Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কয়রায় গৃহবধূকে গাছে বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২২, ৫:৪৪ পিএম

খুলনার কয়রায় শামীমা নাসরিন (৩০) নামে এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। তার পুরো শরীরে লাঠির আঘাতের চিহ্ন ও দুর্বৃত্তদের কামড়ের দাগ। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশিরা তাকে ঈদের পরদিন সকালে প্রকাশ্যে এমনভাবে অমানবিক নির্যাতন চালায় বলে জানা গেছে।
শামীমা নাসরিন জানান, তিনি কয়রা উপজেলার গিলাবাড়ি কুপির মোড়ের গফ্ফার গাজীর মেয়ে। বাবার বাড়ির পাশে জায়গা কিনে সেখানে বসবাস করছেন। বাবার ২ বিঘা জমির উপর স্থানীয় লিয়াকত গাজী, সাখাওয়াত গাজী, নুর আলম গাজীসহ ওই পরিবারের অনেকের চোখ পড়ে। বাবা একা হওয়ায় প্রায়ই এ দলটি তার উপর অত্যাচার করে। এক বছর আগে একই রকম হামলার ঘটনা ঘটে। তখন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু জরিমানার টাকা তারা পরিশোধ করেনি।
ঈদের পরের দিন সোমবার সকালে লিয়াকত ও তার সহযোগিরা তার বাবার বাড়িতে উপস্থিত হয়। এসময় তারা ঘরের একটি চাল তৈরি করে নিয়ে আসে। বাবার বসত বাড়িতে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করতে চায়। বাধা দেয় শামীমা সুলতানা ও তার ভাবী সালমা খাতুন। এসময় লিয়াকত এর সাথে থাকা খালেক ও আসফার গাজী শামীমাকে ঘর হতে টেনে বের করে নিয়ে আসে। এরপর রফিকুল, সালাউদ্দিন, সাইফুল, সোয়েব দড়ি দিয়ে গাছের সাথে তাকে বেঁধে ফেলে। শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। লাঠি দিয়ে পেটানোর পর তারা সারা শরীরে কামড়ে ক্ষত বিক্ষত করে। জ্ঞান হারালে শামীমা নাসরিনের এক দুলাইভাই ৯৯৯ এ ফোন দেয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। কয়রা থানার এসআই মাসুদ দড়ি খুলে তাকে উদ্ধার করে কয়রা উপজেলার জায়গীর মহল হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিকেলে তার অবস্থা অবনতির হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে।
স্বামী আবুল কালাম সানা বলেন, ঘটনার সময়ে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। মোবাইলে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্ত্রীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহায়তা নেন। তিনি বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এর আগে একই ঘটনার জন্য সালিশ করেছেন। কিন্তু তারপরে তারা আবারও আক্রমণ করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, জমিজমা নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংষর্ষ হয়েছে। ঘটনার সময় আমি এলাকার বাইরে থাকায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।
মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। বেশ কয়েকবার সালিশ করা হলেও সমাধান না হওয়ায় এখন আর কেউ বিচার করতে যায় না। ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। সংবাদ পেয়ে আমি পুলিশকে অবহিত করেছিলাম। পুলিশ ভালো বলতে পারবে।
কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ এ.বি.এম.এস দোহা বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ