Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাওনাদি পাওয়া-জীবন রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্মারকলিপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২২, ৫:৩২ পিএম

বাংলাদেশ এক্সটেনশন এডুকেশন সার্ভিসেস (বিজ) এর কাছে পাওনা সকল টাকা ফেরতে পেতে ও জীবন রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ও দুদক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে বগুড়া সদর থানার বারপুর উত্তর পাড়া গ্রামের মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম। গতকাল বুধবার তিনি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে সাইফুল ইসলঅম অভিযোগ করে বলেন, আমি ১৯৯৭ সালের ২০ অক্টোবর বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার গুজিয়া শাখায় বাংলাদেশ এক্সটেনশন এডুকেশন সার্ভিসেস (বিজ) এর মাঠ সংগঠক হিসেবে নিয়োগ পাই। দীর্ঘ আট বছর সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার পর ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারি গাজীপুরের বোর্ডাবাজার শাখায় ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। চাকরিকালীন সময় প্রায় প্রতিবছর আমার ইনক্রিমেন্ট হয়। হঠাৎ বিজ’র নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম (রবিন), পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও মানব সম্পদ) মো. আব্দুস সালাম ও তৎকালীন কর্মকর্তাদের নির্দেশে বিগত ২০১০ সালের ১৩ জুন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, মনগড়া ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য তুলে ধরে বিজ’র এর উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও জনসংযোগ) ডি আলম স্বাক্ষরিত একটি পত্র দিয়ে আমাকে ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য ১৭ জুন ২০১০ তারিখের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন। আমি উক্ত সময়ের মধ্যে লিখিত জবাব দেই। তারপরও ২২ জুন ২০১০ তারিখে বিজ’র এর উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও জনসংযোগ) ডি আলম স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে আমাকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। পরবর্তীতে আমি আমার সকল পাওনাদি পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ জানাই। বিজ কর্তৃপক্ষ পাওনাদি পরিশোধ না করিয়া নানা তালবাহানা করে।
তিনি আরো বলেন, একপর্যায়ে বিজ কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে গাজীপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড (জয়দেবপুর) আদালতে সি.আর মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৮৯৯/২০১১। দীর্ঘদিন পর ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর ওই মামলা থেকে আমি খালাস পাই। এরপর ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর বিজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাওনাদি চেয়ে চিঠি প্রদান করি। পরে বিজ র্কর্তৃপক্ষ গাজীপুরে ফৌজদারী আদালতে আপীল দায়ের করেন। যার নম্বর- ২৬৯/২০১৮। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২২ মার্চ আদালত আপীলেও আমাকে খালাস প্রদান করেন। এরপর আমি আমার মোট পাওনা ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৮শত ৮১ টাকা বিজ কর্তৃপক্ষের কাছে পরিশোধের জন্য রেজিষ্টার্ড ডাকযোগের মাধ্যমে অনুরোধ জানাই।
এরপরও পাওনাদি পরিশোধ না করায় আমি ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর শ্রম আদালতে ২টি মামলা দায়ের করেন। যার বাংলাদেশ শ্রম আইন (ফৌজদারী) মোকদ্দমা নং- ২৭৮/২০২১ এবং ৮৯৬/২০২১। সেই মামলায় আসামীরা বারবার হাজিরা না দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। গত ২৬ জুলাই ২০২২ইং তাদেরকে রাজধানীর গুলশান থানা পুলিশ গ্রেফতারও করে কিন্তু টাকার ক্ষমতাবলে অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই তারা ছাড়া পেয়ে যায়। ছাড় পেয়েই তারা আমাকে ও আমার স্ত্রী-সন্তানদের গুম করে মেরে ফেলাসহ নানা ধরণের ভয়-ভীতি ও হুমকি দেন। এ বিষয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। যার নম্বর- ১৯২৭। তারিখ- ৩১ জুলাই ২০২২ইং। এমতাবস্থায় আমরা ভয় ও ভীতির মধ্য দিয়ে জীবন পার করছি তারা যেকোনো সময় আমাদের বড় ধরণের ক্ষতি সাধন করতে পারে। আমি ও আমার পরিবার তাদের হাত তেকে রেহাই চাই এবং আমার সকল পাওনাদি চাই। এবিষয়ে আমি আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্মারকলিপিতে সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, এই বিজ কর্তৃপক্ষের নানা নির্যাতণের শিকার হয়ে গাজীপুরের বোর্ডবাজার শাখায় একজন আত্মহত্যা করেন। এছাড়াও আরো কয়েকটি স্থানে এমন ঘটনা করেছে। কটিয়াদির ইউনিট ম্যানেজার আবু বকর সিদ্দিক, গাইবান্ধার মাঠ সংগঠক মোস্তফা, ঢাকার আরবান অফিসের মহিলা ইউনিট ম্যানেজার শামসুন্নাহারসহ অসংখ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্থ আত্মসাৎ করেছে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো পুরাতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওনাদি পরিশোধ না করে তাদেরকে বের করে দেয়া।
এপর্যন্ত তারা আমিসহ শতশত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওনাদি পরিশোধ না করে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করেছে। প্রতিবাদ করলে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করে এবং মেরে ফেলাসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়।
এও অভিযোগ রয়েছে যে, বিজের মালিক কর্তৃপক্ষ এনজিও’র আইন-কানুন না মেনে নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিজের কার্যক্রম চালাচ্ছে। তারা নামে-বেনামে গড়ে তুলেছে সম্পদের পাহাড়। (বিজ) এর নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম (রবিন) বিপুল পরিমান অর্থ বিদেশে প্রাচার করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীসহ দামী দামী মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে।
স্মারকলিপিতে তিনি তার সকল পাওনাদি ফেরত চান এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্মারকলিপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ