Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

‘বন্যা জিহাদের’ ভুয়া খবর ছড়িয়েছে আসামে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভারতের আসামে বন্যা জিহাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া এক ব্যক্তি বিবিসি-কে শুনিয়েছেন তার দুর্ভাগ্যের কাহিনী। ভারতের আসামে ভয়াবহ বন্যার জন্য স্থানীয় মুসলিমদের দায়ী করে অনলাইনে বেশকিছু ভুয়া খবর ছড়িয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, তারা ‘বন্যা জিহাদ’ করেছে। এ অভিযোগের পেছনে আসলেই কী কোনও সত্য আছে, নাকি সবটাই সংখ্যালঘু নিপীড়ন? বন্যা জিহাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া এক ব্যক্তি বিবিসি-কে শুনিয়েছেন তার দুর্ভাগ্যের কাহিনী : গত ৩ জুলাই ভোরে নাজির হোসাইন লস্করের বাড়ির দরজায় পুলিশ যখন কড়া নাড়ে তখন তিনি আকাশ থেকে পড়েন। বছরের পর বছর ধরে আসামে একজন নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন নাজির। রাজ্যের বন্যা প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণেও কাজ করেছেন তিনি। অথচ ৩ জুলাই ভোরে পুলিশ তাকে ‘সরকারি সম্পদ নষ্ট’ করার, আরও সুনির্দিষ্টভাবে বললে শহর রক্ষা বাঁধ ধ্বংস করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। দুঃখের সঙ্গে নাজির বলেন, ‘‘আমি ১৬ বছর ধরে সরকারের হয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ করেছি। কেনো আমি সেগুলোর কোনোটির ক্ষতি করব?” বিবিসি জানায়, প্রায় ২০ দিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বের হন নাজির। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তার পক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু তারপর থেকে তাকে ঘিরে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবরের ঝড় বইছে। ‘আমি ভেবেছিলাম আমার ওপর হামলা হতে পারে’। গত মে ও জুন মাসে আসামে দুইবার বন্যা হয়, মারা যান অন্তত ১৯২ জন। আসামে সাধারণত প্রত্যেক বর্ষা মৌসুমেই কমবেশি বন্যা হয়। কিন্তু এবার সময়ের আগেই বর্ষা শুরু হওয়ায় এবং অস্বাভাবিক ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা মারাত্মক রূপ নিয়েছিল। কিন্তু কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী মনে করেন, শুধু ভারি বৃষ্টিপাতই কারণ নয়, বরং এখানে আরও ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছিল। তাদের দাবি, এই বন্যা মানুষের সৃষ্টি, বিশেষ করে একদল মুসলমান ইচ্ছা করেই প্রতিবেশী হিন্দু অধ্যুষিত নগরী শিলচরে প্লাবন ঘটিয়েছে। যদিও নিজেদের দাবির পক্ষে তারা কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বন্যা জিহাদ’ নিয়ে ভুয়া খবরের ঝড় বয়ে যায়। গ্রেপ্তার হন নাজির ছাড়াও আরো তিনজন মুসলমান। খবরে নাজিরের নাম উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে ‘বন্যা জিহাদ’ করার অভিযোগ করা হয়। ওই সময়ে কারাগারেই ছিলেন নাজির। তিনি বলেন, ‘‘খবরটি প্রচারের পর আমি আতঙ্কে ওই রাতে ঘুমাতে পারিনি। কারাগারের অন্যান্য বন্দিরা এ নিয়ে কথা বলছিল। আমি ভেবেছিলাম আমার ওপর হামলা হতে পারে।” যদিও বিজেপি বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু ভারত জুড়ে যা ঘটছে তাতে বিষয়টি এখন অনেক স্পষ্ট। জামিনে ছাড়া পেলেও আসামের নাজিরের দিন এখনও আতঙ্কে কাটে। এবিপি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আসাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ