বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ব্যাপক জনবল সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক গত অর্থ বছরে দক্ষিণাঞ্চলে ১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা বিভিন্ন ধরনের ঋণ বিতরণ ছাড়াও ৮৬৭ কোটি আদায়ের মাধ্যমে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা মুনফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি উপজেলায় দেশের একমাত্র কৃষি ভিত্তিক বিশেষায়িত রাষ্ট্রীয় এ ব্যাংকটির ১২৯টি শাখার মধ্যে গত অর্থ বছরে ৭২টি মুনফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে ৫৭টি শাখা মুনফায় ছিল। এ অঞ্চলে ব্যাংকটির প্রায় সাড়ে ৪ লাখ গ্রহীতার মধ্যে কৃষি ঋন সহ বিভিন্ন ধরনের ঋন বিতরনের ফলে ব্যাংকটির বর্তমান ঋণের স্থিতি প্রায় ২ হাজার ৮শ কোটি টাকা। করোনা মহামারীর সংকটের মধ্যেও সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের পল্লী এলাকার অর্থনীতি সচল রাখতে ব্যাপক অবদান রাখে কৃষি ব্যাংক।
সদ্য সমাপ্ত অর্থ বছরে ব্যাংকটি দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকা নতুন আমানত সংগহের ফলে বর্তমানে স্থিতি ২ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। ব্যাংকটিতে নতুন প্রবর্তিত মিলেনিয়ার, লাখপতি স্কিম ও মাসিক মুনফা প্রকল্প সহ ৬টি স্কিমের পাশাপাশি সঞ্চয়ী ও চলতি হিসেব মিলিয়ে গত অর্থ বছরে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৫৪ হাজার নতুন হিসেবে খোলা সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক স্বল্প সুদে শষ্য ঋন বিতরনের পাশাপাশি মাত্র ৪% সুদে মসলা জাতীয় ফসলের জন্যও ঋণ বিতরন করছে। করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্থ ঘরে ফেরাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ঋনদান কর্মসূচীর আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষের মাঝে কৃষি ব্যাংক মাত্র ৬% সুদে ঋণ বিতরন করছে। পাশাপাশি বিশেষ এসএমই কর্মসূচীর আওতায়ও ৪% সুদে প্রায় সাড়ে ৩শ উদ্যোক্তার মাঝে আরো ১০ কোটি টাকা ঋণ বিতরন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
একইভাবে যে কোন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ কর্মসূচীর আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষ বিশেষ ঋণ লাভ করেছেন। রাষ্ট্রীয় বিশেষায়িত এ বানিজ্যিক ব্যাংকটি ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে নিজস্ব তহবিল ছাড়াও করোনা মহামারীতে সরকারী প্রনোদনা প্যাকেজের আওতায়ও সবগুলো ঋণ বিতরন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে।
তবে এখনো ব্যাংকটিতে অনাদায়ী ঋণের পারিমান প্রায় ২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা হলেও আদায় যোগ্য অনাদায়ীর পারিমান মাত্র ৮৮ কোটি টাকার মত। এসবের মধ্যে প্রায় ১৪.৬৬ কোটি টাকা আদায়ে ২ হাজার ৯৬১টি সার্টিফিকেট মামলা ছাড়াও অর্থঋণ আদালতে অরো বেশ কিছু মামলা চলমান রয়েছে।
অনাদায়ী ঋনের একাটি বড় অংশই এতদিন ছিল দ্বীপজেলা ভোলাতে। মেঘনা ও তেতুলিয়া বেষ্টিত এ জেলায় নদীর ভাঙনে হাজার হাজার কৃষক সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ায় তাদের অনেকেরই খুজে পাওয়া দুস্কর ছিল। যাদের অস্তিত্ব বর্তমান রয়েছে, তারাও কৃষিজমি সহ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে হারিয়ে ইতোমধ্যে উদ্বাস্তুতে পরিনত হয়েছেন। ফলে বাস্তুচ্যুত নিত্য অভাবী ঐসব মানুষের কাছ থেকে বকেয়া ঋণ আদায় দুরুহ হয়ে পড়লেও গত অর্থ বছরে এ দ্বীপ জেলাটি থেকে বিপুল পরিমান আদায়যোগ্য অনাদায়ী ঋন আদায় সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে। এমনকি যারা ঋণ পরিশোধ করেছেন তাদের নতুন করে ঋন প্রদানও করেছে কৃষি ব্যাংক।
দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ব্যাংকের শাখাগুলো গত অর্থ বছরে প্রায় পৌনে ২শ কোটি টাকার বৈদেশিক রেমিটেন্স গ্রহন করে গ্রাহক সহ প্রাপকের কাছে পৌছে দিয়েছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি উপজেলার ১২৯টি শাখাকেই অন লাইনে আনার ফলে সুদুর পল্লী এলাকার যেকোন মানুষ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে সারা দেশের যেকোন স্থানের ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহনে সক্ষম হচ্ছেন।
তবে দেশের সর্ববৃহত রাষ্ট্রীয় বিশেষায়িত এ ব্যাংকটির লক্ষ্য পুরন সহ জনসেবায় এখন সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে আছে জনবল সংকট। দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি উপজেলার ১২৯টি শাখা সহ বিভাগীয় ও আঞ্চলিক অফিসগুলোর জন্য ১ হাজার ৬৬১ জনের মঞ্জুরিকৃত জনবলের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৮০৪ জন। যা মঞ্জুরিকৃত পদের মাত্র ৪৮%। ফলে ঋন বিতরন ও আদায় সহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম যথেষ্ঠ ব্যাহত হলেও খুব সহসা পরিস্থিতি উত্তরনেরও সম্ভবনা নেই বলেও মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল। এমনকি কোন কোন শাখা মাত্র ৩ জন জনবল নিয়ে কাজ করছে। ফলে ঋণ বিতরন সহ আদায় যথেষ্ঠ ব্যাহত হচ্ছে।
এসব বিষয়ে কৃষি ব্যাংকের বরিশাল বিভগীয় জেনারেল ম্যানেজার সালাহ উদ্দীন রজিব-এর সাথে আলাপ করা হলে সমস্যার বিষয়টি সদর দপ্তর অবগত আছে বলে জানিয়ে পরিস্থিতি উত্তরনে পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে সব ধরনের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ও কৃষিÑঅর্থনীতি সচল রাখতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রতিটি কর্মী নিরলশভাবে কাজ করছে বলেও দাবী করেন সালাহ উদ্দীন রজিব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।