Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তাপদাহে পুড়ছে ইউরোপ, ব্রিটেনে জারি জরুরি অবস্থা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০২২, ১২:৪৫ পিএম

রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যেই ব্রিটেনে চড়ছে তাপমাত্রার পারদও। নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের পালা চলছে। তার মাঝেই এবার ব্রিটেনে জারি হল জরুরি অবস্থা। শুক্রবার ইংল্যান্ডে ন্যাশনাল ইমারজেন্সি ঘোষণা করল দেশের আবহাওয়া দফতর।

চলতি সপ্তাহেই দেশটির তাপমাত্রা পৌঁছে যেতে পারে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বইতে পারে লু হাওয়া। তাপমাত্রার এই হেরফের নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে ইংল্যান্ডবাসীকে। ব্রিটেন মেট ডিপার্টমেন্টের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে সে দেশে অত্যধিক তাপপ্রবাহ চলছে। ইংল্যান্ডের একাংশ জুড়ে জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট। আগামী সপ্তাহে মঙ্গলবার পর্যন্ত এই সতর্কতা জারি থাকবে বলে খবর। আবহাওয়া দফতরের ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়েছে, আগামী সোমবার এবং মঙ্গলবার তাপমাত্রা রেকর্ড হারে বাড়বে।

কেবলমাত্র দিনের তাপমাত্রাই নয়, রাতেও অত্যধিক পরিমাণে গরম অনুভূত হবে ব্রিটেনে। বিশেষত শহরাঞ্চলে তাপমাত্রা অনেকটাই বাড়বে। ফলে গলদঘর্ম অবস্থা হবে ব্রিটেনবাসীর। এমনটাই জানিয়েছে ইংল্যান্ডের মেট অফিস। ব্রিটেনে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক গার্ডেনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই দিনটিই সাম্প্রতিক অতীতের উষ্ণতম হিসেবে ধার্য হয়। যদিও এবার সেই তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের।

ব্রিটেনের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি জানিয়েছে, মূলত তাপপ্রবাহ সামাজিক জীবনযাত্রায় ভয়াবহ প্রভাব ফেললে তখনই রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। আর বর্তমানে তাপপ্রবাহের মাত্রা চতুর্থ লেভেলে পৌঁছে গিয়েছে। ফলে আবহাওয়া দফতর রেড অ্যালার্ট জারি করতে বাধ্য হয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের হাজার হাজার বাসিন্দাকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। আগামী কয়েক দিন তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আর এ কারণে ইউরোপের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছেন। দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের দাবানল নিয়ন্ত্রণে গত মঙ্গলবার থেকে এক হাজারের বেশি অগ্নিনির্বাপন কর্মী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এয়ারক্রাফট থেকে পানি ফেলা হচ্ছে। তবে তীব্র তাপ, গুমোট পরিবেশ এবং শক্তিশালী বায়ুর কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা মুশকিল হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার পর্তুগালের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও এখনও দেশটির কিছু স্থানে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। পাঁচটি জেলায় লাল সতর্কর্তা জারি করা হয়েছে। ১৭টি এলাকায় দাবাদল নিয়ন্ত্রণে এক হাজারেরও বেশি অগ্নিনির্বাপণ কর্মী কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। পর্তুগালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ৭ জুলাই থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩৮ জনের বেশি মৃত্যু রেকর্ড করেছেন। এসব মৃত্যুর জন্য তারা প্রচণ্ড গরম এবং অত্যন্ত শুষ্ক আবহাওয়াকে দায়ী করেছেন।

স্পেনের পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা দেশজুড়ে ১৭টি এলাকায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। কার্লোস তৃতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, রোববার ও সোমবার তাপপ্রবাহের প্রথম দুদিনে কমপক্ষে ৪৩ জন মারা গেছে। এদিকে, ৭০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার কারণে ইতালির দীর্ঘতম নদী পো এর কিছু অঞ্চল শুকিয়ে গেছে। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পো নদীর তীরবর্তী অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউরোপ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ