গুণবাচক বিশেষণ। কেন এই শব্দটি গুণবাচক বিশেষণরূপে খ্যাতি ও পরিচিত লাভ করেছে, তার পেছনে লুকিয়ে আছে নাতিদীর্ঘ এক ইতিহাস। এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, পিয়ারা নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)Ñএর ওপর কোরআন নাজিল হওয়ার পূর্বে প্রাচীন মক্কায় বছরের দুই মাস ছিল প্রথম সাফার ও দ্বিতীয় সাফার। আরবীতে আল সাফারাইনি এই দ্বিবাচনেক রূপ দেখে তা’ বোঝা যায়। প্রথম সাফার মাসটি মুহাররাম নামে গুণবাচক বিশেষণের রূপ পরিগ্রহ করলে পরবর্তীতে এই নামটিই বছরের প্রথম মাসের নাম হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। এ স্থলে দ্বিতীয় সাফার নামটি সাফার হিসেবেই বহাল থাকে। তাছাড়া অপর একটি মত এই যে, প্রাচীন আবর বৎসরের প্রথম অর্ধবছরে তিনটি মাস ছিল এবং এই তিনটি মাসের প্রত্যেকটিতে দু’টি করে মাস ছিল। যেহেতু দুই সাফারের পরে দুই রাবি এবং দুই জুমাদা ছিল। তাই, দুই সাফারের প্রথমটি নিষিদ্ধ ও অলঙ্খনীয় ছিল বলে এর গুণবাচক আখ্যা দেয়া হয়েছিল মুহাররাম।
কালক্রমে এই নামটিই বৎসরের প্রথম মাসের নাম হিসেবে সর্বত্র পরিচিত ও নিঃসন্দেহে গৃহীত হয়ে গেছে। সুতরাং কালের খাতা এবং ইতিহাসের পাতার ওপর নজর বুলালে দেখা যায় যে, মুহাররাম মাসের ৩০ দিনের মধ্যে প্রথম তারিখটি বৎসরের প্রারম্ভ বলে খ্যাত। তাছাড়া নিম্নলিখিত তারিখগুলো ও বিশেষভাবে খ্যাতি লাভ করেছে। যথা : (ক) মুহাররাম মাসের ৯ ও ১০ তারিখে সিয়াম পালন করার নির্দেশ হাদীস শরীফে এসেছে। (খ) ১০ তারিখে কোনো কোনো মুসলিম অধ্যষিত অঞ্চলে কারবালাবার্ষিকী উদযাপিত হয়ে থাকে। (গ) মুহাররাম মাসের ১৬ তারিখটি বাইতুল মুকাদ্দাসকে কিবলা নির্ধারণ করার দিন হিসেবে স্মরণ করা হয়। (ঘ) মুহাররাম মাসের ১৭ তারিখ আবরাহা হস্তিবাহিনী পবিত্র কাবাগৃহকে ধ্বংস করার জন্য মক্কায় আক্রমণ করেছিল। (ঙ) ১০ই মুহাররামে হযরত ইস্রাফিল (আ.)-এর শিঙ্গার ফুৎকারে সমগ্র সৃষ্টি জগতে কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।
অতএব, এই সম্মানিত মাসে মোমিন মুসলমানদের আমল ও কর্তব্য নিষ্ঠা কেমন হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে আল কোরআনে সুস্পষ্টভাবে দিকনিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : (ক) আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কম্পিত হয়। (খ) যারা তাদের বিপদাপদে ধৈর্য্য ধারণ করে। (গ) এবং যারা সালাত কায়েম করে। (ঘ) এবং যারা তাদেরকে আমি যে রিজিক দিয়েছি, তা’ হতে ব্যয় করে।’ (সূরা হাজ্জ : আয়াত-৩৫)।
মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে এই মুহাররাম মাসে প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মাদী হওয়ার তৌফিকে রাফীক এনায়েত করুন, এটাই আজকের একান্ত প্রত্যাশা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।