২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল, ছোটছোট সবুজ রঙের স্বচ্ছ ক্যাপসুল যা সব ফার্মেসিতে পাওয়া যায়। আর চুল বা ত্বকের কোন সমস্যা দেখা দিলেই যেগুলো আমাদের অনেকেই ডাক্তারের সাথে কোন কথা না বলে নিজে নিজেই খেতে পছন্দ করেন! এটা মনে করার উপায় নেই যে সকাল বিকাল ভিটামিন ই খেলেই দুই তিনদিনে মসৃণ উজ্জ্বল ত্বক আর মাথা ভর্তি চুল হয়ে যাবে আপনার! প্রকৃত অর্থে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ার অভ্যাস খুব অল্প সময়ে প্রেশারের জটিলতা, অতিরিক্ত ওজন, হরমোনাল সমস্যাসহ আরও অনেক জটিল সমস্যা তৈরি করে। তাই মনে করবেন না এখন চুল পড়ার সমস্যায় ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেয়ে ডাক্তারের অনেকগুলো খরচ বাঁচিয়ে ফেললেন। বরং এ বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আপনি কীভাবে এই অতি সহজলভ্য ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাহায্যে পেতে পারেন সুন্দর সুস্থ ত্বক, চুল, নখ ইত্যাদি। সাধারনত সবুজ ক্যাপসুলগুলো হয় নরমাল পাওয়ারের আর হাই পাওয়ারের গুলো কমলা হয়। সচরাচর কমলাটার দরকার হয় না।
কীভাবে ব্যবহার করবেন ভিটামিন ই?
সাধারণত ক্যাপসুল ফুটো করে ফেললে যে তেলটা পাওয়া যায় সেটা ব্যবহার করতে পারেন। যেহেতু একটা ক্যাপসুল ফুটো করলে প্রায় আধা চা চামচ তেল পাওয়া যায় আর ভিটামিন ই তেল খুবই ভারী হয় সুতরাং আপনারা একটা ক্যাপসুলের তেল দিয়ে নিজের ত্বকের ধরন বুঝে যেখানে যতটুকু লাগে ব্যবহার করবেন। কিন্তু ড্রাই, আর নরমাল স্কিনের কিন্তু পোয়া বার! আপনাদের জন্য এই ভারী ভিটামিন ই তেল কম খরচেই আপনার ত্বকের উপকার দেবে।
১। ভিটামিন ই স্কিন বা ত্বকের ক্রিম ঃ
আপনার ত্বক ড্রাই আর নরমাল তাহলে ভিটামিন ই তেল ত্বকে ফোঁটা ফোঁটা লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে বসিয়ে দিন। আর যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা একটু ভারী তেল লাগাবেন। এক ফোঁটা তেল প্রথমে দুই হাতে নিয়ে ঘষুন, এরপর হাত দুটো মুখে ৫ সেকেন্ড চেপে ধরুন। হয়ে গেল আপনার ভিটামিন ই ক্রিম লাগানো। এভাবে ভিটামিন ই ব্যবহার করলে আপনার আর অন্য কোন নাইট ক্রিম ব্যবহারের দরকার পড়বে না। এই পদ্ধতিতে সবচেয়ে বেশি উপকার বা কার্য়কর হয় একটু বয়স্ক ব্যক্তিদের। কারণ আপনাদের ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে ভিটামিন ই খুবই কাজে লাগে।
২। ভিটামিন ই হেয়ার ক্রিম ঃ চুল পড়ে যাওয়া বন্ধ করতে আর রিবনডেড বা কালারড চুলের যত্নে ভিটামিন ই খুবই ভালো। বেশি উপকার পেতে ২-৩ টি ক্যাপসুল ভেঙ্গে ভারী তেলটা একটা পাত্রে নিয়ে স্ক্যাল্প আর চুলে লাগিয়ে নিন। সারারাত রেখে পরদিন ধুয়ে ফেলুন। যদি আপনার মনে হয় এই ট্রিটমেন্টটা আপনার জন্য বেশি ভারী হয়ে যাচ্ছে, শ্যাম্পু করলে যাচ্ছে না তবে এক টেবিল চামচ নারকেল তেলের সাথে ১ টা ক্যাপসুল ভেঙ্গে ব্যবহার করুন। খুব সহজে শ্যাম্পু করতে পারবেন।
৩। ভিটামিন ই নাইট ক্রিম : আপনার পছন্দের নাইট ক্রিম বা হালকা বেবি ক্রিম নিন। এবার এই কৌটায় ১-২ টি ক্যাপসুলের তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এই ক্রিম রেগুলার ব্যবহারে আপনি এক্সট্রা ভিটামিন ইর গুণটা পাবেন। একই ভাবে আপনার প্রিয় বডি লোশনেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
৪। কনুই আর হাঁটুর জেদি কালো দাগ দূর করতে : দীর্ঘদিনের পুরনো স্কিন ড্যামেজের দাগ দূর করতে ভিটামিন ইর কোন তুলনা নেই। আপনার কনুই আর হাঁটুতে যদি এমন দাগ থাকে তবে রেগুলার ১ টা ক্যাপসুলের তেল নিয়ে বা মুখে ব্যবহার করার পর অতিরিক্ত যে তেলটুকু বাকি থাকে তা কনুই আর হাঁটুতে লাগান। ২-৩ সপ্তাহের ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পাবেন!
৫। মসৃণ, গোলাপি ঠোঁট পেতে : মুখে, হাতে পায়ে লাগিয়ে যেটুকু তেল থাকবে সেই তেলের ফোঁটাটা ঠোঁটে ভালো ভাবে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। কালো, ফাটা ঠোঁটের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। আপনার পছন্দের লিপবাম বা ভ্যাসিলিনের সাথে ক্যাপসুল ভেঙ্গে মিশিয়ে সেটাও রেগুলার ব্যবহার করতে পারেন।
৬। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে: অনেকেই আছেন যারা চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে খাটি বাদাম তেল ব্যবহার করেন। তার সাথে যদি ভিটামিন ই তেল মিশিয়ে নেন তবে খুবই কম সময়ে ভালো ফল পাবেন।
৭। অনেক পুরনো কাটা দাগ অথবা ব্রনের দাগ দূর করতে: আপনার ত্বকে যদি অনেক পুরনো কাটা দাগ, ব্রনের দাগ বা পক্সের দাগ থাকে তবে রেগুলার সেই দাগে এক দুই ফোঁটা করে ভিটামিন ই তেল লাগিয়ে রাখুন। ধীরে ধীরে একটু হলেও দাগটা হালকা হবে। এধরনের দাগ হালকা করতে ভিটামিন ই তেল খুবই কার্যকরী।
এগুলো স্কিন আর হেয়ার কেয়ারে ভিটামিন ই ব্যবহারের কিছু ফুলপ্রুফ ওয়ে। এতে করে কিছু না বুঝে শুনে ক্যাপসুল না খেয়ে ভিটামিন ইর উপকার আপনি পাবেন। আর যদি খেতেই চান তবে ক্যাপসুল না খেয়ে ভালো সুষম খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন ই শরীরে দেয়ার চেষ্টা করুণ। শাক সবজি, বাদাম, ডিম ইত্যাদি বেশি করে খান। ত্বক আর চুল তো ভালো থাকবেই আর কোন এক্সট্রা ঝুঁকিও নিতে হবে না। পরিশেষে একটা কথা মনে রাখা দরকার ভিটামিন ব্যবহরের পূর্বে বিষেজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরী।
ডাঃ জেসমিন আক্তার লীনা
সহকারি অধ্যাপক,
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
অরোরা স্কিন এন্ড এয়েসথেটিকস
পান্থপথ, ঢাকা
০১৭২০১২১৯৮২
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।