নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্রিকেট যে মহান অনিশ্চয়তার খেলা তা গল টেস্টে আবারও প্রমাণ করল পাকিস্তান। গতকাল পঞ্চম দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের জন্য ১২০ প্রয়োজন ছিল সফরকারীদের। হাতে ছিল ৭ উইকেট। তা স্বত্তেও সংশয় ছিল। এর আগের দিন একদম শেষ মুহ‚র্তে পাক অধিনায়ক বাবর আজম আউট হয়ে যাওয়ায়, শেষদিন দু’দলের সামনেই জেতার সুযোগ ছিল। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ম্যাচ ড্র হওয়া অকল্পনীয় হলেও ভারী বৃষ্টির আগমনে সেই সম্ভাবনাও উঁকি দিয়ে গিয়েছিল একবার। তবে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান করে, গলের চতুর্থ ইনিংসে রেকর্ড রান তাড়া করে এক ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে আনল পাকিস্তান। আর সেই রূপকথার নায়ক ৫২৪ মিনিট ব্যাটিং করে ৪০৮ বলে ১৬০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলা আব্দুল্লাহ শফিক। ২২ বছর বয়সী এই ওপেনারে দৃঢ়তাতেই ২ ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের ৪ উইকেটে হারিয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।
এই মাঠে সফরকারী দল হিসেবে সর্বোচ্চ ১৬৪ রান সফলভাবে অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছিল। গতবছর ইংল্যান্ড এই কীর্তি করে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ৩৪২ রানের লক্ষ্য পাহাড়-সম ছিল পাকিস্তানের জন্য। সেই রান তাড়া করতে নেমে সফরকারীরা চতুর্থ দিন শেষ করে ৩ উইকেটের বিনিময়ে ২২২ রান করে। নিঃসন্দেহে দারুণ কক্ষপথে থেকেই শেষ দিনের খেলায় নামার কথা ছিল তাদের। তবে শংকাও ছিল। কারণ অপারাজিত দুই ব্যাটসম্যান শফিক ও রিজওয়ান ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যাটার ছিলনা পাক লাইন-আপে। আগা সালমান ও মোহাম্মদ নাওয়াজের সাদা পোষাকে সম্মিলিত অভিজ্ঞতা মাত্র ৪ ম্যাচের। তাছাড়া টেস্টের পঞ্চম দিনে পিচের চরিত্র বুঝা যে, ষোড়শীর মনের অবস্থা পড়ার ন্যায় কঠিন। আর গলের পিচতো এমনিতেই এক ধাঁধা। জয়ের বন্দরে পৌঁছতে তাই শফিক আর রিজওয়ানই ছিল সফরকারীদের ভরসা। প্রথম কয়েক ওভার বাদে পঞ্চম দিনে বেশ সাবলীল ব্যাটিং করেছেন এই দুইজন। শীলঙ্কান স্পিনাররা বহু চেষ্টা করেও পরাস্ত করতে পারছিল না।
লঙ্কানদের হয়ে আগের ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া এবং সর্বশেষ সিরিজের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১২ উইকেট নেওয়া প্রবাত জয়সুরিয়া প্ঞ্চম দিনের প্রথম বলেই উইকেট পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিলেন। অল্পের জন্য সেই বল রিজওয়ানের স্টাম্প মিস করে। তবে ৪০ রান করে এই প্রবাতের বলেই সাজঘরে ফিরতে হয় সফরকারী উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানকে। জয়ের জন্য তখনো পাকিস্তান ৬৬ রান দ‚রে থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোন অঘটন ঘটেনি। আগা সালমান ও হাসান আলী দ্রæত কাটা পড়ায় ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা জাগে স্বাগতিকদের। কিন্তু আরেক প্রান্তে অবিচল থাকা শফিক তা হতে দেননি। ৬ষ্ঠ উইকেটে নাওয়াজের সাথে ৪১ রানের জুটি গড়ে ঐতিহাসিক জয় এনে দেন পাকিস্তানকে। তবে ৫ম দিনের খেলায় একদমই রোমাঞ্চ থাকবে না তা কি হয়? পাকিস্থানের রান যখন ৩২৪ তখন ধনাঞ্জয়ার বলে সøগ সুইপ নিতে গিয়ে বল হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন শফিক। তবে কাসুন রাজিতা সেই ক্যাচ ফেলে দেন, একই সাথে শেষ করে দেন লঙ্কানদের শেষ আশাটুকুও। তবে মাত্র ৬ টেস্ট খেলা শফিক এই ইনিংসটি খেলেছেন প্রতিটি বলের মেধা ও গুণ যাচাই করে। ছিলেন সদা ধীরস্থির, আস্থার প্রতীক। অধিনায়ক বাবর এই ম্যাচসেরা ব্যাটারের প্রশংসায় ভাসিয়ে বলেন, ‘উঠতি তারকা হিসেবে সে তার যোগ্যতা ও মানসিকতার প্রমাণ দিল’।
পাকিস্তান যখন জয় থেকে মাত্র ১১ রান দ‚রে তখন শুরু হয় ধুম বৃষ্টি। তা সময় মত না থামলে ধ‚লিসাৎ হয়ে যেত শফিক-বাবরদের এই বীরচিত ইনিংসগুলো। ৩০ মিনিট পর খেলা শুরু হলে সফরকারীরা সহজেই পৌঁছে যায় জয়ের ঠিকানায়। যা তাদের নিজেদেরই ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। প্রথমটিতে ৩৭৭ রান তাড়া করে একই প্রতিপক্ষের সাথে ২০১৫ সালে জিতে তারা। আগামী রোববার একই ভেনুতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।