পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
নূপুর শর্মা ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। তিনি ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)’র জাতীয় মুখপাত্র ছিলেন। তিনি প্রায়শই ভারতীয় টেলিভিশন বিতর্কে একজন সরকারি মুখপাত্র হিসেবে বিজেপির প্রতিনিধিত্ব করতেন। ২৬ মে ২০২২ তারিখে এক টেলিভিশন বিতর্কে নূপুর শর্মা মহানবী (সা.)কে নিয়ে আক্রমণাত্মক ও অসম্মানজনক মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় উত্তর প্রদেশের কানপুরের মুসলিমরা প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে। স্থানীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই গোষ্ঠির সংঘর্ষে আহত হয় অনেকে। পাথর বৃষ্টি ও দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। বিক্ষুব্ধ মুসলিমদের উপর কানপুর পুলিশ দমন-নিপীড়ন শুরু করে। দেড় হাজার মুসলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উত্তরপ্রদেশ সরকার আধা সামরিকবাহিনী মোতায়েন করে। বিজেপি নেত্রীর বিতর্কিত একটি মন্তব্যেই উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয় উত্তরপ্রদেশের কানপুরে। কানপুর পুলিশ হাজারেরও বেশি মুসলিমের বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইনে মামলা করে। কানপুরের পুলিশ কমিশনার বিজয় সিং মীনা সাফ জানিয়ে দেন, অভিযুক্তদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। চলবে বুলডোজারও। ঘোষণা অনুসারে বুলডোজার দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ঘরবাড়ি মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। এতকিছুর পরও বিজেপি সরকার কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। এ ঘটনায় মুসলিম বিশ্ব ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। উপসাগরীয় দেশ কুয়েত, কাতার, দুবাই, সৌদি আরব, জর্ডান, ইরাকসহ মুসলিম দেশগুলো তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ভারতীয় পণ্য বর্জন ও ভারতীয় শ্রমিকদের ছাঁটাই করা শুরু করে। ইরান, কুয়েত, কাতারসহ বিভিন্ন দেশ নিন্দা জানাতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। সৌদি আরব কড়া ভাষায় বিবৃতি প্রদান করে। নূপুর শর্মার বিতর্কিত ওই মন্তব্যের জেরে ওআইসি ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে।
বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের প্রতিবাদে বিজেপি নড়েচড়ে বসে। বিজেপি নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। দলের কেন্দ্রীয়কমিটি দলীয়পদ থেকে নূপুর শর্মাকে বহিষ্কার করে। নূপুর শর্মার কাছে পাঠানো হয় সাময়িক বরখাস্তের চিঠি। বরখাস্তের চিঠিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির লিখিত ভাষ্য ছিল নিম্নরূপ: ‘আপনি বিভিন্ন বিষয়ে দলের অবস্থানের বিপরীত মতামত প্রকাশ করেছেন। আপনাকে দল থেকে এবং আপনার দায়িত্ব থেকে অবিলম্বে সাময়িভাবে বরখাস্ত করা হচ্ছে।’ শুধু বিজেপিই নয়, নূপুর শর্মার মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। দেশটির শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য হলো: ‘দেশজুড়ে অশান্তির জন্য দায়ী নূপুর শর্মা। তাঁর উচিত দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া।’ সুপ্রিমকোর্টের এ পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সুপ্রিমকোর্টে বিজেপির সাসপেন্ডেড জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মা ভর্ৎসিত হওয়ার পর মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, নূপুরের পাশাপাশি ক্ষমা চাক বিজেপিও। তাদের বক্তব্য, নূপুর শর্মাকে সুপ্রিমকোর্ট যে ভাষায় তিরস্কার করেছে তাতে বিজেপির মাথা হেঁট হয়ে যাওয়া উচিত। শীর্ষ আদালতে শুনানির শুরু হতেই তোপের মুখে পড়েন প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মা। গোটা দেশের অশান্ত পরিবেশের জন্য তাঁকে দায়ী করে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, ‹‘আপনার আলটপকা মন্তব্যে দেশে আগুন জ্বলে গিয়েছে। সারা জায়গায় যে অশান্ত পরিস্থিতি, তার জন্য একা এই মহিলাই দায়ী। উনিই দেশের নিরাপত্তায় হুমকির কারণ। যেভাবে উনি গোটা দেশে আবেগে সুড়সুড়ি দিয়েছেন। দেশে যা ঘটছে তার জন্য এই মহিলা একাই দায়ী। বিচারপতি সূর্য কান্ত আরও বলেন, উনি একটা দলের মুখপাত্র তো কী হয়েছে! উনি ভাবছেন, ক্ষমতার ব্যাকআপ আছে ওঁর সঙ্গে, তাই দেশের কানুনকে সম্মান না জানিয়ে যে কোনো রকম মন্তব্য করতে পারেন!’
একইসঙ্গে বিচারপতির নির্দেশ ছিল এমন: ‘আপনার উচিত টিভিতে এসে সারাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া। আপনি তাদের (মুসলিমদের) ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করেছেন।’ সুপ্রিমকোর্টের এই কড়া ভাষাকে হাতিয়ার করেই বিজেপিকে আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘দেশের বর্তমান হিংসাত্মক পরিবেশের জন্য নূপুর শর্মাকে দায়ী করে একেবারে ঠিক করেছে সুপ্রিমকোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই মন্তব্য আসলে গোটা দেশের মানসিকতার প্রতিফলন। ক্ষমতাসীন দলের উচিত লজ্জায় মাথা নত করে বসে থাকা।’ এদিকে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের এই মন্তব্যকে ঘিরে ইতোমধ্যেই শাসকদলের অন্দরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি নূপুর শর্মাকে ঘিরে বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে দুটি এফআইআর দায়ের করেছে মুম্বাই পুলিশ। সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। এই ঘটনার জন্য যোগী সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করেছেন সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব। অপরদিকে, উত্তর প্রদেশের কানপুরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং গোষ্ঠিহিংসার জন্য বিজেপি’র নূপুর শর্মার প্ররোচণামূলক বিবৃতিকে দায়ী করে তাঁকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছে স্বরাজ ইন্ডিয়া। স্বরাজ ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক রাম বচ্চন বলেন, ‘টেলিভিশনে নূপুর শর্মার প্ররোচণামূলক বক্তব্যের জন্যই কানপুরের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও গোষ্ঠিহিংসার ঘটনা ঘটেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতার সমর্থনে বিজেপি সারাদেশেই এমন ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। স্বরাজ ইন্ডিয়া কানপুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জানাচ্ছে, উত্তর প্রদেশের যোগী সরকারের পুলিশের উচিত নূপুর শর্মাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা।’ নূপুরের বক্তব্যটি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে দেশে ও বিদেশের মুসলিমরা নূপুরের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। ভারতেও মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় অংশ রাজ্যে রাজ্যে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের মাধ্যমে নূপুরের শাস্তি দাবি করছে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশী হওয়া সত্ত্বেও এসব থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। পুরো বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ একেবারেই নীরবতা পালন করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমরা নবীজির সম্মানে আপস করছি না। মহানবী (সা.)-এর প্রতি অবমাননা যখনই হোক এবং যেখানেই ঘটুক আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। তবে ভারত সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে এবং আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা তাদের অভিনন্দন জানাই। এখন আইন তার নিজস্ব পথেই চলবে। বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ এরকমই মন্তব্য পেশ করেছেন।
উল্লেখিত আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে, নূপুর শর্মা ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিকদলের ক্ষমতাধর এক মুখপাত্র। তারপরও ইসলামের অবমাননার কারণে নিজ দেশে তিনি বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক তিরস্কৃত হয়েছেন এবং নিজের দল থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তার সম্পূর্ণ বিপরীত। জানা গেছে, বাংলাদেশের নড়াইল সদর উপজেলার একটি কলেজের নাম ‘মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ’। ঐ কলেজের এক ছাত্র রাহুল দেব রায় গত ১৬ জুন ফেসবুকে নূপুর শর্মার পক্ষে একটি স্ট্যাটাস দেয়। রাহুল দেব ফেসবুক স্ট্যাটাসে নূপুর শর্মার একটি ছবি সংযুক্ত করে। আর তাতে লেখা ছিল ‘প্রণাম নিও বস নূপুর শর্মা, জয় শ্রী রাম!’ রাহুল দেব রায় নিশ্চয়ই জানতো যে, এ স্ট্যাটাস দেখে স্বাভাবিকভাবে কলেজে উত্তেজনা দেখা দেবে। আর সেটা ছড়িয়ে পড়বে দেশে-বিদেশে। আর তাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অবনতি ঘটবে। এটা জানার পরেও রাহুল দেব স্ট্যাটাটি দেয়ার ব্যাপারে অটল রইলো। ঘটনা যা ঘটবার তাই ঘটলো। তিন দিন ধরে স্ট্যাটাসটি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়াতে লাগলো। রাহুল দেব রায়ের সহপাঠিরা সত্যিই উত্তেজিত হলো। তার সহপাঠিরা তাকে স্ট্যাটাসটি মুছে দিতে অনুরোধ করলো। কিন্তু রাহুল দেব রায় গোয়ার্তুমি করলো। সে স্ট্যাটাসটি না মুছার সিদ্ধান্তে অটল রইলো। সমাধানের জন্য বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে উপস্থাপিত হলো। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে অনেক কালক্ষেপণ হলো। ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলো। আশেপাশের জনতার সমাগম ঘটলো। তাদের উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করলো। ততক্ষণে পানি অনেক দূর গড়ালো। অনেকে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারে মত্ত হয়ে পড়লো। ফলে দুঃখজনকভাবে অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরানো হলো। অথচ তাৎক্ষণিকভাবে যদি স্ট্যাটাসটি ওই ছাত্রকে দিয়ে মুছানো যেতো। অধ্যক্ষের কক্ষে উপস্থিত সকলের কাছে রাহুল দেব ভুল স্বীকার করলে বিষয়টি ওখানেই সমাধান হয়ে যেতো। কিন্তু তা হয়নি। সেখানে হয়েছে প্রতিহিংসার জয়। হয়েছে তথাকথিত বাক স্বাধীনতার নামে ইসলাম অবমাননার জয়। কারণ, ঘটনার সূত্রপাত ১৮ জুন। আর ২৭ জুন পালিত হয় জুতার মালা পরানোর প্রতিবাদী কর্মসূচী। এ কর্মসূচী পালন করেন দেশের অসাম্প্রদায়িক নামের প্রগতিবাদী জোট। প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে, ঘটনা ঘটার ৯ দিন পর কেন এই কর্মসূচী? তারা এতদিন কোথায় ছিল? এ কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে রাহুলদেবের কৃত অপরাধ আড়াল হয়ে গেল। নিরীহ নবীপ্রেমিক মানুষগুলোকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেয়া হলো। এ ঘটনায় রাহুল দেব রায়ের মাধ্যমে নূপুর শর্মা বাংলাদেশে জিতে গেল।
এ ঘটনার রেশ শেষ না হতেই গত ১৫ জুলাই নড়াইল জেলার দীঘলিয়াতে ঘটে গেল আরেক ঘটনা। কলেজ ছাত্র আকাশ সাহা মহানবী (সা.)কে নিয়ে আপত্তিকর এক পোস্ট দিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উত্তেজিত জনতা আকাশ সাহার বাড়ি ঘেরাও করলো। তাকে না পেয়ে স্থানীয় মুসলিমরা হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দিরে হামলা চালালো। এ ঘটনায় আকাশ সাহা গ্রেপ্তার হলেও ১৭ জুলাই লোহাগড়া থানায় হামলাকারীদের নামে পুলিশবাদী মামলা দাখিল হলো। এতে অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হলো। এ মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলো। এখানেও ঘটনার নেপথ্যের নায়ক আকাশ সাহার অপরাধ আড়াল হয়ে গেল। হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে হিন্দু, বৌধ্য, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ প্রতিবাদ কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি অসম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসীরাও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করে চলেছে। মামলার ভয়ে ৯০ ভাগ মুসলিমের দেশে কোনো মুসলিম রাহুল দেব রায় আর আকাশ সাহার শাস্তির বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করতে পারছে না। তার মানে এখানেও নূপুর শর্মা জিতে গেলো। নূপুর শর্মা ভারতে হেরে গেলেও হারেনি বাংলাদেশে। বাংলাদেশের প্রগতিবাদী অসাম্প্রদায়িক জোট এখানে তাকে হারতে দেয়নি।
দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে একের পর এক ফেসবুকে পোস্ট দেয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ পোস্টদাতারা জানেন, এটা করলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দেখা দেবে। তারা এটাও জানেন যে, এসব পোস্টের মাধ্যমে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হবে। তারপরেও তারা অব্যাহতভাবে এ কাজটি ধৃষ্টতার সাথে করে যাচ্ছেন! বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি কুচক্রিমহল দেশকে অস্থিতিশীল করতে এ জাতীয় ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। এ মহলটি ধর্মহীন ভয়ঙ্কর স্বার্থান্বেষী একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি। এরা দেশ, জাতি ও ধর্মের শত্রু। সরকারের ইনটেলিজেন্স ফোর্সের উচিত এদরেকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা। প্রকৃত সাম্প্রদায়িক ও চিিহ্নত দুষ্কৃতকারীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা সময়ের অনিবার্য দাবি। পাশাপাশি যে কোনো ধর্ম অবমাননার ব্যাপারে নির্দিষ্ট শাস্তি ও তা যথাযথ প্রয়োগের ব্যবস্থা থাকা জরুরি। রাহুল দেবের উপযুক্ত শাস্তি হলে আকাশ সাহা একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটাতো না। আইন ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে কেউই কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার সাহস পেতো না। ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও নষ্ট হতো না। পরিশেষে বলতে চাই, প্রকৃত ধার্মিক কখনও অন্য ধর্মের লোককে ক্ষতি করতে পারে না; অন্য কোনো ধর্মকে কটাক্ষও করতে পারে না। প্রত্যেকেই তার নিজ ধর্মের বিধান মেনে চললে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হতো না। দুঃখের বিষয় হলো, আমরা অধিকাংশই ধার্মিক সাজতে শিখেছি, কিন্তু ধার্মিক হতে শিখিনি। ধর্মকে আমরা পালন করতে শিখিনি কিন্তু ব্যবহার করতে শিখেছি। অধিকাংশই আমরা ধর্মের বিধান মতে চলি না বরং ধর্মকে আমরা চালাই। অর্থাৎ ধর্মকে সুবিধামত ব্যবহার করি। এসব স্বার্থপরতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাহলেই সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে।
লেখক: কলামিস্ট ও অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।