পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত নরসিংদী ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদী আঞ্চলিক মহাসড়কটি যথাযথমানে প্রশস্ততায় উন্নীত হচ্ছে। এই সড়কটির উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হলে যোগাযোগের সুবিধা ভোগ করবেন প্রায় ছয়টি জেলার লাখ লাখ মানুষ। অর্থনৈতিক উন্নতি ও এই এলাকার কৃষি ও শিল্প পণ্যের বাজারজাতকরণ হবে সহজ। রাজধানীর সাথে স্বল্প সময়ের যোগাযোগের কারণে শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নতি হবে।
ইতোমধ্যে নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতায় ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদী আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথমানে প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গত ১৯ জুন প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসি সম্মেলন কক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদী আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণের প্রকল্প প্রস্তাবের খবর শুনে ইতোমধ্যে স্থানীয়দের মধ্যে উচ্ছাস দেখা গেছে। এই এলাকার লোকজন মনে করছেন গুরুত্বপূর্ণ এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি উন্নয়ন হলে এই এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বাড়বে। সাথে সাথে এই এলাকার কৃষি, শিল্প, মৎস্য গার্মেন্টসসমগ্রী সহজেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থানান্তর করা যাবে। এছাড়াও বিদেশের বাজার সহজেই ধরতে পারবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতায় আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথমানে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের মাধ্যমে ব্যয় সাশ্রয়ী, উন্নত ও নিরাপদ সড়ক স্থাপন করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে ভূমি, পুনর্বাসন (মসজিদ, মন্দিরসহ অন্যান্য স্থাপনা পুননির্মাণ), মাটির কাজ, পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, বিদ্যমান পেভমেন্ট পুনঃনির্মাণ, নতুন হার্ড সোল্ডার, সার্ফেসিং, রিজিড পেভমেন্ট, কালভার্ট পুনঃনির্মাণ, কালভার্ট প্রশস্তকরণ, আন্ডারপাস, সসার ড্রেন, আরসিসি ইউ ড্রেন, কংক্রিট সেøাপ প্রটেকশন, টো-ওয়াল, আরসিসি রিটেনিং ওয়াল, আরসিসি বিম প্যালেসাইডিং, সাইড রোডগুলোর উন্নয়ন, ইন্টারসেকশন এবং বাস-বে নির্মাণ করা।
ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদি সড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক। সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ৪৮ কিলোমিটার। সড়কটি ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়কের নরসিংদীর ইটাখোলা থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করেছে। সড়কটির ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতাধীন ৩২ দশমিক ৭০ কিলোমিটার এবং কিশোরগঞ্জ জেলার আওতাধীন ১৫ দশমিক ৩০ কিলোমিটার। ইটাখোলা হতে কটিয়াদি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ৪৮ কিলোমিটার সড়কের বিদ্যমান প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ মিটার এবং দুই লেন বিশিষ্ট। নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতাধীন ৩২ দশমিক ৭০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রথম ১৬ কিলোমিটার অংশ গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় মজবুতিকরণ করা হলেও অবশিষ্ট ১৬ দশমিক ৭০ কিলোমিটারের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। যেখানে বহু বছর ধরে কোন প্রকার বড় ধরনের সংস্কার কাজ না হওয়ায় এ সড়কাংশের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের ডিপ্রেশনস, আন্ডোলেশনসহ পেভমেন্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সড়কটির প্রস্থ কম হওয়ায় প্রায়ই বিপরীতমুখী ট্রাফিকগুলো দুর্ঘটনা কবলিত হয়।
নরসিংদীর মনোহরদী, শিবপুর ও বেলাব উপজেলার মানুষের জন্য রাজধানীসহ জেলা শহরে যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৯৯০ সালে সড়কটি তৈরি করা হয়। বর্তমানে কটিয়াদী ও কিশোরগঞ্জ সদরের বাসিন্দারা এটিকে বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার করায় এ সড়কের ওপর চাপ আরও বেড়ে গেছে। ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদী সড়কের প্রস্থ কম থাকায় বড় যান চলাচলের জন্য উপযোগী নয়। কিন্তু প্রতিনিয়ত বড় বড় যানবাহনের চলাচল করে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় এই সড়কে চলাচল করা যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এই সড়ক ব্যবহার করে বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল করায় এবং শহর এলাকায় ছোট বড় যানবাহনসহ অন্যান্য যানবাহ রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে যানজটের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে সড়কটি প্রশস্তকরণ যথাযথমানে উন্নতীকরণ করা প্রয়োজন। তবে এই আঞ্চলিক মহাসড়কের ইটাখোলায় ইতোমধ্যে রাস্তার দুই পাশে প্রভাবশালীরা দখল করে গড়ে তোলেছেন দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ইটের ভাটা, বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকার করণে প্রত্যেকটি মোড়ে মোড়ে লেগে থাকে যানজট। আর এ যানজটের কবলে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় রাস্তায়ই।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদি সড়কটি এই এলাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক। এই সড়কটি কয়েকটি জেলার সড়ক যোগাযোগ সহজ করেছে। এই এলাকটি ঢাকার অতি কাছের হলেও শুধু এই সড়কের করণে যোগাযোগ সময় সাপেক্ষ ব্যপার ছিলো। এটি উন্নয়ন হলে সহজেই যাতায়াত করা যাবে। শিল্পায়নসহ অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন ঘটবে এই এলাকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।