বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাদকসেবীদের যোগসাজশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ স্থানীয় একজন কৃষককে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলায় হয়রানি হওয়ার বিষয় অভিযোগ দায়ের ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক গৃহিণী।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ছোট লবণ গোলাম গ্রামের মোঃ ইসমাইল মৃধার পুত্র মোঃ সগির হোসেন একজন কৃষক। তার খামারে ৩০০টি পাতিহাঁস, আটটি দেশীয় গরু ছাড়াও মুরগির খামার রয়েছে। কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। স্থানীয়ভাবে তিনি অত্যন্ত সহজ-সরল, সজ্জন ও নিরীহ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একই গ্রামের মোঃ শফিজ উদ্দিনের পুত্র মোঃ জাহাঙ্গীরের সাথে নির্বাচনী বিরোধ সৃষ্টি হয়। জাহাঙ্গীর বরগুনা শহরের একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার নামে বরগুনা থানা সহ বিভিন্ন স্থান একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। সে সগীর হোসেনকে বিভিন্নভাবে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বরগুনা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক মোঃ জাকির হোসেন, হিসাব রক্ষক মোঃ রিয়াজ মাহমুদ, সহকারি প্রসিকিউটর মোঃ মাসুম আলম, সরকারি উপপরিদর্শক মোঃ মামুনুল ইসলাম শিকদার, সিপাহী মোঃ মোবারক ও সুজন হাওলাদারকে নিয়ে জাহাঙ্গীর ১ জুলাই কৃষক সগীর হোসেনের বাসায় অভিযান চালায়। বাসায় অভিযান চলাকালে ওই বসতঘরে উপস্থিত সকলকে বাসা থেকে বের করে দিয়ে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের ওই লোকজনই তল্লাশি চালায়। সগীর হোসেনের শয়ন কক্ষের মধ্য হতে ৩০০ পিস অবৈধ মাদক ইয়াবা এবং ২ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) নামক মাদকদ্রব্য উদ্ধার দেখিয়ে বরগুনা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। যার নং জিআর ২২৬/২০২২ (বর), ধারা: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) সারণী ১০(ক)।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগপত্রে সগীর হোসেনের স্ত্রী ইমরানী ওরফে ইমরানা আরো উল্লেখ করেন, আমার স্বামী মাদকদ্রব্য কি জিনিস আদৌ চিনেন না। মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ জাকির হোসেন আমাদের ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে পরিবারের সকল লোকজনদের ঘরে বাহির করিয়া বসতঘরের ভিতরে প্রবেশ করে পরে ঘরের ভিতর আলামত পাওয়ার কথা বলে উপ-পরিদর্শক জাকির হোসেন ও মাদকসম্রাট জাহাঙ্গীর সঙ্গীয় অন্যান্যদের এক লক্ষ টাকা উৎকোচ হিসেবে দেয়ার জন্য বলে। উৎকোচ না দিলে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ফাঁসানো হবে বলে হুমকি দেয়। স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য অভিযানকারীদের কাছে কথিত উদ্ধারকৃত আলামত দেখতে চাইলে তারা না দেখিয়ে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে।
সগীর হোসেনের স্ত্রী ইমরানী ওরফে ইমরানা আরো বলেন, তল্লাশি চলাকালীন সময় আমার স্বামীর শয়ন কক্ষে আর কেউই উপস্থিত ছিল না। আমার স্বামী সগীর হোসেন কোন মাদক সেবী নয়। সে কোন মাদকের ব্যবসা করে না। অভিযানকারীরা ষড়যন্ত্র করে আমার স্বামীকে মিথ্যা মামলা জড়িত করার কারণে এলাকাবাসী এই মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অভিযানের পরের দিন ২ জুলাই স্থানীয়ভাবে মানববন্ধন করেন। মা স্থানীয় পত্রপত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরগুনা জেলা কার্যালয়ের অসাধু কর্মচারীদের কারণে আরো মিথ্যা মামলা হয়েছে এই মর্মে অসংখ্য ভুক্তভোগী রয়েছে। আমার স্বামী মোঃ সগীর হোসেন কোন অপরাধ না করার পরেও তাকে মাদকসেবীদের যোগসাজে এই মিথ্যা মামলা জড়িত করিয়েছে।
সগীর হোসেনের স্ত্রী ইমরানী ওরফে ইমরানা তার স্বামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে বরগুনা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ এনায়েত হোসেন বলেন, আমরা সাধারণত সোর্সের তথ্যের উপর ভিত্তি করেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাই। তথ্যদাতা যদি এখানে আমাদের মিসগাইড করে বা নিরীহ সাধারণ মানুষেরকে তার স্বার্থসিদ্ধির জন্য হয়রানি করে সেখানে আমাদের কিছুই করণীয় নেই। যেহেতু উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নিশ্চয়ই এটার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।