রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ সঙ্ঘটনের অভিযোগে গাম্বিয়ার করা মামলায় মিয়ানমারের প্রাথমিক আপত্তি খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। গতকাল শুক্রবার আদালতের এ আদেশের ফলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলতে আপাতত বাধা থাকলো না। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পিস প্যালেসে আইসিজে সভাপতি বিচারক জোয়ান ই দোনোঘুই গতকাল স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় এ রায়টি পড়েন।
আদালত রায়ে বলেন, ‘কনভেনশন অন দ্য প্রিভেনশন অ্যান্ড পানিশমেন্ট অব দ্য ক্রাইম অব জেনোসাইড এর আর্টিকেল ৯ এর ভিত্তিতে ১১ নভেম্বর ২০১৯ সালে গাম্বিয়া যে মামলার আবেদন করছে সেটি গ্রহণযোগ্য’।
২০১৭ সালে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে দায়ের করা গণহত্যা মামলায় মিয়ানমারের প্রাথমিক আপত্তির বিষয়ে গতকাল শুক্রবার রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের এ আদালতে মিয়ামারের আপত্তির বিষয়ে যুক্তিতর্ক শুনানি হয়েছিল।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন। মিয়ানমারে সামরিক দমন-পীড়নের ফলে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা প্রবেশ করে। জাতিসংঘ যাকে ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ বলে অভিহিত করেছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধ বা দোষীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় গাম্বিয়া ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে।
মামলায় প্রাথমিক শুনানির পর আইসিজে তাদের দাবিগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মনে করে এবং রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে নির্দেশ দেয়। ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় ৫০০-পৃষ্ঠারও বেশি একটি স্মারক দাখিল করে। যেখানে দেখানো হয় কীভাবে তৎকালীন মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছিল। স্মারকটিতে গাম্বিয়ার মামলার সমর্থনে ৫ হাজার পৃষ্ঠারও বেশি সহায়ক উপাদান সংযুক্ত করা হয়। সূত্র : এপি।