Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে এবার রেকর্ড পরিমাণ চামড়া পেয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

চট্টগ্রামে এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার দাম পাওয়া যায়নি। পানির দরে বিক্রি হয়েছে গরীবের হক কোরবানির পশুর চামড়া। দাম নেই, তাই মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের তৎপরতা ছিল কম। তবে কোরবানি দাতাদের বেশিরভাগই পশুর চামড়া বিক্রির জন্য অপেক্ষা না করে মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা ও হেফজখানায় দান করে দিয়েছেন। এতে এবার এসব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রেকর্ড পরিমাণ চামড়া পেয়েছে। আনজুমান ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় গাউছিয়া কমিটির কর্মীরা নগরীতে ব্যাপকহারে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছেন। গাউছিয়া কমিটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং আড়তদারের এবার প্রায় সাড়ে ছয় লাখ চামড়া সংগ্রহ করেছে। সংগৃহিত চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখন এসব চামড়ার দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এবার গরুর চামড়ার দাম কিছুটা পাওয়া গেলেও ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়নি। কোরবানির বর্জ্যরে সাথে এসব চামড়া সিটি কর্পোরেশনের আবর্জনার ভাগাড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। নগরীর কোরবানির চামড়া কেনাবেচার চিরচেনা দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। অলিগলির মুখে কিংবা সড়কে কাঁচা চামড়া নিয়ে তরুণ-যুবকদের এবার তেমন দেখা মেলেনি। নগরীর যেসব স্পটে বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা কোরবানির চামড়া এনে জমা করা হত, সেখানেও চামড়া দেখা গেছে অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক কম। চামড়া কেনাবেচার পরিস্থিতি অনেকটাই সুশৃঙ্খল ছিল।

গাউছিয়া কমিটিমর স্বেচ্ছাসেবক কয়েক হাজার মাদরাসার ছাত্র এবার ট্রাক নিয়ে নগরীর বিভিন্ন অলিগলি এমনকি ঘরে ঘরে গিয়ে কোরবানির কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছেন। কোরবানি দাতাদের অধিকাংশই বিনামূল্যে চামড়া দিয়েছেন তাদের। জানা গেছে, কোরবানির কাঁচা চামড়ার বাজার প্রতিবছর ‘চার হাত চক্রে’ নিয়ন্ত্রণ হতো। কোরবানি দাতাদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করতেন এলাকার উঠতি তরুণ-যুবকেরা, যাদের মৌসুমি সংগ্রহকারী বা মৌসুমি ব্যবসায়ী বলা হয়। তাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনে নিতেন বড়-মাঝারি মানের ব্যবসায়ীরা, যারা শুধু কোরবানির সময়ই চামড়া কিনতে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন এবং সেই চামড়া বিক্রি করেন আড়তদারের কাছে। সেই ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া বিক্রি করতেন আড়তদারের প্রতিনিধির কাছে। প্রতিনিধির কাছ থেকে চামড়া যেত আড়তদারের ডিপোতে। তবে চামড়ার দাম পড়ে যাওয়ায় এ চক্র ভেঙ্গে যায়। বিশেষ করে বিগত ২০২০ সাল ও গত বছর চামড়ার দাম না পেয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়া হয় হাজার হাজার চামড়া। পরে এসব চামড়া সিটি কর্পোরেশনের ময়লা ভাগাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এতে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবার তার মাঠে নামেননি। তবে সাধারণ মানুষও চামড়া ফেলে না দিয়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান করে দিয়েছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় চট্টগ্রামে এবার মোট আট লাখ ২১ হাজার পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। এর মধ্যে গরু পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৩, মহিষ ৬৬ হাজার ২৩৭, ছাগল ও ভেড়া এক লাখ ৮৯ হাজার ৬২ এবং অন্যান্য ৯৯টি পশু। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন এবার মহানগরী ও জেলা মিলিয়ে আট লাখের বেশি পশু কোরবানি হয়েছে। অন্য বছরের চেয়ে কোরবানি এবার অনেক বেশি হয়েছে। গত বছর সাত লাখ ৪২ হাজার ৪৫৫টি পশু কোরবানি হয়েছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ