Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মাগুরায় নারী এডিসির আত্মহত্যা

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দেহরক্ষী কনস্টেবলের লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরা থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

মাগুরায় শ্রীপুর উপজেলায় খুলনার কর্মরত মেট্রোপলিটনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) খন্দকার লাবণী গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত ও তার সাবেক দেহরক্ষী কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের মাথায় গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মাগুরাসহ সারাদেশে নানামুখী আলোচনা চলছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা বেশি। কারণ আত্মহত্যাকারী পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান এর আগে খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এডিসি খন্দকার লাবণীর দেহরক্ষী ছিলেন। মাত্র দেড় মাস আগে মাহমুদুল মাগুরায় বদলি হয়ে আসেন। জানা যায়, ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে গত বুধবার রাতে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন এডিসি খন্দকার লাবণী। তিনি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৬ নম্বর কাদিরপাড়া ইউনিয়নের বরালিদহ গ্রামের খন্দকার শফিকুল আজমের মেয়ে। তার স্বামী তারেক আবদুল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

লাবণীর বাবা খন্দকার শফিকুল আজম জানান, গত ১৭ জুলাই এক সপ্তাহের ছুটিতে লাবণী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। গত বুধবার লাবণী শ্রীপুর ইউনিয়নের সারঙ্গ দিয়া গ্রামে নানার বাড়িতে অবস্থান করছিল। গভীর রাতে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে লাবণীর সঙ্গে তার স্বামীর কলহ চলে আসছিল। সংসারে আমার মেয়ে সুখী ছিল না। মূলত সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে লাবণীর বনিবনা হচ্ছিল না। এ কারণেই আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।

এদিকে পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবণীর আত্মহত্যার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাগুরা পুলিশ লাইন্সের পুলিশ ব্যারাকের চার তলা ভবনের ছাদে আত্মহত্যা করেন কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান। ধারণা করা হচ্ছে তিনি নিজের কাছে থাকা শর্টগানের গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন। মাহমুদুল হাসান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা সদরের এজাজুল হকের ছেলে। আত্মহত্যাকারী পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে লাবণীর অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল কি না জানতে চাইলে খন্দকার শফিকুল আজম জানান, এ রকম কোনো বিষয় শুনিনি।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) কামরুল হাসান ইনকিলাবকে জানান, দুটি আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না সে বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। প্রাথমিকভাবে ঘটনা দুটি ভিন্ন ভিন্ন বলেই মনে হচ্ছে। খন্দকার লাবণী ৩০তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান আগে তার দেহরক্ষী ছিলেন।

এদিকে মাহমুদুল হাসানের দুলাভাই মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, মাহমুদুল মাঝে মাঝে বলত খুলনায় তার চাকরি করতে ভালো লাগছে না। তার অন্যত্র বদলি হওয়া প্রয়োজন। সে কারণেই মাহমুদুল বদলি হয়ে মাস দেড়েক আগে মাগুরায় আসে। পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবণীর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল কি না সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার জানান, পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবণীর আত্মহত্যার বিষয়ে এখনো কোনো পরিষ্কার কারণ আমরা জানতে পারিনি। ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ